শিরোনাম
◈ টাকা ফেরাতে আইন, প্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক সমন্বয়ে জোর দিচ্ছে সরকার ◈ দুর্বৃত্তের হামলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে ঢাবি শিক্ষার্থী নিহত ◈ যেসব এলাকায় বুধবার বিদ্যুৎ থাকবে না জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি ◈ ব্যাটারি চালিত রিকশা বন্ধে কড়া বার্তা: তিন রিকশা ভাঙচুর, চালকদের ক্ষতিপূরণ ও বিকল্প আয়ের আশ্বাস ◈ যে কারণে বাংলাদেশে বিমানবন্দরে আটকানো হয়েছিলো কলকাতার অভিনেতা শাশ্বতকে! (ভিডিও) ◈ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি পুরোপুরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার : প্রেস সচিব ◈ আ. লীগের নিবন্ধন বাতিলের পর সম্পদ বাজেয়াপ্তের দাবি উঠেছে, নেতারা এখন কি করবে?  ◈ প‌রি‌স্থি‌তি স্বাভা‌বিক, পাকিস্তান-বাংলাদেশ সিরিজের নতুন সূচি প্রকাশ ◈ ভারত আবার বাড়াবা‌ড়ি কর‌লে আমরা চুপ থাকবো না: শহীদ আফ্রিদি ◈ ভারত শাসিত কাশ্মীরে আবারও বন্দুকযুদ্ধ, নিহত ৩

প্রকাশিত : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৫:০৬ বিকাল
আপডেট : ০৩ মে, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

৬৯ বছর বয়সে ব্যবসা শুরু, ৮ বছরেই ১২ হাজার কোটি রুপির মালিক

ডেস্ক রিপোর্ট : অশোক সুতা ভারতীয় আইটি শিল্পের ম্যাজিক ম্যান হিসাবে বিখ্যাত ছিলেন। ১৯৭৮ সালে তিনি শ্রীরাম রেফ্রিজারেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি যোগদানের পরেই প্রতিষ্ঠানটি টানা চার বছরের লোকসান থেকে ঘুরে দাঁড়ায় এবং পাঁচ বছরের মাথায় প্রথম লাভের মুখ দেখে।

শ্রীরাম রেফ্রিজারশনে সফলতা পেলেও অশোক সুতার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সময় বলা যায় আরও ছয় বছর পরে। ১৯৮৪ সালে তিনি উইপ্রো আইটি অনুশীলন বিভাগের সভাপতি নিযুক্ত হন। যোগদানের ১৫ বছরের মধ্যে উইপ্রোর আয় ২২ কোটি রুপি থেকে ২২০০ কোটি রুপিতে নিয়ে যান তিনি। সেই সঙ্গে ওই কোম্পানিকে বৃহত্তম ভারতীয় মিনিকম্পিউটার কোম্পানিতে পরিণত করেন। এমনকি প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্টেলের তৎকালীন সিইও অ্যান্ডি গ্রোভ অশোককে প্রশংসামূলক একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন।


এদিকে অশোক সুতার পরিকল্পনা ছিল অন্য। ১৯৯৯ সালের আগস্টে তিনি অন্য নয়টি আইটি পেশাদারদের সঙ্গে মাইন্ডট্রি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ছয় বছরে এর আয়কে ৪৫৫ দশমিক ৩৭ কোটি রুপিতে নিয়ে যান। কিন্তু কথায় আছে, সময় কখনো একরকম যায় না। নিজের মেধা-শ্রম দিয়ে যে প্রতিষ্ঠানটিকে এত বড় করে তুলছিলেন সেখানেই বাধে বিপত্তি।

স্থবির রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারাসহ একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণসংক্রান্ত কৌশল নিয়ে অশোক এবং অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। অবশেষে ২০১১ সালের ২৮ জানুয়ারি মাইন্ডট্রি থেকে তাকে পদত্যাগ করতে হয়।


৩৩ বছরের গৌরবময় কর্মজীবনের পরও ৬৯ বছর বয়সী অশোক তার পরবর্তী পদক্ষেপ বা ব্যবসা কী হতে পারে, তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন। তিনি মূলত এমন একটি কোম্পানি তৈরি করতে চেয়েছিলেন, যা তার কর্মচারী ও গ্রাহকদের মধ্যে ‘সুখকে’ অগ্রাধিকার দেয়। শেষমেশ তিনি একটি বড় পদক্ষেপ নেন ও মাইন্ডট্রি থেকে পদত্যাগ করার এক মাসের মাথায় নয় সদস্য নিয়ে আবার একটি কোম্পানি শুরু করেন।

২০১১ সালের এপ্রিলে অশোক সুতা হ্যাপিয়েস্ট মাইন্ডস টেকনোলজিস প্রতিষ্ঠা করেন। অশোকের দৃষ্টিভঙ্গি সহজ ছিল। ক্লাউড কম্পিউটিং, সোশ্যাল মিডিয়ার গতিশীলতা, বিশ্লেষণ ও নিরাপত্তার মতো উদীয়মান প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার ওপর দৃষ্টি দেন তিনি। তার নতুন এই প্রতিষ্ঠান মূলত ভ্রমণ, গণমাধ্যম, নিত্যপণ্য উৎপাদন, খুচরা বাজার, ব্যাংকিং, আর্থিক কর্মকাণ্ড ও বিনিয়োগের মতো খাতগুলোকে লক্ষ্য করে কাজ শুরু করে। অবশেষে ২০১১ সালের ২৯ আগস্ট পুরোপুরি ব্যবসা শুরু করে হ্যাপিয়েস্ট মাইন্ডস টেকনোলজিস।

তিন মাসের মধ্যে অশোকের এই প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারত থেকে গ্রাহক পায়। ভারতের ব্যাঙ্গালুরু, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি ও যুক্তরাজ্যের রিডিংয়ে পাঁচটি অফিস চালু করে হ্যাপিয়েস্ট মাইন্ড। ২০১১ সালের ১৬ নভেম্বর এটি ক্যানান পার্টনার্স ও ইন্টেল ক্যাপিটালের নেতৃত্বে ২২৮ কোটি রুপি সংগ্রহ করে।


অশোক জানতেন, বাজারে প্রতিযোগিতা আছে, কিন্তু তার আগে কেউ এভাবে ‘সংযুক্ত আইটি’তে মনোযোগ দেয়নি। তাই তিনি ‘বোর্ন ডিজিটাল’ পদ্ধতি অবলম্বন করেন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি ও বিশ্লেষণের মিশ্রণে তৈরি তথ্য-প্রযুক্তি পণ্য বিক্রি করেন। সেই সঙ্গে মোঙ্গোডিবি ও মাস্টারকার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক অংশীদারিত্বও বিক্রি করেন।

২০১৮ সাল পর্যন্ত হ্যাপিয়েস্ট মাইন্ডস টেকনোলজিস ৪৬০ কোটি রুপি আয় করে। আজ হ্যাপিয়েস্ট মাইন্ডসের বার্ষিক আয় ১ হাজার ৭১০ কোটি রুপি এবং ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলারের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্নি কোম্পানিতে ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের পরিষেবা দিচ্ছে। বর্তমানে এই কোম্পানির মূল্য দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ২৭৬ কোটি রুপিতে।


অশোক সুতা তার কাজের জন্য ১০০টিরও বেশি পুরস্কার জিতেছেন। সাদামাটা জীবনযাপন করা এই ব্যক্তি ভারতে পারকিনসন ও আলঝেইমার রোগের চিকিৎসা ও গবেষণায় ৩৭৫ কোটি রুপি দান করেছেন।

সুত্র : জাগো নিউজ 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়