শিরোনাম
◈ পাল্টা শুল্ক আরও কমার ইঙ্গিত দিলেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা ◈ গার্ডিয়ানে টিউলিপের সাক্ষাৎকারের ‘ছয়টি উল্লেখযোগ্য বিষয়ে’ বার্গম্যানের অভিমত ◈ পদ্মা-মহানন্দার ভাঙনে হুমকিতে জনপদ, সরানো হচ্ছে নারায়ণপুর ইউপি ভবন, স্থায়ী বাঁধের দাবি ◈ ভাইরাল হওয়াই কাল হল ফুটপাতের সেই বুফে বিক্রেতার! (ভিডিও) ◈ ভাইসা আসি নাই, কথা বলার সময় মুখ সামলায় বলবা : আনোয়ার হোসেন মঞ্জু (ভিডিও) ◈ ফোন হারিয়ে রেলস্টেশনে বিদেশির কান্না ভাইরাল, অভিযোগ পায়নি পুলিশ (ভিডিও) ◈ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সম্মতি, তবে পিআর পদ্ধতিতে ভোটের দাবিতে অটল জামায়াত ◈ রিজার্ভ এখন ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার ◈ মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা, গুরুত্ব পাবে যেসব বিষয় ◈ বাংলাদেশের মেয়েরা যেভা‌বে অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপের মূলপর্বে 

প্রকাশিত : ২৫ জানুয়ারী, ২০২৪, ১২:৪৪ রাত
আপডেট : ২৫ জানুয়ারী, ২০২৪, ১২:৪৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শরীফ থেকে শরীফা গল্প এবং ব্র্যাকের শিক্ষকের যে ভুল ধারণা

দেবদুলাল মুন্না

দেবদুলাল মুন্না: ‘(স্কুলে) পরের ক্লাসে খুশি আপা একজন অতিথিকে সঙ্গে নিয়ে এলেন। তিনি বললেন, ইনি ছোটবেলায় তোমাদের স্কুলে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। আজ এসেছেন, নিজের স্কুলটা দেখতে। সুমন জানতে চাইলো, আপনার নাম কী? তিনি বললেন, আমার নাম শরীফা আকতার।’ পরে ‘শরীফা’ অংশে বলা হয়েছে, ‘শরীফা বললেন, যখন আমি তোমাদের স্কুলে পড়তাম তখন আমার নাম ছিলো শরীফ আহমেদ। আনুচিং অবাক হয়ে বললো, আপনি ছেলে থেকে মেয়ে হলেন কী করে? শরীফা বললেন, আমি তখনও যা ছিলাম এখনও তাই আছি। নামটা কেবল বদলেছি। ওরা শরীফার কথা যেন ঠিকঠাক বুঝতে পারলো না।’ ‘আলোচনা করতে করতে একসময়ে হাস্না বললো, আমার মনে হচ্ছে, আমরা যে মানুষের শারীরিক গঠন দেখেই কাউকে ছেলে বা মেয়ে বলছি, সেটা হয়তো সবার ক্ষেত্রে সত্যি নয়। মামুন বললো, তাই তো! আমরা শরীফার জীবনের গল্প শুনলাম, যিনি দেখতে ছেলেদের মতন, কিন্তু মনে মনে তিনি একজন মেয়ে। তার কাছে এমন একজনের কথা জানলাম, যিনি দেখতে মেয়েদের মতো কিন্তু মনে মনে তিনি ছেলে। খুশি আপা: আমরা চারপাশে দেখে এবং অন্যদের কাছে শুনে জেনেছি যে, শারীরিক গঠন একটা নির্দিষ্ট ধরনের হলে সে ছেলে হয়, অন্য আরেকটা ধরনের হলে সে মানুষটা মেয়ে হয়। ছেলেদের গলার স্বর মোটা, মেয়েদের চিকন। মেয়েরা সাজগোজ করে, তাদের লজ্জা বেশি, তাদের মন নরম হয়। সাধারণত ছেলেরা সাজগোজ করে না, লজ্জা কম পায়, তারা বাইরে যেতে পছন্দ করে। আমরা এগুলোকেই স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নিচ্ছি।
ফাতেমা: কিন্তু এখন বুঝতে পারছি, ছেলেমেয়েদের চেহারা, আচরণ, কাজ বা অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের কোনো স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম নেই। খুশি আপা: ‘ঠিক বলেছো!’ এরমানে এ গল্পটি পড়ে যা বুঝতে পারছি সেটা হলো, শরীফ বা শরীফা ট্রান্সজেন্ডার নন। কেন তিনি ট্র্যানজেন্ডার নন? শিশু জন্মের পর ডাক্তার দেখে বলেন ‘আপনার ছেলেসন্তান’ বা মেয়ে সন্তান’ হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যস্ততা দেখিয়ে বলেন ‘আপনাদের সন্তান ভালো আছে।’ কিন্তু ছেলে বা মেয়ে কোনোটাই বলেন না। কারণ কি? কারণ যে শিশুর অর্গান বোঝা যায় না সেটাকে বলে ইন্টারসেক্স। এক্সটার্ননাল ও ইন্টারন্যাল জেনিট্যাল অর্গান একইরকম বা ভিন্নরকম হয় বলে তাদের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে বোঝা যায় না। ধরুন শরীফের কথা। সে পুরুষ। কিন্তু মনে করে সে  নারী। সে মনে করে  ভুল শরীরে আটকা পড়েছে। এরকম যাদের হয় তাদের আগে বলা হতো বলা হতো জেন্ডার ডিসফোরিয়া। এখন বলা হয় জেন্ডা ইনকংগ্রেনিস। এদের ডিপ্রেসন কাজ করে। সুইসাইডাল হয়। হরমোনালি ও জেনেটিক্যালি জেটিল আচরণ করে। হরমোনাল ট্যানজিশনের প্রাথমিক ধাপ টেস্টোটরন ও এস্ট্রাজন চেঞ্জের মধ্যে কেউ নারী থেকে পুরুষ হয়। কেউ পুরুষ থেকে নারী। সেটা করতে হয় আবার সার্জিক্যাল ট্যানজিশনের মাধ্যমে। জেনেটিক্যালি মডিফায়েড অর্গ্যানিজম বা জিনগতভাবে পরিবর্তিত অবয়ব শরীফ থেকে শরীফার গল্পে এরকম কোনো সার্জিক্যাল ট্যানজিশনের ঘটনা পাই না। বা সে সমকামীও না। 
কিন্তু ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস এ গল্পে সমকামীতা আছে বলে একটি অনুষ্ঠানে কয়েক পৃষ্ঠা ছিড়েছেন। তাকে ট্রান্সজেন্ডার বলেছেন। তিনি ডেমি মাইনর ও  টেসলা মাইনর নামে দুজনের উদাহরণ দিয়ে বক্তৃতায় বলেছেন এরকম ঘটনা লন্ডনে ও স্কটল্যান্ডে ঘটেছে। নিজেদের ওই দুজন মেয়ে ভাবতো এবং মেয়েদের জেলে তাদের রাখা হলে মেয়েদের প্রেগন্যান্ট করা হয়। সেসব ঘটনা নাকি গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি শুনেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো শরীফ বা শরীফা গল্পে রূপান্তরের কোনো ঘটনা নেই। জেন্ডার চেঞ্জের গল্প নেই। যা আছে সেটা একটা মানসিক স্তরের অনুভূতির কথা। জেন্ডার ডিসফোরিয়ায় যারা আক্রান্ত তারা এমন ভাবে। কিন্তু জেন্ডার বা জেনেটিট্যাল অর্গান চেঞ্জ করেনি বলে তার দ্বারা সেক্স করার সুযোগ নেই। একধরনের এটাও ইন্টারসেক্স গোত্রীয়। কিন্তু ট্রান্সজেন্ডার ও হোমো সেক্সুয়াল নয়। আমাদের দেশে থার্ড জেন্ডার বা ‘হিজড়া’দের ব্যাপারটি আইনগতভাবেই স্বীকৃত। তারা এ দেশের নাগরিক। এমনকি অর্গান চেঞ্জ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রী পড়ছেন। আরেকজন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উচ্চপদে চাকরি করছেন। আগামী ৫০ বছরের টাইম ফ্রেমের কথা যদি ভাবি, তাহলে এগুলো এভয়েডের সুযোগ নেই। আপনার আমার যে কারো ঘরেই এমন শিশু জন্মাতে পারে। একজন ট্রান্সজেন্ডার প্রেগনেন্ট হতে পারে এবং সন্তান নিতে সক্ষম, কিন্তু একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ যাকে আমরা হিজরা বলি তিনি এধরনের সেক্সুয়াল একভিটিস এবং সন্তান নিতে সক্ষম নন। আমি ইউরোপে দেখেছি অনেক বাংলাদেশি ‘সিটিজেন’ হওয়ার জন্যে ‘সমকামী’ও সাজে। লেখক: সাংবাদিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়