হামিম আহসান: ১১টি সেক্টরে বিভক্ত হয়ে ১৯৭১ সালে দেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়। যার মধ্যে অন্যতম ৬ নম্বর সেক্টর। এটিই একমাত্র সেক্টর যার হেডকোয়ার্টার ছিলো দেশের অভ্যন্তরে বুড়িমারিতে। উত্তরাঞ্চলের রংপুর, দিনাজপুর আর ঠাকুরগাঁও নিয়ে ছিলো এই সেক্টর।
অন্যান্য সকল সেক্টর থেকে কিছুটা আলাদা এই ৬ নম্বর সেক্টরের রংপুর অঞ্চল। কারণ এই অঞ্চলের পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিয়েছিলো মার্চের ৩ তারিখে। এখানকার সাধারণ মানুষ ২৮ মার্চ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট আক্রমণ করে। পরিণামে আধুনিক আস্ত্রের সামনে নির্বিচারে জীবন দিতে হয়েছিলো তাদের।
বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর আর ঠাকুরগাঁও নিয়ে ৬ নম্বর সেক্টর গঠিত হয় ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে। যার কমান্ডার ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট খাদেমুল বাশার। পাঁচটি সাব সেক্টরে বিভক্ত হয়ে এই সেক্টর যুদ্ধ পরিচালনা করে।
সেক্টরটির উল্লেযোগ্য অপারেশন ছিলো রেল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা তিস্তা নদীতে চালানো অভিযান। মুক্তিযোদ্ধারা মনে করেন সেই অপারেশন ছিলো পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করার অন্যতম পদক্ষেপ।
এ সেক্টরটি পাকিস্তান সেনারা নিজেদের দখলে রাখতে চেয়েছিলো বিভিন্ন কারনে। পাকিস্তানি লেখক সাদিক সালেক তার উইটনেস টু সারেন্ডার বইতে এর বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন।
৬ নম্বর সেক্টরের উল্লেখযোগ্য দিক ছিলো নারী মুক্তিযোদ্ধার অংশগ্রহন। কমান্ডার খাদেমুল বাশারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ সেক্টর থেকে উল্লেযোগ্য নারী মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশ নেয়।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর মেজবাহউদ্দীন আহমেদ (বীর বিক্রম) বলেন, যেখানে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরক্ষা অবস্থান ছিলো সেখানেই কমান্ডার বাশার আমাদের নিয়ে যেতেন। তিনি আমাদের বলতেন দেখো তোমাদের বোনরা যুদ্ধ করছে তাহলে তোমরা আরও সাহসের সাথে যুদ্ধ করো না কেন। ছেলেরা তাতে খুবই অনুপ্রাণিত হতো।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এ সেক্টরে ডিসেম্বর পর্যন্ত অংশগ্রহন করেন ১১ হাজার মুক্তিযোদ্ধা। যাদের মধ্যে গেরিলা যোদ্ধা ছিলো ৬ হাজার।
সূত্র: চ্যানেল ২৪
আপনার মতামত লিখুন :