বাবুল আক্তার : [২] যশোরের চৌগাছায় “পীর বলুহ দেওয়ানের ওরস উপলক্ষ্যে ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবারে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এ বছরে করোনা প্রদূর্ভাবের কারনে মেলার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। কিন্তু একটি মহল মেলার অনুমতি পেয়েছে এমন মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে স্টল বাণিজ্যে ও নানা অসঙ্গতির মধ্য সব প্রস্থুতি শেষে আগামী কাল থেকে মঙ্গলাবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে মেলা।
[৩] চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, আমি শুনেছি বলুহ দেওয়ানের ওরস উপলক্ষ্যে স্বাভাবিকভাবে সেখানে লোকসমাগম হয়। সেখানে কিছু দোকানপাট বসে। সেই হিসেবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি নিয়ে মেলার আয়োজন করেন স্থানীয়রা। এবছরে করোনার কারনে এখানে মেলার কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।
[৪] সারা বিশ্বে করোনা মহামারি থেকে বাঁচতে একের পর এক স্বাস্থ্যবিধি মানতে বিভিন্ন দেশে সরকারি নির্দেশ জারি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও এই করোনা মহামারি থেকে বাঁচতে সর্বদা স্বাস্থ্যবিধি মানতে সরকারিভাবে বিভিন্নভাবে নির্দেশনা জারি করেছে। সে কারনেই উপজেলার লাখো জনগনের জীবন বাঁচাতে মেলা না করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এসএম হাবিবুর রহমান ও উপজেলা চেয়ারম্যান ড.মোস্তানিছুর রহমান সহ উপজেলার বিশিষ্ট জনেরা।
[৫] প্রতি বাংলা সনের ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার চৌগাছা উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের কপোতাক্ষ তীরবর্তী হাজরাখানা গ্রামে ঐতিহ্যবাহি পীর বলুহ দেওয়ানের ওরশের সময় স্থানীয়রা যশোর জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে মেলার আয়োজন করে থাকেন।
[৬] মেলা আয়োজক কমিটি যশোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর আবেদন করলে এবছরে করোনার কারনে সোমবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মেলার অনুমতি পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।
[৭] স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, আমি চাইনা আমার ইউনিয়নসহ উপজেলাবাসি করোনা আক্রান্ত হোক। এবছর করোনার ঝুঁকি নিয়ে মেলার আয়োজন করা উচিত হবেনা।
[৮] উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছাঃ নুৎফুন্নাহার লাকি বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো মানুষের সমাগম হবে মেলায়। এতে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যে কারনে মেলা বন্ধ রাখা উচিত।
[৯] চৌগাছা উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক দেবাশীষ মিশ্র জয় বলেন, যে করোনার ভয়ে ঈদের জামাত এবং দূর্গা পূজার মতো ধর্মীয় উৎসব পালনে বিভিন্ন বিধিনিষেধ রয়েছে। সেখানে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুকি নিয়ে অনুমতি ছাড়া অবৈধভাবে মেলার আয়োজন করাটা বোকামি।
[১০] চৌগাছা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এসএম হাবিবুর রহমান ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যার ড. মোস্তানিছুর রহমান বলেন, যে করোনার ভয়ে সরকার এখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছেনা। লোক সমাগম করা নিষেধ সেখানে মেলা হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
[১১] এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, করোনা থেকে বাঁচতে এবং সাধারন জনগনকে বাঁচাতে এ বছর এ মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। অনুমতি ছাড়ায় যারা অবৈধভাবে মেলার আয়োজন করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওসি সাহেবকে বলেছি। প্রয়োজনে আমি নিজে সেখানে যাব।
[১২] চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব বলেন, এখনও মেলার অনুমতি হয়নি। অনুমতি ছাড়া মেলা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমি কিছু সময়ের মধ্যে সেখানে যাব। বলুহ দেওয়ানের ওরস স্থলে যদি মেলা উপলক্ষ্যে কোনো স্টল দেওয়া হয় তাহলে সরিয়ে দেওয়া হবে।
[১৩] মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মিলন বলেন, এখন পর্যন্ত মেলার অনুমতি পাওয়া যায়নি। আজ মঙ্গলবার যশোরের এসপি মহোদয় আসতে চেয়েছেন। আসার পরে যদি অনুমতি দেন তাহলে মেলা হবে অন্যথায় সুযোগ নেই। মেলার অনুমতির আগেই জায়গা বরাদ্ধ দিয়ে টাকা নেওয়ার ব্যপারে তিনি বলেন, কারো কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নেওয়া হয়নি। সম্পাদনা : ইয়াসিন