শিরোনাম
◈ ভারী বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম, চার জেলায় সতর্কতা ◈ মধ্যরাতে উত্তাল ঢাবি: শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ (ভিডিও) ◈ গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যা: কেটু মিজান ও স্ত্রীসহ গ্রেফতার ৫ ◈ মালয়েশিয়া যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা, হতে পারে যেসব চুক্তি ◈ যশোরে স্কুল ছাত্রী অপহরনের পর গুমের  অভিযোগ ◈ ট্রাম্পের শুল্কের জবাবে মার্কিন অস্ত্র কেনা স্থগিত করেছে ভারত: রয়টার্স ◈ যশোরে ডিবি হেফাজতে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের দুই সিবিএ নেতা ◈ আমি মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাস করি, হিন্দু -মুসলিমের ব্যবধান বুঝি না : বাবু গয়েশ্বর ◈ ঢাবির ১৮ হলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর ফেসবুকে যা বললেন উমামা ফাতেমা ◈ গণমাধ্যমের স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার প্রতি সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব

প্রকাশিত : ০৮ আগস্ট, ২০২৫, ০৫:২৬ বিকাল
আপডেট : ০৯ আগস্ট, ২০২৫, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : মনিরুল ইসলাম

বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় পার্টি গড়ার ঘোষণা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের

মনিরুল ইসলাম: জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, শনিবার জাতীয় পার্টি সম্মেলন হবে ঐতিহাসিক। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে পার্টির মধ্যে দীর্ঘদিনের যে বিভেদ রয়েছে, সে বিভেদ শেষ করে দিয়ে বৃহত্তর ঐক্য করে পল্লীবন্ধু এরশাদের স্বপ্নের জাতীয় পার্টির নবযাত্রা শুরু হবে। অএই কাউন্সিলে, সারা দেশ থেকে জাতীয় পার্টির কয়েক হাজার কাউন্সিলর ও ডেলিগেটস অংশ নেবেন।

শুক্রবার রাজধানীর গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার আনিস এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার আনিস আরো বলেন, অনেকে বলছেন, এই পার্টি আলাদা হচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, আগামীকাল সম্মেলন হবে, পল্লীবন্ধু এরশাদের হাতে গড়া জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল। যার নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন নাম্বার ১২। আমরা আদালতের আদেশ ও গঠনতন্ত্র মোতাবেক এই কাউন্সিল আয়োজন করেছি। নির্বাচন কমিশনকে আমরা অবহিত করেছি এবং কাউন্সিলে তাদের প্রতিনিধি আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি।

ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ আরে বলেন, এই কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে আমরা জাতীয় পার্টিতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। কাউন্সিলর পরে, আমরা গঠনতন্ত্রের বিতর্কিত ধারা বাতিল করে দেব। কোন একক নেতৃত্বে নয়, জাতীয় পার্টি চলবে যৌথ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুম্নু বলেন, আগামীকাল শনিবার গুলশান ১ এর ইমানুয়েল পার্টি সেন্টারে জাতীয় পার্টির দশম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ জুলাই ঢাকার একটি নিম্ন আদালতের আদেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কার্যক্রমে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। আদালতের এই আদেশের ফলে, পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম এক অনিশ্চয়তা ও স্থবিরতার মুখে পড়ে। এই প্রেক্ষাপটে—দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নির্বাচন কমিশনের সময়সীমার বিধিবিধান এবং জাতীয় পার্টির মতো একটি বৃহৎ ও জনগণনির্ভর রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃত্বশূন্য বা স্থবির থাকা কোনোভাবেই দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার পক্ষে সহায়ক নয়—এই বিবেচনায় দলীয় গঠনতন্ত্রের ২০(২)(খ) ধারা অনুযায়ী যথাযথ সাংগঠনিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এই ধারার ক্ষমতাবলে, ৫ আগস্ট ২০২৫ তারিখে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো—চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে পার্টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম—প্রেসিডিয়াম সভা—আয়োজিত হয়।সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে—দলকে সাংগঠনিক স্থবিরতা থেকে মুক্ত করে গণতন্ত্র, গঠনতন্ত্র এবং নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা রক্ষায় অতিদ্রুত জাতীয় কাউন্সিল আহ্বান করা প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় কাউন্সিল সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা এবং জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা জরুরি। উপরন্তু, দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে যে আশাবাদ, উদ্দীপনা এবং পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা জন্ম নিয়েছে—তাকে বাস্তবায়নে এটি সময়োচিত ও আবশ্যক পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জাতীয় পার্টি আবারও প্রমাণ করেছে। এই দল কেবল ব্যক্তি—কেন্দ্রিক নয়; এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি, একটি আদর্শভিত্তিক গণতান্ত্রিক আন্দোলন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যখন হতাশা, বিভ্রান্তি ও দিশেহারা ভাব বিরাজ করছে—তখন জাতীয় পার্টি দায়িত্বশীলতা, শৃঙ্খলা ও ঐক্যের বার্তা নিয়ে দেশবাসীর সামনে নতুন করে আত্মপ্রকাশ করছে।

তিনি আরো বলেন, আমি আপনাদের জানাতে চাই, নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার সময়সীমা ছিল ৩০ জুন ২০২৫। আমরা সেই নির্দেশনার আলোকে ২৮ জুন কাউন্সিল অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করেছিলাম, কিন্তু উপযুক্ত ভেন্যু না পাওয়ায় তা স্থগিত করতে হয়।

পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনের কাছে দুই মাসের সময় বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করা হয়, যা এখনো প্রক্রিয়াধীন। এই পরিস্থিতিতে গঠনতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, সময়ের স্বল্পতা এবং রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় দ্রুততার সঙ্গে কাউন্সিল আয়োজন করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শুধু একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক, সাহসী সংস্কারক এবং আধুনিক বাংলাদেশের অন্যতম কারিগর। জাতীয় পার্টি তাঁর হাতে গড়া দল,একটি সংগঠিত শক্তি, একটি উন্নয়নদর্শী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। তাঁর শাসনামলে উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন,গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়ন,শিক্ষাক্ষেত্রে বিস্তৃতি, দারিদ্র্য বিমোচনের যুগান্তকারী পদক্ষেপ আজও বাংলাদেশের প্রশাসনিক ও সামাজিক ভিত্তিকে দৃঢ় করে রেখেছে।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি সবসময়ই বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, সমতা ও ন্যায়বিচারের আদর্শ— জাতীয় পার্টি সেই আদর্শকে বুকে ধারণ করেই রাষ্ট্র গঠনে অংশ নিতে চায়। জাতীয় পার্টি আজ তাঁরই স্বপ্নের বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে—নতুন নেতৃত্ব, নতুন গতি এবং জনগণের নতুন প্রত্যাশা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

হাওলাদার বলেন, আমরা এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে আছি, যখন দেশের মানুষ ২০২৪ সালের ছাত্র—জনতার অভ্যুত্থানে যে সাহস, যে সংগ্রাম, যে পরিবর্তনের প্রত্যাশা দেখেছিল— সেই আশাকেই বাস্তবতায় রূপ দিতে জাতীয় পার্টি নতুন অভিযাত্রায় নেমেছে। সংবাদ সম্মেলনে আর উপস্থিত ছিলেন কো— সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা,প্রেসিডিয়াম সদস্য — নাসরিন জাহান রতনা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভুইয়া, আরিফুর রহমান খান, সাবেক সংসদ অধ্যাপক নূরুল ইসলাম মিলন, এডভোকেট জিয়া উল হক মৃধা, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সরদার শাহজাহান, খান মো. ইসরাফিল খোকন, ইয়াকুব হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন আজাদ, শফিকুল ইসলাম শফিক, জামাল রানা, যুগ্ম মহাসচিব মো. বেলাল হোসেন, ফখরুল আহসান শাহজাদা সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রহমান, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফাসহ বিভিন্নস্তরের নেতৃবৃন্দ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়