শিরোনাম
◈ পিআর পদ্ধতি কী, কেন প্রয়োজন ও কোন দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে?" ◈ ইসরায়েলি হামলায় ৪৩৭ ফুটবলারসহ ৭৮৫ ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদের মৃত্যু ◈ পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলিদের সাথে তাদেরই সেনা জড়ালো সংঘর্ষে! (ভিডিও) ◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি

প্রকাশিত : ০৯ অক্টোবর, ২০২০, ০৬:৩৮ সকাল
আপডেট : ০৯ অক্টোবর, ২০২০, ০৬:৩৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিকল্প উৎস থেকে আমদানির পরও বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

ডেস্ক রিপোর্ট: ভারত রফতানি বন্ধ ঘোষণার পর বাংলাদেশে অস্থির হয়ে ওঠে পেঁয়াজের দাম। এরপর বিকল্প বিভিন্ন দেশ থেকে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরুর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরই মধ্যে এক হাজার টনেরও বেশি পেঁয়াজ দেশে পৌঁছেছে। তার পরও বাড়ছে মসলাপণ্যটির দাম। কয়েকদিন ধরে দেশের খুচরা ও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১৫-২০ টাকা।

গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র থেকে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭৬৭ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নেন ব্যবসায়ীরা। মোট ৩৬৬টি আবেদনের বিপরীতে এ পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। এরই মধ্যে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ৯০ টন পেঁয়াজ বন্দর থেকে খালাসের ছাড়পত্র পেয়েছে। সর্বশেষ ৬ অক্টোবর চীন থেকে আমদানি হওয়া ৮৪ টনের একটি চালান ছাড় হয়। অন্যদিকে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে গত দুই সপ্তাহে আমদানি হয়েছে ১২০ টন পেঁয়াজ, আমদানির অপেক্ষায় রয়েছে আরো। কিন্তু এসব আমদানি খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারছে না পেঁয়াজের পাইকারি ও খুচরা বাজারে।

দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিকল্প উৎস থেকে আমদানি শুরু হওয়ার পর টানা দুই সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের পাইকারি বাজার ৫৫-৬৫ টাকার মধ্যে ওঠানামা করলেও গত কয়েক দিনে ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে পণ্যটির দাম। প্রতিদিনই দাম বাড়তে থাকায় সর্বশেষ মঙ্গলবার পাইকারি পর্যায়ে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম ৮৫ টাকায় উঠে আসে। আর খুচরায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকায়।

জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মেসার্স বাঁচা মিয়া সওদাগরের স্বত্বাধিকারী ও হামিদ উল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পর বাজার অস্থির হয়। তবে কিছুদিন স্থিতিশীল থাকার পর সরবরাহ সংকটের কারণে এক সপ্তাহ ধরে বাজার কিছুটা বাড়তির দিকে। ভারতের বিকল্প কয়েকটি দেশ থেকে আমদানি হলেও এখনো বাজারে সেভাবে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়েনি। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নিশ্চিত করা না গেলে দাম বৃদ্ধি বা কমে যাওয়ার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের কিছুই করার থাকে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার খাতুনগঞ্জে পাবনা ও ফরিদপুর থেকে মোট পাঁচ ট্রাক পেঁয়াজ প্রবেশ করেছে। একই পরিমাণ প্রবেশ করেছে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ। ভারতীয় পেঁয়াজশূন্য পাইকারি বাজারে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে দেশীয় ও মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ, যার কেজিপ্রতি দাম ৮৫-৮৭ টাকা । যদিও এক সপ্তাহ আগে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৬০-৬৫ টাকা কেজিতে।

টেকনাফ স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের মধ্যে গত ১৯ সেপ্টেম্বর আমদানি হয়েছে ৩০ টন ২০০ কেজি, ২৬ সেপ্টেম্বর আমদানি হয়েছে ২৭ টন, ৩০ সেপ্টেম্বর আমদানি হয়েছে ৭ দশমিক ৫ টন এবং সর্বশেষ ৫ অক্টোবর আমদানি হয়েছে ৫৬ টন পেঁয়াজ। স্থলবন্দরে খালাসের অপেক্ষায় আরো কয়েকটি নৌযান।

টেকনাফ স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, দেশীয় সংকটের পর ব্যবসায়ীরা মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে ঝুঁকছেন। এখন পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে ১২০ টন পেঁয়াজ এসেছে। আরো পেঁয়াজ খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। জাতীয় পরিস্থিতির বিবেচনায় পেঁয়াজ আমদানি ও খালাসে টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে ভোগ্য পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৫ থেকে ২৮ লাখ টন। এ হিসাবে প্রতিদিন পেঁয়াজের চাহিদা সাত হাজার টনেরও বেশি। এর মধ্যে দেশে আগেই আমদানি হওয়া পেঁয়াজ এবং দেশে উৎপাদিত মজুদ পেঁয়াজ বাজারের সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় ভূমিকা রাখে। স্বাভাবিক সময়ে ভারত থেকে গড়ে ২০০ ট্রাক পেঁয়াজ প্রবেশ করত। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে তিন-চার হাজার টন পেঁয়াজের আমদানিনির্ভর চাহিদা ছিল। কিন্তু গত এক মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে (৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত) মোট আমদানি হয়েছে ১ হাজার ৯০ টন। অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে ১২০ টন। এ হিসাবে দেশের দৈনিক চাহিদার সঙ্গে ঘাটতি (দেশীয় মজুদবহির্ভূত) পেঁয়াজের পার্থক্য থাকায় হঠাৎ করেই দাম বাড়ছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

এদিকে দেশে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে বলে গত মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, দেশে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। আমদানীকৃত পেঁয়াজ পুরোপুরি বাজারে এলে দাম আরো কমে আসবে। এরই মধ্যে ক্রেতাদের সাশ্রয়ী মূল্যে পেঁয়াজ সরবরাহের উদ্দেশ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) দেশব্যাপী ট্রাক সেলের পাশাপাশি ই-কমার্সের মাধ্যমেও পেঁয়াজ বিক্রি করছে। এতে ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা পূরণে প্রতি কেজি ৩০ টাকা মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রির পরিধি আরো বাড়ানো হচ্ছে বলে জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।বণিক বার্তা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়