শিরোনাম
◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে ◈ সেনা গোয়েন্দাসংস্থার বিরুদ্ধে ৬ পাক বিচারপতির ভয় দেখানোর অভিযোগ ◈ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিরা সাদা পতাকা উড়াচ্ছিল, তাদের বূলডোজার দিয়ে মাটি চাপা দিল ইসরায়েলী সেনারা ◈ ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দ্রুত আরোপ করুন: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ ◈ যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত ◈ বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ ও মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র: ম্যাথিউ মিলার ◈ ঈদের পর কমপক্ষে ২৩ ডিসি’র রদবদল হতে পারে ◈ ৫ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে কর্মদিবস একদিন ◈ চাঁদপুরে পিকআপ ভ্যান ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত

প্রকাশিত : ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৬:০২ সকাল
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৬:০২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শিশুদের থাইরয়েড সমস্যার চিকিৎসা কী?

ডা. জাকির হোসেন : মানুষের শরীরে অনেকগুলো অন্ত:ক্ষরা গ্রন্থি থাকে। এর মধ্যে থাইরয়েড গ্রন্থি অন্যতম। মানুষের গলার সামনের দিকে ঠিক মাঝখানে এডামস অ্যাপেলের নিচে প্রজাপতির মতো এটি সুবিন্যস্ত থাকে। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন হরমোন নিসৃত হয়। কিন্তু থাইরয়েড গ্রন্থির কিছু সমস্যার কারণে এই গ্রন্থি হরমোন নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে কিংবা কমে যেতে পারে। বেশির ভাগ মানুষই থাইরয়েডের সমস্যা বলতে শুধু বয়স্কদের রোগই বোঝায়। কিন্তু এটা একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা। শিশুদেরও থাইরয়েড এর সমস্যা হতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যা সময়মতো চিকিৎসার আওতায় না এলে শিশুরটির পুরো জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। থাইরয়েড গ্রন্থির অনেক রোগের কারণে এই গ্রন্থির হরমোন নিঃসরণ বেড়ে বা কমে যেতে পারে।

থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে গেলে একে হাইপার থাইরয়েডিসম বলে আবার হরমোন নিঃসরণ কমে গেলে একে হাইপো থাইরয়েডিসম বলে। এই থাইরয়েড হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে বা কমে গেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। শিশুরা সাধারণত তার শরীরে কোনো সমস্যা হলে সেটা ব্যাখ্যা করে বলতে পারে না। তাই প্রতিটি শিশুর থাইরয়েড গ্রন্থির কোনো সমস্যা আছে কিনা তা নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। থাইরয়েড গ্রন্থিতে কোনো সমস্যা হলে শরীরের নানা রকম উপসর্গ দেখা যায়।

যেমন বাড়ন্ত শিশুর বৃদ্ধি কম হওয়া, শিশুর বুদ্ধি কম হওয়া, সব সময় ক্লান্তি বোধ করা, সহ্য শক্তি কমে যাওয়া, শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা, বিষণœতা, গলার স্বর পরিবর্তন হওয়া, হঠাৎ করে ওজনের তারতম্য, কখনো খুব গরম বা ঠা-া অনুভূত হওয়া, চুল পড়া, ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হওয়া, পেশি ও হাড়ে ব্যথা হওয়া, থাইরয়েড হরমোন মানব শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজে লাগে। যেমন- বুদ্ধির বিকাশ, মস্তিষ্কের বৃদ্ধি, মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ইত্যাদি। মানব শিশুর জন্মের প্রথম দুই বছরের মধ্যে তার মস্তিষ্কের বিকাশ মোটামুটি সম্পূর্ণ হয়ে যায়। এই সময় থাইরয়েড হরমোনের তারতম্য থাকলে মস্তিষ্কের বৃদ্ধি ও বিকাশে সমস্যা হতে পারে। মনে রাখতে হবে শিশুদের মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি সাধন হয়ে গেলে শিশুটি আজীবনের জন্য কম বুদ্ধি সম্পন্ন কিংবা হাবাগোবা হবে। মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতির কোনো চিকিৎসা করা সম্ভব নয়।

হাইপো বা হাইপারথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত শিশুদের প্রয়োজন সঠিক এবং সময়মতো চিকিৎসা প্রদান করা। যদি সঠিক সময়ে রোগ র্নিণয় করে চিকিৎসা করা যায় তবে অন্য সব স্বাভাবিক শিশুর মতোই শারীরিক, মানসিক বৃদ্ধি অর্জন ও পরিপূর্ণ-সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব। তবে এই জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন সমস্যা শুরু হওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া। শিশুর মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার আগেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে। অন্যথায় বাড়ন্ত বয়সের এই সমস্যাটি শিশুটিকে জীবনের প্রতিটি স্তরে ভোগাবে এবং সে পিতা-মাতা ও সমাজের বোঝা হয়ে বেড়ে উঠবে।

লেখক : চিকিৎসক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়