ফেনী হার্ট ফাউন্ডেশনে চিকিৎসক-সেবিকাদের মারধর-ভাঙচুরের একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। দেখলাম। অবর্ণনীয়। নারী চিকিৎসকও রেহাই পায়নি। বাগেরহাটে চিকিৎসক মেরে ফেলার ভিডিও-টিও ভাষাতীত। এই কোভিডকালেই চিকিৎসক নির্যাতনের আরো কাহিনী হয়েছে ।
স্বাস্থ্যকর্মী নির্যাতন বা হয়রানি এটি শুধু বাংলাদেশেই নয়, এটির ব্যাপ্তি বিশ্বময়। সার্কভুক্ত দেশগুলো থেকে শুরু করে চীন, অস্ট্রেলিয়া এমনকি ইউরোপ, আমেরিকাতেও । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর পরিধি মেরে ফেলা বা ভাঙচুরের আগ পর্যন্ত। সিঙ্গাপুর মেডিকেল এসোসিয়েশনের এক সমীক্ষা (২০০৯) মতে, সমীক্ষায় অংশ নেয়া ২৫১ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১২০ জন একাধিকবার শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তবে সেটা চড় মারা, খোঁচা দেওয়া, লাথি মারা, কামড়ানো বা কিছু ছুড়ে মারার মধ্যে সীমাবদ্ধ।
যারা চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান, তারা সরকারি হাসপাতালগুলোর প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রবেশপথে সাঁটানো একটি পোস্টার দেখে থাকবেন। সেখানে লেখা আছে, "আমাদের কর্মীদের অপব্যবহার করবেন না। ভাল যত্ন প্রদানের জন্য আমাদের একটি নিরাপদ পরিবেশ দিন। হয়রানি থেকে সুরক্ষা আইন ২০১৪ এর ৬ ধারার অধীনে, স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের নির্যাতন করা একটি অপরাধ।"
হয়রানি থেকে সুরক্ষা আইনের ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোন অশ্লীল, হুমকি, আপত্তিজনক বা অপমানজনক শব্দ বা আচরণ ব্যবহার করলে বা যোগাযোগ তৈরি করলে-সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শাস্তির পরিমান বাংলাদেশী টাকায় তিন লক্ষ টাকা অথবা এক বছরের জেল অথবা উভয়ই ।
কিছু ছুড়ে মারা আর খোঁচা মারার শাস্তি যদি এই হয়, তাহলে ভাঙচুর আর মেরে ফেলার শাস্তি কি হওয়া উচিত ? দেশের নীতিনির্ধারকদের অনেকেই চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান। সেখানকার হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা তাঁদের খুব পছন্দ। সিঙ্গাপুরের এই আইনটি কেন পছন্দ নয় ? সেটি কেন আমাদের দেশে প্রয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না ? লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট
আপনার মতামত লিখুন :