নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনীতি ও ক্রিকেট—দুটি ভিন্ন জগৎ। তবে সম্প্রতি এই দুই অঙ্গনের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর তার ক্রিকেট ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন চলছে নানা আলোচনা, তখন এ বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ক্রিকেট মাঠে এক বিরল উপস্থিতিতে টি-স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দলে সাকিবের অন্তর্ভুক্তি নির্ভর করবে তার খেলার পারফরম্যান্স বা ফর্মের ওপর, রাজনৈতিক পরিচয়ের ওপর নয়।
সম্প্রতি পাকিস্তান-বাংলাদেশ সিরিজের একটি ম্যাচ দেখতে শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এসেছিলেন মির্জা ফখরুল। সেখানেই তিনি ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসা এবং দেশের ক্রিকেট নিয়ে তার ভাবনা তুলে ধরেন।
সাকিব আল হাসানের রাজনৈতিক পরিচয় তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সাকিবের ফর্মের ওপর নির্ভর করবে সেটা এবং তখন সে ক্রিকেটে থাকবে কি না, সেটার ওপর নির্ভর করবে। আমি কখনোই খেলাধুলার মধ্যে রাজনীতিকে আনতে চাইনি এবং বিশ্বাসও করি না। সুতরাং, যে যোগ্য সে অবশ্যই আসবে।”
দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে মাঠে আসার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল জানান, তার মনে পড়ে সর্বশেষ তিনি মাঠে বসে খেলা দেখেছিলেন ২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল এই পাকিস্তানই। প্রায় এক যুগ পর আবারও একই প্রতিপক্ষের খেলা দেখতে মাঠে এলেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের ক্রিকেটীয় পরিচয়ও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমি শুধু ক্রিকেট অনুসরণ করতাম না, আমি নিজে একজন ক্রিকেটার ছিলাম। আমি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সদস্যও ছিলাম।”
পুরোনো দিনের ক্রিকেট এবং বর্তমানের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “এখন ক্রিকেট অনেক বেশি পেশাদার হয়ে গেছে। টেকনিকও অনেক ভালো হয়েছে। তবে এখন সুযোগটাও অনেক বেশি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের ক্রিকেটাররা সেই সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে ভালো করবে।”
দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে তার দলের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বিএনপির প্রয়াত নেতা আরাফাত রহমান কোকোর অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, “আমাদের ক্রিকেটকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আরাফাত রহমান কোকোর একটি বিশাল ভূমিকা আছে। তিনি এটাকে রাজনীতির বাইরে রেখে ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।” তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে তারাও দেশের ক্রিকেটকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করবেন।
বাংলাদেশ দলের প্রিয় খেলোয়াড় কে, এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক কথায় উত্তর দেন, “মুশফিকুর রহিম।”
সবশেষে, বাংলাদেশ এখনো কোনো বৈশ্বিক শিরোপা জিততে না পারার আক্ষেপ থাকলেও তিনি দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, “প্রত্যেক মানুষের মতো আমারও সবচেয়ে বেশি আশা আছে যে বাংলাদেশ ভালো করবে।”