সৌরভ নূর : সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন প্রদানের পরিবর্তে সরাসরি নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম বলেছেন, শুধু তাই নয় আমাদের প্রস্তাব ছিলো আসন সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি করা, আঠারো কোটি জনসংখ্যার ভিত্তিতে সংসদে মোট সদস্য সংখ্যা হবে চারশো পঞ্চাশটি, সেখানে একশোটি নারী আসন থাকবে। বাকি আসনগুলোতে নারী-পুরুষ মিলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এর জন্য মূলত দরকার সংবিধানের সংশোধন করা। আমরা চাই সংবিধানের পুনঃসংস্কার ও জাতীয় নির্বাচনের সময় পাশাপাশি দু’টি বাক্স থাকবে একটি প্রচলিত আসনের অন্যটি সংরক্ষিত আসনের জন্য। এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে আয়েশা খানম এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, এলাকাভিত্তিক কাজ করে তাদের সাথে মিশে রাজনৈতিক চর্চার মধ্য দিয়ে ভালোবাসা অর্জন ও মাঠ পর্যায়ে কাজ করা শিখতে হবে। নতুবা রাজনীতিতে নারীরা ফিডিং বোতলে দুধ খাওয়ার মতোই হয়ে থাকবে। আর এভাবে কোনো অর্থপূর্ণ প্রতিনিধিত্ব হয় না এবং তারা যেহেতু পরোক্ষভাবে মনোনীত ফলে তাদের মধ্যে একটা দুর্বলতা থেকেই যায়। এককথায় তার পায়ের নিচে রাজনৈতিক ভিত্তি তৈরি হচ্ছে না। এই অবস্থা থেকে নারীর নেতৃত্ব বের করে আনতে হলে সরাসরি নির্বাচন ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই।
সরাসরি নির্বাচন হলে নারীরা তারা তাদের নির্বাচনী এলাকাগুলোকে নিজের মতো করে তৈরি করতে পারবে। বর্তমান ব্যবস্থায় নারীরা পলিটিক্যাল ফোর্স হিসেবে গড়ে উঠতে পারছেন না। তারা বাবা, স্বামী কিংবা ভাইয়ের কোটাতে বারবার নির্বাচন করছেন। সেই আসনটি তাদের নিজেদের তৈরি নয়। আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী না হয় নারীদের সুযোগ দিচ্ছেন, কিন্তু প্রসেসটা যদি সাংবিধানিকভাবে করে না রাখা হয়, আইনি বাধ্যবাধকতার মধ্যে না আনা হয় তাহলে ভবিষ্যতে অন্য কেউ এই সুযোগ আবার নাও দিতে পারে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এই আন্দোলনটি প্রায় ২০-২৫ বছরের বেশি সময় ধরে চালিয়ে আসছে। ১৯৯৭ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমরা এ বিষয়ে একটি বিল জমা দিয়েছিলাম। এরপর ২০০৮ সালে মহাজোটের নির্বাচনী মেনিফেস্টোর ১২ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিলো আসন সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। এ দাবির বাস্তবায়ন চেয়ে ইতোপূর্বেই আমরা স্পিকার ও মন্ত্রীসহ সকল সংসদ সদস্যদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেছি। বেশকিছু নেতা-মন্ত্রীরা আমাদের কথাও দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা আর কথা রাখতে পারেননি। আমার তো মনে হয় রাজনৈতিকভাবে বন্দি তারা।