ডেস্ক নিউজ: যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ লন্ডনের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
'সিম্পটম স্টাডি' নামে একটি অ্যাপের মাধ্যমে ৪ হাজার মানুষের ওপর গবেষণা চালিয়েছে কিংস কলেজ লন্ডন। অ্যাপে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর শারীরিক অবস্থার তথ্য দেন আক্রান্তরা।
গবেষণায় ৭০ বছরের বেশি বয়সীদের ২২ শতাংশ ৪ সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। আর ১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের ১০ শতাংশ মানুষ তার আগেই করোনামুক্ত হন। ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মাঝে দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার সম্ভাবনা আট গুণ বেশি।
কোভিডের কারণে দীর্ঘমেয়াসী অসুস্থতাকে গবেষকরা নাম দিয়েছেন 'লং কোভিড'। ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের 'লং কোভিডের' ঝুকি ওই বয়সী পুরুষদের দ্বিগুণ। সূত্র: ডিবিসি নিউজ
এদিকে যেকোনো বয়সী আক্রান্ত মানুষের মধ্যে শিশুদের মৃত্যুঝুঁকি কম। বেশির ভাগ মানুষের মধ্য করোনাভাইরাসের মৃদু সংক্রমণের হার দেখা যাচ্ছে। তবে গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রে ভাইরাসটির প্রকৃতি একদম স্পষ্ট। চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রের বড় আকারের একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ৪৪ হাজার লোকের ওপর গবেষণা জরিপে দেখা গেছে, ২ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। ১ দশমিক ৭ শতাংশ নারী মারা গেছে। সবচেয়ে কম শূন্য দশমিক ২ শতাংশ শিশু এবং কিশোর-কিশোরী মারা গেছে। আর সবচেয়ে বেশি মারা গেছে বয়স্ক ব্যক্তিরা। ৮০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মৃত্যুর হার ১৫ শতাংশের বেশি।
নারী ও শিশুদের কম ঝুঁকির বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদনে প্রাপ্ত পর্যবেক্ষণকে দুভাবে দেখা হয়েছে। হয় তারা সংক্রমণের প্রথম স্থান থেকেই কম আক্রান্ত হয়েছে অথবা তাদের দেহ এই ভাইরাসের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সক্ষম হয়েছে।
এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের শিক্ষক ড. ভারত পানখানিয়া বলেছেন, যখন নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে, তখন স্বাভাবিকভাবে সবাই আক্রান্ত হয়, এটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এর কারণ হচ্ছে যেহেতু কেউ এর আগে ভাইরাসটির সম্মুখীন হয়নি, তাই এর বিরুদ্ধে কারও দেহে প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। যেকোনো প্রাদুর্ভাবের শুরুতে শিশুরা খুব কমই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।
কিংস কলেজ লন্ডনের শিক্ষক ড. নাথালি ম্যাকডেরমট বলেন, শিশুদের মধ্যে ব্যাপকভাবে তা দেখতে না পাওয়ার একটি কারণ হচ্ছে প্রাদুর্ভাবের শুরুতে তারা সুরক্ষিত থাকে, বাবা-মায়েরা শিশুদের অসুস্থ মানুষের কাছ থেকে দূরে রাখেন।
করোনাভাইরাসে নারী-পুরুষের মৃত্যুর হার কমবেশি নিয়ে সাধারণের মধ্যে বিস্ময় থাকলেও বিজ্ঞানীরা এতে অবাক নন। সাধারণ জ্বরে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাতেও একই অবস্থা দেখা যায় বলে মনে করেন তাঁরা। এর জবাবও রয়েছে। পুরুষের জীবনে ধূমপানের মতো কিছু বাজে অভ্যাস রয়েছে। যে কারণে স্বাভাবিকভাবে পুরুষের স্বাস্থ্য নারীর চেয়ে খারাপ থাকে।
এ ব্যাপারে ড. ম্যাকডেরমট বলেন, ‘ধূমপান আপনার ফুসফুসের বারোটা বাজায়, এ অবস্থা আপনাকে জয়ী বানাতে পারে না।’ সূত্র: প্রথম আলো, সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ