সঞ্চয় বিশ্বাস : অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ব্যাবহার ও দাম দিনদিন বেড়েই চলেছে। অ্যান্ড্রয়েড ফ্ল্যাগশিপ এর দাম তো এতোই বেড়েছে যে ফোনগুলো দামের দিক দিয়ে রীতিমতো অ্যাপল এর আইফোনের চেয়েও এগিয়ে আছে। নতুন ফোনের দাম বেশি হওয়ায় কম দামে ভালো ফোন এর আশায় ব্যহহৃত ফোন কিনছেন অনেকে।
এই পুরোনো ফোন কেনা বেচায় তৎপর হয়ে ওঠছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। অবাধে চলছে চোরাই ফোন কেনা-বেচা। না যেনে চোরাই ফোন কিনে অনেকে পড়ছেন মহা বিপদে। তাই ব্যবহৃত ফোন কিনার আগে থাকতে হবে সতর্ক।
সেকেন্ড হ্যান্ড অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেনার অনেক সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। সেকেন্ড হ্যান্ড অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেনার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত।
বর্তমানে চুরি করা ফোন বিক্রি নিয়ে বেশ সমস্যা বেড়েছে। যেকোনো দোকান হোক বা অনলাইনে পাওয়া কারো কাছ থেকে পুরোনো ফোন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধান থাকা উচিত। চুরির ফোন কেনার ফলে আইনি ব্যবস্থার সম্মুখীন পর্যন্ত হতে পারেন। কোনো ব্যক্তি যদি তার বিক্রি করা ফোন কেনার রশিদ দেখাতে না পারে, তাহলে উক্ত ফোন কেনা থেকে বিরত থাকা উত্তম।
আরো ভালো হয় যদি ফোন কেনার সময় বক্সসহ প্রদান করা হয়। ফোনের বক্সের সাথে ডিভাইসের আইএমইআই কোড মিলিয়ে দেখুন। ফোনের আইএমইআই ও বক্সের আইএমইআই কোড না মিললে সে ক্ষেত্রে উক্ত ফোন কেনা থেকে বিরত থাকুন। যেকোনো ফোনে *#০৬# ডায়াল করে আইএমইআই কোড দেখতে পারবেন।
অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে অনেক সময় ফোন ফিজিক্যাল ড্যামেজ এর শিকার হয়, যার কারণে পুরোনো ফোন কেনার আগে অবশ্যই ফোনে কোনো ধরনের ফিজিক্যাল ড্যামেজ আছে কিনা তা চেক করা জরুরি।
আপনার যদি কোনো পুরোনো ফোন কেনার জন্য পছন্দ হয়ে যায়, তবে ফোনের ব্যাকে কোনো ধরনের স্টিকার বা স্কিন থাকলে তা তুলে ফেলে ফোনে কোনো ধরনের ড্যামেজের প্রমাণ আছে কিনা তা চেক করুন। ফোনের স্ক্রিনে কোনো ধরনের গুরুতর সমস্যা বা স্ক্র্যাচ আছে কিনা তা চেক করতে পারেন টেম্পরারি গ্লাস খুলে ফেলে।
পুরোনো ফোন কেনার সময় অবশ্যই ফোনের সাথে থাকা অরিজিনাল চার্জার ও ডাটা কেবল দাবি করুন। এর ফলে ফোনের সিকিউরিটি সম্পর্কে অধিক নিশ্চিত হওয়া যায়, আবার নতুন চার্জার কিনতে আপনাকে বাড়তি অর্থ খরচ করতে হবেনা। বিক্রেতা যদি চার্জার প্রদান করতে ব্যার্থ হয়, তবে তার দাম নিয়ে নেগোসিয়েশন করতে পারেন।
সাধারণ লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিগুলো কতদিন ভালোভাবে কাজ করবে তা ব্যবহারের উপর নির্ভর করে। ফোনের বয়স যদি এক বছরের অধিক হয়, তবে কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যাটারি পরীক্ষা করা উচিত। যেহেতু অনেক অ্যান্ড্রয়েড ফোনে আইফোনের মত কোনো ব্যাটারি হেলথ অপশন নেই, তাই এখানে আপনাকে নিজেই পরীক্ষা করে নিতে হবে।
ফোন ৫-১০ মিনিট ভালোভাবে পরীক্ষা করুন ও কোনো ধরনের দ্রুত ডিসচার্জ এর বিষয় রয়েছে কিনা তা লক্ষ্য করুন। ফোনের ব্যাটারি বেশি খারাপ হলে তা পরিবর্তন এর প্রয়োজন পড়তে পারে। তবে ব্যাটারি কন্ডিশন ভালো নয় এমন ফোন না কেনা উত্তম।
ব্যবহৃত ফোন কেনার সময় ফোন রিপেয়ার করা হয়েছে কিনা তা জানা বেশ জরুরি। কোনো ফোন যদি অনেকবার রিপেয়ার করা হয়ে থাকে, তাহলে তা কেনা থেকে বিরত থাকা উচিত। ফোন রিপেয়ার হয়েছে কিনা তা বুঝার সহহ উপায় হতে পারে ফোনের ফ্রেম ও ডিসপ্লে।
ফোন যদি আনপ্রফেশনাল টেকনিশিয়ান দ্বারা রিপেয়ার করা হয়ে থাকে, তবে খুব সহজে রিপ্লেস করা গ্লাস দেখতে পাবেন। যেসব ফোন একাধিকবার রিপেয়ার করা হয়েছে, সে সব ফোনগুলো কিনা থেকে দূরে থাকা উত্তম।
সেকেন্ড হ্যান্ড ফোন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই ধৈর্য সহকারে ফোন চেক করতে হবে। ফোন হাতে পাওয়ার পর নিচে উল্লেখিত বিষয়গুলো ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা চেক করুন।
পাওয়া বাটন ও ভলিউম বাটন,
চার্জিং পোর্ট (চার্জ হচ্ছে কিনা চেক করুন),
ব্যাক ও ফ্রন্ট ক্যামেরা,
কলের সময় প্রক্সিমিটি সেন্সর কাজ করে কিনা,
ব্রাইটনেস ফুল করলে ডিসপ্লে ঠিকভাবে কাজ করে কিনা। সম্পাদনা: এন হাসান
আপনার মতামত লিখুন :