সালেহ্ বিপ্লব : বলিউডের সিনিয়র অভিনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন অভিনেত্রী তনুশ্রী। গতকাল মুম্বাই হাইকোর্টে দাখিল করা চার্জশিটে পুলিশ বলেছে, ওই অভিযোগের কোনো প্রমাণ তারা পায়নি। আর তাই নানার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত শেষে বি সামারি রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ। উল্লেখ্য, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রমাণ না পাওয়া গেলে পুলিশ বি সামারি রিপোর্ট দিয়ে থাকে। এনডিটিভি, এএনআই
বেশ কিছুদিন আগে যখন হ্যাশট্যাগ মি টুর জোয়ার শুরু হয়, তখন ভারতে এই আন্দোলনে প্রথম সামিল হন তনুশ্রী দত্ত। তার অভিযোগ, ১০ বছর আগে হর্ন ওকে প্লিজ ছবিতে একসঙ্গে কাজ করার সময় নানা তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছিলেন। তনুশ্রীর অভিযোগ খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিলো মুম্বাই পুলিশ। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গতকাল বি সামারি রিপোর্টে পুলিশ জানায়, নানার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। আর তাই এই মামলা চালাতে অপারগতা প্রকাশ করেছে পুলিশ।
এদিকে পুলিশের বি সামারি রিপোর্টের কথা শুনে তনুশ্রী বলেন, জানতাম এরকমটাই হবে। আমি এতে একটুও অবাক হইনি। ভারতে আমরা মহিলারা সমাজ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ধরনের ব্যবহার পেতেই অভ্যস্ত।
একই সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসন সম্পর্কে তিক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী। তিনি বলেন, অলোক নাথ যদি ধর্ষণের পরেও বেকসুর খালাস পেয়ে সিনে দুনিয়ায় স্বমহিমায় ফিরতে পারেন তাহলে নানা কেন পারবেন না! একদিন আমার সঙ্গে হয়েছে, তা এবার বলিউডে কাজ করতে আসা নতুন অভিনেত্রীদের সঙ্গে রোজ ঘটবে। তনুশ্রীর দাবি, সাজানো মিথ্যে সাক্ষী জোগাড় করে পার পেয়ে গেলেন নানা। যদিও তিনি এখনো বিশ্বাস করেন, তিনি সুবিচার পাবেনই।
তনুশ্রী দত্তের আইনজীবী নীতিন শতপতে জানিয়েছেন, তিনি এখনো বি সামারি রিপোর্টের ব্যাপারে অবহিত নন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও এই ধরনের কোনো চিঠি তিনি পাননি। তবে হাইকোর্ট কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে এই বি সামারির বিরুদ্ধে পিটিশন দাখিল করবেন। আইনজীবীর অভিযোগ, এভাবেই নানা পাটেকারকে রক্ষা করছে পুলিশ। নানাকে বাঁচাতেই বি সামারি রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, তনুশ্রী দত্ত মুখ খোলার পর ভারতের অনেক নির্যাতিতা নারী মুখ খুলতে শুরু করেন। ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে সরব হন তারা। বলিউডের অনেক প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতার পাশাপাশি যৌন হেনস্থার দায়ে অভিযুক্ত হন রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীরাও। অভিযুক্তদের মধ্যে সাবেক তথ্যমন্ত্রী এম জে আকবরও ছিলেন।
#মিটু আন্দোলনের মুখর হওয়ার আগে দীর্ঘদিন তনুশ্রী দত্ত বলিউড থেকে দূরে ছিলেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি নানার বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। প্রশাসনের কাছে তার অভিযোগ, নানা পাটেকর বিভিন্ন ভাবে সিনেমার সেটে তাকে হেনস্থা করতেন। চাপে পড়েই নানার সঙ্গে তিনি অন্তরঙ্গ নাচের দৃশ্যে অংশ নিতে বাধ্য হন। যদিও তনুশ্রীর তোলা অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন নানা পাটেকার। বরং নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার জন্য তিনি আইনি চিঠি পাঠান তনুশ্রীকে।