হ্যাপি আক্তার: [২] আরও একটি নতুন জাতের রঙিন আমের অনুমোদন দিলো জাতীয় বীজ বোর্ড। আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জে যোগ হলো আরেকটি নতুন জাত বারি-১৩। এই আম উদ্ভাবন গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন জেলার আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানী ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দিন।
[৩] চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের আম গবেষণা কেন্দ্র ১৫ বছর গবেষণায় বারি-১৩ জাতটি উদ্ভাবন করেছে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দুটি আমের সংকরায়ণে জাতটি উদ্ভাবন করেন গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডক্টর জমির উদ্দিন।
[৪] দীর্ঘ ১৫ বছর গবেষণার পর সাফল্যের মুখ দেখলো বারি-১৩ জাতের নতুন আম। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দিন এর উদ্ভাবক। আম্রপালি ও যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে সংগ্রহ করা রঙিন আম পালমারের সংকর জাত বারি-৩। আম্রপালিকে মা ও পালমারকে বাবা ধরে সঙ্করায়ণ করা হয়।
[৫] আম গবেষকদের দাবি, লম্বাটে ও মাঝারি আকৃতির এই আমটি উচ্চ ফলনশীল। গড় ওজন ২২০ গ্রাম। মিষ্টতা ২১% এবং খাওয়ার যোগ্য অংশ ৭৪.৬৭%। পাকা ফলের ত্বকের রং লাল বা মেরুন। শাঁস গাঢ় কমলা রংয়ের, রসালো এবং আশঁবিহীন। রোগ ও পোকামাকড়ের উপদ্রব তেমন নেই এবং এর সংরক্ষণকাল আটদিন।
[৬] চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দিন বলেন, যেহেতু এ বছর রিলিজ হয়েছে চারাটি আগামী বছর থেকে দিতে পারবো বলে আমরা আশা করি। অন্য আম থেকে এটা ব্যতিক্রম যে কারণে এটা হাইব্রিট এবং একমাত্র রঙিন হাইব্রিট আম বাংলাদেশে।
[৭] তিনি জানান, ২০০৫ সালে উদ্ভাবিত বারি আম-৩ ও যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে সংগৃহীত পালমারের (পালমার যুক্তরাষ্ট্রের একটি রঙিন আমের জাত) সংকরায়নে দীর্ঘ গবেষণার পর এই সাফল্য পেয়েছেন তারা। এখনও আমটির নামকরণ করা হয়নি।
[৮] তিনি আরও জানান,‘‘দেশীয় বাণিজ্যিক জাত গোপালভোগ, ক্ষিরসাপাত, ল্যাংড়া, ফজলি, আম্রপালি অত্যন্ত সুস্বাদু হলেও; এই জাতগুলো পোকামাকড়ের প্রতি সংবেদনশীল এবং রং বিহীন। ফলে বিদেশের বাজারে এগুলোর তেমন চাহিদা নেই। ‘দীর্ঘদিন ধরইে চাষিদের চাহিদা ছিলো বিদেশে রপ্তানিযোগ্য রঙিন আমের। দীর্ঘ গবেষণার পর আমরা সেই কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছাতে পেরেছি। পেরেছি চাষিদের চাহিদা পূরণ করতে।’’
[৯] চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হরিদাস চন্দ্র মোহন্ত বলেন, বারি আম-১৩ যেটি বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম হাইব্রিট। আগামী বছর ব্যাপকভাবে মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
[১০] চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, বাজারে আম থাকবে না সেই সময় যদি এটা বাজারজাত করতে পারি এবং কৃষক যদি বাজারজাত করতে পারে তাহলে কৃষক লাভবান হবে।
[১১] আম গবেষকরা আরও বলছেন, রঙিন এই জাত অবমুক্ত হলে, সুযোগ তৈরি হবে বিদেশে রপ্তানরিও। পাশাপাশি নাবী জাত হওয়ায়, এই আমের স্থানীয় বাজার মূল্য নিয়েও আশাবাদী আম গবেষকরা। পরিপক্ক সংগৃহিত আম সাধারণ তাপমাত্রায় ৮ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে বলেও জানান তারা। সূত্র: একুশে টিভি, চ্যানেল২৪, ঢাকা ট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :