ডেস্ক রিপোর্ট : পুলিশ সপ্তাহ শেষ না হতেই নাখালপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিরাট সফলতার পরিচয় দিয়েছে। আর এ ধরনের অতীতের সব জঙ্গি বিরোধী অভিযান সফলতা আর জনগণের বন্ধু হওয়ার পথে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আধুনিক বিশ্বের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে বাংলাদেশ পুলিশকে আরো সুসজ্জিত করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে আভাস পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সকে আরো গতিশীল করতে তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি ‘পুলিশ সপ্তাহ’ হয়ে গেল। পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। শুধু তাই নয়, সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন। কারণ তিনি মনে করেন, আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পুলিশ বাহিনীকে আরো আধুনিকায়নের পথে নিতে হবে। আর সে জন্য প্রয়োজন অবকাঠামো উন্নয়নে পাশাপাশি আধুনিক প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম। সে কথা চিন্তা করে এই বাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে ১৪ হাজার আধুনিক ক্ষুদ্রাস্ত্র। এ সব অস্ত্র দিয়ে সত্যিকার অপরাধীদের সহজে গ্রেফতার করতে সহায়ক হবে। বিভিন্ন অভিযানে মূলত এ সব অস্ত্র ব্যবহার হবে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। তবে পুলিশ বাহিনী জনগণের অধিকতর নিরাপত্তার বিষয়টিতে আরো মনোযোগী হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, পুলিশ সপ্তাহে পুলিশ বাহিনীর যেসব সমস্যার কথা বলা হয়েছে এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পরিবহন। পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী একদিকে যেমন প্রত্যাশা করেন, তেমনি এই কাজে পুলিশ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বেশ অনেক আগে থেকে কাজ করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে যুক্ত হয়েছে আধুনিক আর্মার্ড পারসোনেল ক্যারিয়ার, হেলিকপ্টার, অত্যাধুনিক নেট গান, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, আধুনিক দুরবিন, গ্যাসগান ইত্যাদি। নতুন করে যে ১৪ হাজার ক্ষুদ্রাস্ত্র আনা হচ্ছে এর মধ্যে ৩ হাজার পিস্তল রয়েছে। তবে এ সব ক্ষুদ্রাস্ত্র আনার পেছনে যে বিষয়টি কাজ করছে তা হলো, চাহিদার তুলনায় অস্ত্রের ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণেই এ সব কেনার আয়োজন চলছে। এর পাশাপাশি জনগণের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় আনা হচ্ছে।
সম্প্রতি পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনগণের বন্ধু হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এই বার্তা পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে একেবারে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত পুলিশ বাহিনীকে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। অপরাধ দমনের পাশাপাশি পুলিশ বাহিনী যেন জনগণের পাশে থেকে সেবা দিতে পারে সেই মনোভাব গড়ে তুলতে আধুনিকায়নের পথে যেতে হচ্ছে।
পুলিশ বাহিনী যেন বিদেশে গিয়ে তাদের সক্ষমতা দেখাতে পারে সে ব্যাপারেও সরকার বেশ সচেতন। ইতোমধ্যে বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশ সফলতার পরিচয় দিয়েছে। এই সুনাম ধরে রাখার ব্যাপারে সরকার এই বাহিনীকে একটি আধুনিক সময়োপযোগী বাহিনী হিসেবে দেখতে চায়। বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা ও তাদের অভিযান ব্যর্থ করে দিতে পুলিশ বাহিনী যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে তা জনগণের কাছে বেশ সমাদৃত। আর এবারের পুলিশ সপ্তাহের মূল সেøাগান ছিল, জঙ্গি ও মাদক বিরোধী অভিযানের বিষয়।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত চলতি অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, টেকসই উন্নয়নের অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়ন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে আমরা আধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি নির্ভর সরঞ্জাম সংযোজন করছি। অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বাহিনীগুলোর আধুনিকায়নে এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশ বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সংযোজনের পাশাপাশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সকে আরো গতিশীল করতে নতুন জ্যামার গাড়িসহ আরো বেশ কিছু সরঞ্জাম কেনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সম্প্রতি অর্থনৈতিক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে। সরঞ্জামের মধ্যে আরো রয়েছে, বহনযোগ্য নতুন ফ্রিকোয়েন্সি জ্যামার, অপারেশন জিপ গাড়ি। এই ফোর্স মূলত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্র ঘোষিত অন্যান্য ভিভিআইপিদের দৈহিক নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। তাদের নিñিদ্র নিরাপত্তা দিতেই এ সব কেনা হচ্ছে। মানবকণ্ঠ