স্পোর্টস ডেস্ক : বিশ্ব ক্রিকেটে দ্বি-স্তর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ধারণা ঘুরেফিরে আসছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। তবে দীর্ঘ আলোচনা-পর্যালোচনার পর এবারও সেই পরিকল্পনা বাস্তব রূপ পেল না। শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়েছে দুই স্তরের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (ডব্লিউটিসি) মডেল।
দুবাইয়ে আজ অনুষ্ঠিত আইসিসির ত্রৈমাসিক সভায় রজার টুইসের নেতৃত্বে গঠিত ওয়ার্কিং গ্রুপ এই সুপারিশ দিয়েছে। --- টি স্পোর্টস
প্রস্তাব ছিল দুটি আলাদা বিভাগে ভাগ করা হবে টেস্ট খেলুড়ে ১২ দেশকে। আইসিসির বর্তমান র্যাঙ্কিং অনুযায়ী, ক্রিকেটের 'বিগ থ্রি' ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের সঙ্গে প্রথম বিভাগে থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউ জিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা।
দ্বিতীয় বিভাগে থাকবে বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। প্রতি চ্যাম্পিয়নশিপের পর পয়েন্ট টেবিলের ভিত্তিতে একটি বা দুটি দল উঠবে প্রথম বিভাগে। আর একটি বা দুটি দল নেমে যাবে দ্বিতীয় বিভাগে।
এ মডেলে আর্থিক সহায়তা কেমন হবে, তা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। ধারণা করা হচ্ছিল- ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় বিভাগের দলগুলোকে অর্থসহায়তা দিতে পারে। কিন্তু আলোচনাগুলো অগ্রগতি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনাটি বাতিল হয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলো এই মডেলের বিরোধিতা করে। তাদের মতে, দ্বিতীয় বিভাগে গেলে বড় দলের সঙ্গে খেলার সুযোগ কমে যাবে, যা রাজস্ব ও প্রতিযোগিতা দুই দিক থেকেই ক্ষতিকর।
অন্যদিকে, প্রমোশন ও রেলিগেশনের ধারণাটিও বিতর্কিত হয়ে ওঠে। বড় তিন দেশ ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া আশঙ্কা প্রকাশ করে অবনমিত হলে আর্থিক ক্ষতি হবে।
দ্বি-স্তর মডেলের বিষয়ে আগস্টে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান রিচার্ড থম্পসন বলেন,
‘আমরা যদি খারাপ সময় পার করি আর ডিভিশন টু-তে নেমে যাই, তাহলে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সঙ্গে খেলতে পারব না, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।‘
বর্তমানে ২০২৫-২০২৭ চক্রে ৯ টি দেশ খেলছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। ২০২৭ সালের জুলাই থেকে শুরু হওয়া নতুন চক্রে আফগানিস্তান, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডকেও যুক্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ফলে টেস্ট খেলুড়ে ১২ টি পূর্ণ দেশকেই দেখা যাবে এই প্রতিযোগিতায়।
সভায় ওয়ানডে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ২০২৩ বিশ্বকাপের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া ওয়ানডে সুপার লিগ পুনরায় চালু করার প্রস্তাব উঠেছে, যা ২০২৮ সাল থেকে কার্যকর হতে পারে। আইসিসির কর্মকর্তারা মনে করছেন, এটি ৫০ ওভারের ক্রিকেটে নতুন উদ্দীপনা আনবে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০ দলের কাঠামো বহাল থাকবে, যদিও কিছু দেশ ভবিষ্যতে দলসংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে, সহযোগী সদস্য দেশগুলো একটি বৈশ্বিক কোয়ালিফায়ার টুর্নামেন্টের প্রস্তাব করেছে, যাতে পূর্ণ সদস্যরাও অংশ নিতে পারে।
বিশ্বজুড়ে টি-১০ জনপ্রিয়তা পেলেও, আইসিসি এখনই এটিকে আনুষ্ঠানিক ফরম্যাট হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রাজি নয়। এসব প্রস্তাব নিয়ে আগামী বছর আইসিসির পরবর্তী সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।