খায়রুল আলম : সিনিয়র সাংবাদিক ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী বলেছেন, পুনঃনির্বাচন দেয়া অবশ্যই সম্ভব। কারণ যে নির্বাচন হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, প্রকৃত পক্ষে সেটি কোনো নির্বাচন নয়। এটি চরম জালিয়াতির নির্বাচন ছিলো।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরো বলেন, জালিয়াতির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে তাদের তো কোনো বৈধতা নেই। সুতরাং আগামী ছয় মাসের মধ্যে পুনঃনির্বাচনের যে দাবি এটি যৌক্তিক কিন্তু এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনেই যদি আবার নির্বাচন হয়, তাহলে সেটি করে লাভ হবে কিনা সে ব্যাপারে সন্দেহ আছে। এজন্য বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। বিএনপি সেরকম কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছে না বা জোরপূর্বক কিছু দাবি করছে না কারণ তারা সহিংসতার রাজনীতি পছন্দ করে না। জ্বালিয়ে দেয়া, পুড়িয়ে দেয়া, লগি-বৈঠা নিয়ে আন্দোলন করে মানুষ মারা, ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করো এটি যদি আন্দোলনের পদ্ধতি ধরে নেয়া হয় তাহলে তো সমঝোতা হবে না। যদিও দেশে এখন ত্রাসের রাজনীতি কায়েম আছে তবে বিএনপি এ রাজনীতি কখনো করেছে বলে আমার জানা নেই। সুতরাং বিএনপি যে পথে আছে, সেটি সঠিক পথ। মানুষের ওপর কোনো অত্যাচার যেন না হয়, কোনো ভায়োলেন্স যেন না থাকে, মানুষকে সঠিক পথের জন্য জাগিয়ে তোলাই হচ্ছে সঠিক পদ্ধতি। কারণ একাদশ নির্বাচনের পরে মানুষ স্তম্ভিত হয়ে গেছে, এ কেমন নির্বাচন হলো? সরকার গঠন হয়েছে, মন্ত্রিসভা গঠন হয়েছে, সংসদ অধিবেশন হয়েছে, এটি কিছু নয়। ১৯৯৬ সালে যখন ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, আমরা সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন দেয়ার জন্য একটি পার্লামেন্ট গঠন করি। তিন মাস পরে এ পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া হবে, সেসময় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসেনি। তখন সত্যি সত্যি সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আইন পাস করা হয় এবং তিন মাসের মধ্যে আবার নির্বাচন দেয়া হয়। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়। তাই সব কিছুই সম্ভব। জনগণ জেগে ওঠে নিজস্ব বিবেচনায়। তবে তাদের জাগিয়েও তোলা যায়। কিন্তু জনতার যে প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ তা প্রত্যেকদিন হয় না। যখন অত্যাচারিত হতে হতে তাদের পিঠ একবারে দেয়ালে ঠেকে যায় তখন তারা নিজ থেকেই জেগে উঠে। আর যখন জনতা জেগে উঠবে ফলাফল কী হয় তা বাংলাদেশের ইতিহাসে লেখা আছে।