আনিস তপন : [২] সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ অনুযায়ী করোনা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ৩০ ধারা মতে সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জনের নিকট জোনিং ঘোষণার ক্ষমতা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
[৩] সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ সংক্রান্ত এক ঘোষণায় স্থানীয় প্রতিনিধি, বেসামরিক প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা ও সশস্ত্র বাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় জোনিং কার্যক্রম বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে।
[৪] এতে করোনার প্রভাবে চলমান ঝুঁকি বিবেচনায় বাংলাদেশের যে কোনো ছোট-বড় এলাকাকে লাল, হলুদ ও সবিজ জোন হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে। তবে জোন ব্যবস্থাপনা 'বাংলাদেশ রিস্ক জোন বেজড কোভিড-১৯ কনটেইনমেন্ট ইমপ্লিমেনটেশন স্ট্র্যাটেজি/গাইড অনুসরণের মাধ্যমে বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে।
[৫] প্রাথমিক পর্যায়ে ৩টি জেলা গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ, নরসিংদী এবং ঢাকা (উত্তর/দক্ষিণ) সিটি করপোরেশনে পরীক্ষামূলকভাবে জোনিং সিস্টেম কার্যক্রম শুরুর কথা বলা হয়েছে। জোন সুনির্দিষ্টভাবে সংশ্লিষ্ট এলাকার কোন অংশে কার্যকর হবে এবং এর পরিধি কি হবে তা তা প্রয়োজন মতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।
[৬] স্ট্র্যাটেজি/গাইড অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি কেন্দ্রীয় কারিগরি গ্রুপ গঠন করবে। এই গ্রুপ সময়ে সময়ে জোনিং সিস্টেমের সংজ্ঞা পর্যালোচনা করবে। প্রয়োজনে সংজ্ঞা ও বাস্তবায়নের ধরণ পরিবর্তনের সুপারিশ করবে।
[৭] বিদ্যমান বা নতুন এলাকার জোনিং সিস্টেম প্রস্তাব বা পরিবর্তনের জন্য প্রতিটি সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা-উপজেলায় স্থানীয় কমিটি থাকবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ প্রতিরোধ সংক্রান্ত কমিটি এই দায়িত্ব পালন করতে পারবে। কমিটি জোনিং সিস্টেমের হালনাগাদ সংজ্ঞা ও বাস্তবায়ন কৌশল অনযায়ী স্থানীয় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে এবং জোনিং সিস্টেম চালু করতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতামত চাইবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কেন্ত্রীয় কারিগরি গ্রুপের মতামত সাপেক্ষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবে।
[৮] বাস্তবায়নাধীন জোন এলাকায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের চলাচল/ছুটি/দায়িত্ব পালন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তর/পরিদপ্তর/দপ্তর/প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
[৯] এদিকে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গঠিত কোভিড-১৯ প্রতিরোধে জাতীয় কমিটির সব শেষ সভায় গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ, নরসিংদীতে জোনিং কার্যক্রম বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককে নেতৃত্ব দিয়ে তা ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারকে সমন্বয়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনে মেয়রগণ জোনিং কার্যক্রম বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকলেও স্থানীয়।সংসদ সদস্যদের এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করবেন বলা হয়েছে।
[১০] পরিপূর্ণ জোনিং সিস্টেম নিশ্চিত করতে এক জোন থেকে অন্য জোনে যাওয়া-আসা বন্ধে প্রয়োজনে ডিএমপির মুভমেন্ট অ্যাপ ব্যবহারের সুপারিশ করা হয় বৈঠকে। বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি কঠোরভাবে প্রয়োগের লক্ষ্যে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও এটুুআই প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নাগরিকের স্বাস্থ্য সেবায় টেলিমেডিসিনের ব্যবহার নিশ্চিত করবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় কমিটি।
[১১] করোনা পরীক্ষা করতে চাইলে আগ্রহী ব্যক্তির ঠিকানা যাচাইয়ের লক্ষ্যে তার নাম, টেলিফোন নম্বর, এনআইডিসহ ঠিকানা বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি আইসিটি বিভাগের 'পরিচয়' প্লাটফরম ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জোনিং পরিকল্পনায় চট্টগ্রামকে অন্তর্ভূক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় কমিটি।
[১২] তাছাড়া এসব কর্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ বরাদ্দের প্রয়োজন হলে অর্থ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে জাতীয় কমিটির সভায়।