সুজন কৈরী: [২] কক্সবাজার-টেকনাফসহ বিভিন্ন নদীপথকেন্দ্রিক মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য শিগগিরই যাত্রা শুরু করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ‘মেরিন ইউনিট’। ডিএনসির একজন সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি দল ইতোমধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। অস্ট্রিয়ার ভিয়ানায় অবস্থিত ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস এন্ড ক্রাইমের (ইউএনওডিসি) অর্থায়নে ডিএনসিকে দুটি স্পিডবোট হস্তান্তর করা হবে আগামী শুক্রবার।
[৩] ডিএনসি সূত্র জানায়, মায়ানমার-বাংলাদেশ নাফসহ নদীপথের সীমান্ত হচ্ছে ২১৬ কিলোমিটার। দীর্ঘদিন ধরে নাফ নদী দিয়ে বাংলাদেশে ইয়াবা প্রবেশ করে। এছাড়া বঙ্গপোসাগরের পাশ ঘেষে দেশের বিভিন্ন উপক‚লীয় অঞ্চল দিয়েও দিয়েও দেশে প্রবেশ করছে ইয়াবা। নদীপথ দিয়ে ইয়াবার চোরাচালান বন্ধ করতে এ বিশেষ ইউনিট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে ডিএনসি। এই ইউনিটের নেতৃত্বে থাকবেন একজন সহকারী পরিচালক।
[৪] সূত্র জানায়, এ ইউনিট গঠনে ইএনওডিসি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। তাদের অর্থায়নেই ডিএনসিকে দুটি স্পিডবোট দেয়া হচ্ছে। এজন্য তারা আন্তজার্তিকভাবে টেন্ডার আহ্বান করে। সেখানে বাংলাদেশের গোল্ডেন ফাইবার নামক একটি প্রতিষ্ঠান টেন্ডার পায়। ওই প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জের ডকইয়ার্ডে স্পিডবোট দুটি তৈরি করে। সেখান থেকেই আগামী শুক্রবার ডিএনসিকে স্পিডবোটগুলো বুঝিয়ে দেয়া হবে। স্পিডবোটগুলোর আনুমানিক দাম দুই কোটি টাকা বলে জানা গেছে।
[৫] এদিকে স্পিডবোট চালানো, রক্ষণাবেক্ষন ও নদীপথে অভিযানের কৌশলসহ বিভিন্ন বিষয়ে ডিএনসির ১৪ সদস্য শ্রীলঙ্কা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। মেরিন ইউনিটটি ডিএনসির একজন সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। দুই শিফটে দিনরাত এ ইউনিটের সদস্যরা কাজ করবে।
[৬] এ বিষয়ে ডিনসির সহকারী পরিচালক (উত্তর) মো. মেহেদি হাসান বলেন, নদীপথে মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে মেরিন ইউনিট গঠন হচ্ছে। এজন্য ইতোমধ্যে ইউএনওডিসি থেকে দুটি স্পিডবোট দেয়া হয়েছে। যা আগামী শুক্রবার হস্তান্তর করা হবে।
[৭] ডিএনসির ঢাকা মেট্রো উপঅঞ্চলের দক্ষিণ বিভাগের উপপরিচালক মো. মানজুরুল ইসলাম বলেন, দেশের বিভিন্ন নদীপথের সীমান্ত দিয়ে মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে এই ইউনিট গঠিত হচ্ছে। এটি যাত্রা শুরু করলে সীমান্তের নদীপথগুলো দিয়ে মাদক চোরাচালান বন্ধ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
[৮] ডিএনসির মহাপরিচালক মো. আহসানুল জব্বার বলেন, কক্সবাজার-টেকনাফসহ বিভিন্ন নদীপথকেন্দ্রিক মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য শিগগিরই মেরিন ইউনিট যাত্রা শুরু করবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এই ইউনিটের সদস্যদের ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
[৯] তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ মাদকই অবৈধভাবে পার্শবতী দেশ থেকে আসছে। তাই প্রতিবেশি দেশগুলোর সহযোগীতা ছাড়া মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব না। এজন্য প্রতিবছরই মায়ানমার ও ভারতের সঙ্গে আমারা দ্বিপাক্ষীক বৈঠক করি। সভায় মাদক চোরাচালনের বিষয়ে আলোচনা হয়।