সাজিয়া আক্তার: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার নড়াইলে হঠাৎ করেই বাড়ি-ঘরে আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। কারণ উদঘাটিত না-হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামজুড়ে। অনেকে বিষয়টি জিন-ভূতের কাণ্ড মনে করে প্রতিকারে ব্যবস্থা নিলেও সমস্যার সমাধান না-হওয়ায় ভয়ে গ্রাম ছেড়েছেন। তবে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলছেন তারা।
গত রোববার বেলা ১২টার দিকে হঠাৎ গ্রামের মো. ইস্রাফিল খানের ঘরের মধ্যে দাউ দাউ আগুন জ্বলে ওঠে। স্থানীয় লোকজন এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উপস্থিত হয়ে আগুন নেভায়। এর কিছুক্ষণ পর মো. ইবাদত খান ও মো. শওকত খানের বাড়িতেও একইভাবে আগুন জ্বলে উঠতে দেখা যায়। যদিও বড় ক্ষতি হওয়ার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন স্থানীয়রা। গ্রামবাসীর মনে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা সতর্ক জীবনযাপন করছেন।
পরদিন সোমবার দুপুরে ও সন্ধ্যায় মো. কাশেম খান, মো. ইমরান খান, মো. রফিক খান, মো. জাহিদ খানের বাড়ীসহ গোয়ালঘর, খড়ের পালা, পাটকাঠির গাদাতে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। এভাবে গতে এক সপ্তাহে অন্তত ২০টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকাণ্ডে হাতহতের ঘটনা না-ঘটলেও গুজব ছড়িয়ে পড়ে জিন বা ভূত এই কাজ করছে। প্রতিকারের আশায় গত সোমবার রাতে গ্রামবাসী উদ্যোগ নিয়ে খিচুড়ি রান্না করে তোবারক বিতরণ ও দোয়ার ব্যবস্থা করে। দোয়া মাহফিলে হুজুর ১১টি জিন এই কাণ্ড ঘটাচ্ছে বলে দাবি করেন। তার পরামর্শে মিলাদ দিয়ে ফিরনি বিতরণ করার পরেও আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসী দাবি করেন।
এ দিকে এ ধরনের ঘটনার পর ভয়ে অনেকে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে অন্য গ্রামে, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে। এমনকি বাড়ির পাশে খড় ও পাটকাঠির গাদা অনেকে সরিয়ে নিচ্ছেন অন্যত্র। গ্রামের লিয়াকত খান বলেন, দুপুরে হঠাৎ করেই আমার বসতঘরে আগুন ধরে যায়। বাড়ির লোক চিৎকার চেঁচামেচি করলে সবাই এসে আগুন নেভায়। তবে কীভাবে আগুন লাগলো আমরা বুঝতে পারছি না।
গ্রামের শিক্ষক হায়দার আলী খানের বাড়িতে আগুন না-লাগলেও তার বাড়ির পাশের একটি বাড়িসহ কয়েকটি স্থানে আগুন ধরেছে। তিনি জানান, একটি স্থানে আগুন ধরার কয়েক ঘণ্টা পর অন্যস্থানে আগুন লাগছে। আগুন লাগার কারণ বোঝা যাচ্ছে না। গ্রামবাসীর ধারনা এটা জিন-ভূতের কাজ। হায়দার আলী এ ঘটনার আসল কারণ জানতে চান।
কাশিয়ানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ আলম জানান, আগুন রহস্যের কিনারা করতে তদন্তে মাঠে নেমেছে পুলিশ। আগুন দেয়ার ঘটনাকে কেউ জিনের কারসাজি বলে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছে। ক্ষতিগ্রস্তরা থানায় অভিযোগ না দিলেও পুলিশ স্বপ্রনোদিত হয়ে তদন্ত করেছে। তদন্ত শেষে দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এসএ/এসএ
আপনার মতামত লিখুন :