মাসুদ রানা, ফেসবুক থেকে: ১৯৪৭ সালের ১৪ অগাস্ট থেকে ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানের ৮ জন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ৪ জনই ছিলেন তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান তথা আজকের বাংলাদেশের।
(১) খাজা নাজিম উদ্দিন - ২য় প্রধানমন্ত্রী
(২) মোহাম্মদ আলী, বগুড়া - ৩য় প্রধানমন্ত্রী
(৩) শহীদ হোসেন সোহরাওয়ার্দী - ৫ম প্রধানমন্ত্রী
(৪) নুরুল আমিন - ৮ম প্রধানমন্ত্রী
পাকিস্তানের ৫টি প্রদেশের মধ্যে একটি প্রদেশ - আজকের বাংলাদেশ - থেকে ৫০% প্রধানমন্ত্রী আসা, প্রমাণ করে যে, বাঙালি এলিট শ্রেণী পাকিস্তান রাষ্ট্রে ক্ষমতার ভালোই অংশীদার ছিলো। কিন্তু বাঙালি মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণী ছিলো বঞ্চিত এবং উন্নয়নের সম্ভাবনাহীন।
সুবিধাভোগী বাঙালী এলিট শ্রেণীর মধ্যে বাঙালি জাতীয়তাবোধ ছিলো না বললেই চলে। বাঙালি জাতীয়তাবোধের ধারক ও বাহক ছিলো বাঙালি মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও দরিদ্রশ্রেণী।
গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পাকিস্তানের ৮ম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিলো শেখ মুজিবুর রহমানের। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি এলিট শ্রেণীর প্রতিনিধি ছিলেন না। অথবা বলা যায়, এলিট শ্রেণী তাঁকে নেতা হিসেবে মানতে চায়নি।
প্রকৃত অর্থে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বিকাশোন্মুখ বাঙালি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর প্রতিনিধি, যদিও তিনি নিম্নবিত্ত ও দ্ররিদ্র শ্রেণীরও অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছিলেন। তিনি নিজেও এসেছেন মধ্যবিত্ত শ্রেণী থেকে।
শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণীর মধ্যে বিকশিত নতুন বাঙালি জাতীয়তাবোধ থেকে জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্খাই ১৯৭১ সালে সশস্ত্র যুদ্ধ-জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ রিপাবলিকে জন্মদান করে।
জন্ম প্রক্রিয়ার বিবেচনায় পাকিস্তান ও ভারত রাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ রিপাবলিক অনেক উচ্চ মর্য্যাদার এই জন্যে যে, এ-দেশটির স্বাধীনতা কোনো ঔপনিবেশিক শক্তির আইনের দ্বারা সৃষ্ট নয়, বরং স্বঘোষিত ও যুদ্ধ-জয়ে অর্জিত! আর এখানে বাঙালি জাতি অনন্য গৌরবের অধিকারী।
আপনার মতামত লিখুন :