স্বপ্না চক্রবর্তী : বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) ব্যাংকের খেলাপী ঋণ কমাবে বলে মনে করছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
শনিবার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টার (বিয়াক) এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এর যৌথভায়ে আয়োজিত ‘খেলাপী ঋণ আদায়ে এডিআর’র ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ মন্তব্য করেন ঢাকা চেম্বারের নেতারা।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হিসেবে ছিলেন সরকারের আইন, বিচার এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ এবং সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহীদুল হক। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিডল্যান্ড ব্যাংক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আহসান-উজ জামান এবং ইউল্যাব-এর বোর্ড অফ ট্রাষ্টি’র বিশেষ উপদেষ্টা অধ্যাপক ইমরান রহমান। বিয়াক-এর চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিটি ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অফ লিগ্যাল ব্যারিষ্টার শাফায়াত উল্ল্যাহ।
মূল প্রবন্ধে তিনি জানান, বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং এ থেকে উত্তরণের জন্য তিনি বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) কে বিকল্প পন্থা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের সামষ্টিক ব্যাংক ঋণের প্রায় ১১%ই খেলাপী ঋণ। তিনি ব্যাংক ঋণ বিষয়ক স্বাক্ষরিত চুক্তিসমূহে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি এবং মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া কে অন্তর্ভূক্ত করার আহবান জানান। তিনি বলেন, বিদ্যমান অর্থ ঋণ আদালত আইন ২০০৩কে যুগোপযোগী ও সংষ্কার করা একান্ত আবশ্যক।
এসময় মোহাম্মদ শহীদুল হক বলেন, বর্তমানে আদালতে অর্থ ঋণ বিষয়ক মামলার সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেক্ষেত্রে মামলা জট কমানো ও বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিয়াক অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। গত ৭ বছর ধরে বিয়াক খেলাপি ঋণ, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি, মধ্যস্থতা, প্রশিক্ষণ প্রভৃতি কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। আমাদের অবশ্যই সকলের জন্য সমান আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং মামলা-মোকাদ্দমায় জড়ানোর আগে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নেওয়া গেলে অনেক ক্ষেত্রেই অহেতুক হয়রানি কমানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি জানান, উন্নত দেশগুলোতে যেখানে ২% খেলাপী ঋণ রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে ১০% অধিক খেলাপী ঋণ বিদ্যমান আছে, যা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বৈঠকে নির্ধারিত আলোচনায় অংশ নেন সিটি ব্যাংকের ডিএমডি মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক-এর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মামদুদ রশিদ, ব্যারিষ্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান, ব্যারিষ্টার শিরীন শেখ মাইনুদ্দীন, ব্যারিষ্টার সাকিব মাহবুব, ব্যারিষ্টার মারগুব কবির, সিপিডি’র গবেষণা সহযোগী সৈয়দ ই্উসুফ সাদাত, ব্যারিষ্টার খন্দকার এম এস কাওসারসহ ডিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন, সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহীমসহ পর্ষদ সভার সদস্যরা।
আপনার মতামত লিখুন :