সুমন্ত আসলাম : শব্দ করে ডাক দিলেন বৃদ্ধটি, ‘এই’। রাস্তার ওপাশে জামগাছের গোড়ায় বাঁধানো শানে বসে আছেন তিনি। থমকে গেলেন বৃদ্ধাটি। দু হাতের নিচে পিড়ির মতো দুটো কাঠ নিয়ে সামনের যাচ্ছিলেন মানুষটি। দুজনই ভিক্ষুক। একজন বয়সের ভারে কাতর। আরেকজনের পুরো শরীরটাই অচল। বসে বসে ছেঁচড়িয়ে হাঁটেন, পিড়ির মতো দুটো কাঠ তার হাতের নিচে। বাম হাতের মুঠোয় থাকা বেশ কয়েকটা কয়েন থেকে একটা ডান হাতে নিলেন বৃদ্ধটি। তিন-চার হাত সামনে থাকা বৃদ্ধার দিকে ছুড়ে দিলেন। পাশেই পড়লো সেটা। হাতে নিলেন বৃদ্ধাটি। বৃদ্ধটি বললেন, ‘কতো’?
চোখের খুব কাছে নিয়ে বৃদ্ধটি বললেন, ‘৫ ট্যাকা’। ‘যাও এবার’। দু সপ্তাহ পর গ্যারেজে নেমেছি বাসা থেকে। দাঁড়িয়ে আছি ভেতরে, গেটের সামনে। একটু পর ইফতারির আজান হবে। মানুষ দেখছি। কতো রকম মানুষ, দু হাত-পাওয়ালা মানুষ, হৃদয়ওয়ালা মানুষ। বুকের ভেতরের ওই জিনিসটা আপাত চোখে দেখা যায় না, কারও কারওটা যায়। ওই বৃদ্ধেরটা দেখলাম। ইয়া বড় হৃদয়। ২৭ দিনে ত্রাণ চুরির দায়ে বরখাস্ত হওয়া ৫২ জনের ৫২টা হৃদয়ের চেয়ে বড় হৃদয়। লাল হয়ে উঠেছে পশ্চিমের আকাশটা। হঠাৎ একটু ঝলকানি দেখা গেলো আলোর। সম্ভবত আধো ছায়াতে বসে থাকা মানুষটাকে দেখলো আকাশ অথবা তার ওপাশে থাকা অন্য কেউ। না মানুষ সৃষ্টি করে তিনি ভুল করেননি, এই তৃপ্তিতে আরও একটু রাঙিয়ে দিলেন আকাশটা। ফেসবুক থেকে