সোহরাব হোসেন : [২] প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্পান কেড়ে নিয়েছে শ্যামনগরের অর্ধলক্ষ মানুষের ঈদ আনন্দ। ঈদের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদগুলো পানিতে থৈ থৈ করছে। গ্রামগুলোর ওপর দিয়ে বইছে নিয়মিত জোয়ার ভাটার পানি। একটু রান্না করে পরিবার-পরিজনের মুখে খাবার তুলে দেবে সেটুকু শুকনা মাটিও নেই কোথাও কোথাও।
[৩] পরিবার-পরিজন নিয়ে বিনিদ্র রজনী কাটছে প্লাবিত এলাকার হাজার হাজার মানুষের। শ্যামনগরের কাশিমাড়ী, পদ্মপুকুর ও গাবুরার বানভাসি মানুষের এ চিত্র প্রতিদিনের। মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে এসব জনপদে। তাদের কাছে ঈদ আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে।তাদের চোখে মুখে গভীর উৎকণ্ঠা। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজে তারা এখন দিনরাত সময় পার করছে। সুপার সাইক্লোন আম্পান কেড়ে নিয়েছে তাদের প্রতিদিনের আনন্দ। পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। প্লাবিত এলাকার জনগণ ত্রাণ চায় না স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য তারা সরকারের কাছে জোর দাবি তুলেছে।
[৪] শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের ১২ গ্রামে এবার ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়নি
[৫] বাংলাদেশের সর্বদক্ষিনের উপকূলবর্তী জেলা সাতক্ষীরায় গত ২০শে মে সুপার সাইক্লোন আম্ফান আঘাত হানে। আঘাতে উপকূলবর্তী শ্যামনগর উপজেলাকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার যে কয়টি ইউনিয়ন ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে লন্ডভন্ড হয়েছে এর মধ্যে কাশিমাড়ী অন্যতম।
[৬] খোলপেটুয়া নদী বেষ্টিত কাশিমাড়ী ইউনিয়নের ছয়টি স্থানে মারাত্মকভাবে নদীর বাঁধ ভেঙে গোটা এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে কাঁচা ঘরবাড়ি, মৎস্য ঘের, জমির ফসল, পশুপাখি সহ উপড়ে পড়েছে গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি। মাটির তৈরি মসজিদ গুলি খোলপেটুয়া নদীর পানিতে বিধ্বস্ত হলেও কিছু কিছু পাকা মসজিদের ভেতর দিয়ে নিয়মিত বইছে জোয়ার ভাটা পানি।ঘূর্ণিঝড় কবলিত নদীর বাঁধভাঙ্গা লোনা পানিতে প্লাবিত এলাকার আশ্রয়হীন মানুষেরা আশ্রয় নিয়েছে পার্শ্ববর্তী সাইক্লোন শেল্টার এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এছাড়াও আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে অনেকেই এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :