মুহাম্মাদ আবু আখতার: বর্তমান সমাজে বেশ কিছু মানুষের দেখা মেলে, যাদের কথাবার্তা শুনলে মনে হয় অন্যায় করায় কোন দোষ নাই, কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদ করা মহাদোষ। এরা সর্বদা অন্যায়কারীর পক্ষে কথা বলে এবং অন্যায়ের প্রতিবাদকারীর বিভিন্ন দোষত্রুটি ধরে হেয় করার চেষ্টায় থাকে। কেউ কোন অন্যায় করলে তার প্রতিবাদ করার মত সাহসী লোক এখন তেমন একটা পাওয়া যায় না। ফলে অন্যায় ক্রমবর্ধমানহারে বেড়েই চলছে। অপরদিকে অন্যায়ের প্রতিবাদকারীর সংখ্যা অনেক কমে যাচ্ছে। সমাজে এখন প্রকাশ্যে অসংখ্য অন্যায়কাজ সংঘটিত হচ্ছে কিন্ত এসব অন্যায়কাজে বাঁধা দেয়ার মত লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দুনিয়া আখিরাত উভয় জগতেই এর পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। রাসুলুল্লাহ (সা) অসংখ্য হাদীসে এ ব্যাপারে সকলকে সতর্ক করেছেন।
যারা অন্যায় দেখেও তার প্রতিহত করার কোন চেষ্টা ফিকির করে না তারা কালিমায়ে তাওহীদের হকের অবমাননা করে। তারা সারা জীবন এ কালিমা পাঠ করলেও তা তাদেরকে আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচাতে যথেষ্ঠ হবে না। হযরত আনাস (রা) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেন, কালিমায়ে তাওহীদ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ তার পাঠকারীকে সর্বদা উপকার করতে থাকে এবং তার উপর হতে আজাব ও বালা-মুসিবত দুর করতে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত এর হকের অবমাননা না করা হয়। সাহাবীগণ (রা) জিজ্ঞাসা করলেন, কালিমায়ে তাওহীদের হকের অবমাননা করার অর্থ কি? রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, প্রকাশ্যে আল্লাহর নাফরমানী করা হয় আর তা বন্ধ করার জন্য কোন চেষ্টা করা হয় না। (তারগীব)
অন্যায়ের প্রতিবাদ করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যারা অন্যায় কাজে বাঁধা দেয় না তাদের জন্য পরকালের কঠিন শাস্তি ছাড়াও এ দুনিয়াতেও আল্লাহর আজাবে পাকড়াও হবে এ সম্পর্কে হযরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেছেন, যদি কোন কোন কওমের মধ্যে কোন ব্যক্তি কোন গোনাহের কাজে লিপ্ত হয় এবং ঐ কওমের মধ্যে শক্তি থাকা সত্ত্বেও তাকে উক্ত গোনাহ থেকে বাঁধা না দেয় তবে মৃত্যুর পুর্বে দুনিয়াতেই তাদের উপর আল্লাহর আজাব নাযিল হয়। (আবু দাউদ, ইবনে মাজা, ইবনে হিব্বান।)
অন্যায়ের প্রতিবাদ না করার ফলে যখন শাস্তি নাযিল হবে তখন দোয়া করলেও সে শাস্তি থেকে বাঁচার কোন পথ নেই। এ সম্পর্কে হযরত হুযাইফা (রা) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, "যার হাতে আমার প্রাণ তার কসম করে বলছি, তোমরা অবশ্যই সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎ কাজে বাধা দিবে। তা না হলে অচিরেই আল্লাহর পক্ষ হতে তোমাদের ওপর কঠিন শাস্তি নেমে আসবে। তখন তোমরা (সে শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য) দোয়া করবে, কিন্তু আল্লাহ তোমাদের দোয়া কবুল করবেন না। (তিরমিযী)