নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন বলেছেন, মানুষকে সেবা দেয়ার সর্বোচ্চ প্লাটফরম হচ্ছে রাজনীতি।
তিনি বলেন, যেহেতু রাজনীতি করি সেহেতু জনগণের সেবা দেয়ার উপযুক্ত পদ্ধতিই হচ্ছে সরকারে অংশ গ্রহণ করা। সংগঠনের পাশাপাশি সরকারে অংশগ্রহণ করে সেবাটা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া যায়। সে কারণে আমি মনে করি- জনগণের রায় নেয়া প্রয়োজন।
বুধবার (৩০ মে) বিকালে রাজধানীর সায়দাবাদ এলাকায় একাদশ সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৬ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন। এসময় বহুমূখী পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন তিনি।
ঢাকা-৬ আসন নিয়ে হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন বলেন, এ আসনের অবকাঠামো এবং সামাজিক অনেক সমস্যা রয়েছে। আমার কাছে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যা- মাদক এবং জঙ্গীবাদ। এগুলো নির্মূলে আমি আমার সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। পাশাপাশি উন্নয়নমূলক কাজ তো করবই।
তিনি বলেন, মানুষকে সেবা দেয়ার সর্বোচ্চ প্লাটফরম হচ্ছে রাজনীতি। যেহেতু রাজনীতি করি সেহেতু জনগণের সেবা দেয়ার উপযুক্ত পদ্ধতিই হচ্ছে সরকারে অংশ গ্রহণ করা। সংগঠনের পাশাপাশি সরকারে অংশগ্রহণ করে সেবাটা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া যায়। সে কারণে আমি মনে করি- জনগণের রায় নেয়া প্রয়োজন। এবার দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করবো। গতবারও তিনি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন।
স্বপন বলেন, আমি একজন মাঠকর্মী। আওয়ামী লীগের একজন প্রথম শ্রেণির কর্মী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশা করি। আমার বিশ্বাস- সরকারি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দলীয় জরিপে ফলাফল আমার দিকেই আসবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ দল। এখানে মনোনয়ন প্রত্যাশীও অনেক। সবাই যোগ্য। কেউ কারো থেকে কম যোগ্যতা রাখে না। যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে যোগ্য মনে না করেন আপত্তি নেই। যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই দেবেন। আমি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে তার পক্ষেই কাজ করবো
‘তবে মনোনয়ন দেয়া না দেয়ার মালিক এ সংগঠনের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পার্লামেন্টারি বোর্ড, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক। একইসঙ্গে রায় দেয়ার মালিক জনগণ। ভালো কাজ করলে, জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকলে তারা আমাকে চাইবেই। জনগণের পাশে থেকে সেবা করার অভিপ্রায় আমার দীর্ঘদিনের। সে কারণেই নির্বাচনে যাবার প্রত্যাশা করা আমার।
হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন বলেন, এ আসনের মূল সমস্যা হচ্ছে সোয়ারেজ ড্রেনেজ ব্যবস্থা। বারবারই আমরা এটাকে সমাধান করার কথা বলি। বিগত দিনেও সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। আমার ইচ্ছা- এটাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে যে সমস্যা আসবে সেটাকে সমাধান করা।
শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষার মান অনেক উন্নত হয়েছে। সঠিক শিক্ষা দিয়ে জাতিকে মেরুদন্ড সম্পন্ন হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করবো। সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশের উন্নয়নে যেন কাজ করতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করবো।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এ সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের উপর অবিচল আস্থা রাখেন। সেহেতু শেখ হাসিনা ঘোষিত যেই প্রার্থী হবে তার পক্ষে আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের কর্মী ও নেতারা কাজ করবে এবং বিজয়ী করবে।
স্বপন আরও বলেন, আমি যেমন সংগ্রাম করে তৃণমূল থেকে ওঠে এসেছি, ঠিক এমন করে লাখ লাখ নেতাকর্মী এ সংগঠনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। নেতাকর্মীদের পরিশ্রম করার মাধ্যমে সরকারে যোগদান করার সুযোগ দিয়েছে জনগণ। নিয়মের মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের জন্য যত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে সেগুলো সমাধান করতে কাজ করবো।
প্রসঙ্গত: হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন ছাত্ররাজনীতি দিয়ে শুরু করেন তার রাজনৈতিক জীবন। শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করেছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী, দেশরত্ম শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে চলছেন হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন।
পারিবারিকভাবে ছোটবেলা থেকেই আওয়ামী লীগের আদর্শ, নীতিকে অনুসরণ করেছেন হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন। বাবা ছিলেন সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন মুক্তিযোদ্ধা। ছোট বেলায় বাবার মুক্তিযুদ্ধের জীবন দেখেছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম থেকে শক্তি সংগ্রহ করে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন এই নেতা। হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন বলেন, আমার জীবনের প্রথমেই আমি ভালোবেসেছি বঙ্গবন্ধুকে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যকরি এই সাংগঠনিক সম্পাদক নিজের গুণাবলী দিয়েই তৃণমূল এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে গড়ে তুলেছেন সুসম্পর্কের বন্ধন। বাংলাদেশকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্বপ্ন দেখেন সেই স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে ঢাকা-৬ আসনের উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চান তিনি।
হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন ১৯৭৬ সালে ৮ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ৫০ পয়সা দিয়ে ছাত্রলীগের প্রাথমিক সদস্য পদ লাভ করেন তিনি। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের স্কুল কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালে কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক, ১৯৮১ সালে জগন্নাথ কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে যোগ দেন।
পরবর্তীতে ১৯৮৪ অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য হন এবং একই বছর জগন্নাথ কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এর পরেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন, আওয়ামী লীগের স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠা সদস্য হিসেবেও কাজ করেছেন এই নেতা।
২০০৩ সালে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য হিসেবে যুক্ত হন তিনি। এরপর থেকেই মহানগরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে বর্তমানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রথম সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।