লিহান লিমা: [২] জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বিশেষ অধিবেশনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, ‘দেশকে কার্বন মুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ২০৩০সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনবে বেইজিং এবং ২০৬০ সাল নাগাদ শূন্য কার্বন নিঃসরণকারী দেশে পরিণত হবে।’
[৩]কিভাবে অতিরিক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কমিয়ে আনা হবে তার জন্য নতুন কৌশলগত পরিকল্পনাও নির্ধারণ করেছে বেইজিং। পূর্ব এশিয়ার গ্রিনপিসের ক্লাইমেট পলিসি অফিসার লি শু বলেছেন, ‘চীনা প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে স্পষ্ট, পরিবেশ রক্ষায় চীনের এই পদক্ষেপ বলিষ্ঠ ও পরিকল্পনা মাফিক।’ তবে বিশ্বের প্রায় ২৮ শতাংশ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী চীনের এই পরিকল্পনাকে উচ্চাভিলাষী ও বৃহত্তর হিসেবে দেখা হচ্ছে।
[৪]২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্যারিসে ১৯৫টি দেশ চলতি শতাব্দীর শেষে পৃথিবীর তাপমাত্রা শিল্প পূর্ববর্তী যুগের তুলনায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি কোনোভাবেই বাড়তে না দেয়ার খসড়া চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা ছিলো বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে দেড় ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখা। তবে বাস্তবে কোনো দেশই এই চুক্তি সার্বিকভাবে পালন করে নি। উপরুন্তু বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক গ্রীন হাউস গ্যাস নির্গমনকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
[৫]এবারের জাতিসংঘে অধিবেশনে জলবায়ু ও পরিবেশের বর্তমান অবস্থার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করেন ট্রাম্প ও শি। ট্রাম্প চীনের ওপর ‘মারাত্মকহারে পরিবেশ দূষণের’ অভিযোগ জানেন। এদিকে জিনপিং বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উচিত জলবায়ু নিয়ে আরো দায়িত্বশীল হওয়া।’
[৬] গ্লোবাল কার্বন প্রজেক্টের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১৭৫০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১০টি দেশ বিলিয়ন মেট্রিক টন কার্বন নির্গমন করেছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ কার্বন নির্গমন করেছে যুক্তরাষ্ট্র (৩৯৭.০ বিলিয়ন মেট্রিক টন), চীন (২১৪.০), রাশিয়া (১৮০.০), জার্মানি (৯০.০) ব্রিটেন, (৭৭.০), জাপান (৫৮), ভারত (৫১.০), ফ্রান্স (৪০.০), কানাডা (৩২.০) ও পোল্যান্ড (২৭.০)
[৭] জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট কোভিড-১৯ সহ নতুন সব মহামারীর বিস্তার নিয়ে জাতিসংঘের ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি)-এর বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘বিশ্ব উষ্ণায়ন ছিল শুধুই বিপদের আগাম পূর্বাভাস। এবার সরাসরি তার ফল ভুগতে শুরু করেছে মানবজাতি।’
আপনার মতামত লিখুন :