শিরোনাম
◈ ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যহতি পেলেন ড. ইউনূস ◈ আওয়ামী লীগ এখন লোক ভাগানোর দলে পরিণত হয়েছে: রিজভী ◈ দ্বিতীয় দফায় ২৯টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিলো ইসি   ◈ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট হবে না, জানালেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব চুন্নু ◈ টাইপিংয়ে ভুলের কারণে সংসদে পাস হওয়া শ্রম আইন ফেরত দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি: আইনমন্ত্রী ◈ ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর স্বীকৃতি ◈ সোনার দাম ভরিতে ১৭৫০ টাকা কমিয়েছে বাজুস ◈ নির্বাচন হলে দেশে আবারো বাকশাল ফিরে আসবে: এবি পার্টি ◈ পিসিটি পরিচালনা চুক্তি বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ মানবাধিকার দিবসে বিএনপি-জামায়াত সারাদেশে বিশৃঙ্খলার ষড়যন্ত্র করছে: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত : ২১ নভেম্বর, ২০২৩, ০১:৫৬ রাত
আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২০২৩, ০১:৫৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

না খেলার সঙ্গে রাজনীতি জড়াবেন না 

অজয় দাশগুপ্ত

অজয় দাশগুপ্ত: সবাই জানেন, শুরু থেকে আমি ভারতের ম্যাচ জয়ের আগ্রাসী মনোভাব পছন্দ করিনি। আমরা ষাট পেরুনো মানুষ। ক্রিকেটে এমন বিশ্বকাপের শুরু জানা আছে আমাদের। ভারতীয় বন্ধুরা যতো রাগ করেছিলেন ততো অবাক হচ্ছিলাম। ক্রিকেট যখনই কোনো দল বা দেশের জোশ, উত্তেজনা বা শক্তির হাতিয়ার হয়েছে তখনই তাদের পতন শুরু হয়েছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দুর্ধর্ষ ক্রিকেট দল ইতিহাসে নেই। স্যার উপাধি প্রাপ্ত গ্যারী সোবার্স, মারকুটে ভিভ রিচার্ডস, ডেসমণ্ড হেইন্স, কালীচরণরা যখনই পেশীর জোর ও ওভার কনফিডেন্সে ভুগতে শুরু করেছিলেন তখনই আন্ডার ডগ কপিল দেবের ভারতের কাছে তিনবার বিশ্ব চ্যম্পিয়ন হবার সুযোগ হারিয়ে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। 

পাকিস্তানও তাই। জহির আব্বাস, আসিফ ইকবালদের ক্লাসিকস সময়ের পর তার ওপর ভর করলো ঈমানী জোশ। ইমরান খান, ওয়াসিম আকরামরা জয় এনে দিলেও পাকিরা ধরে নিলো ক্রিকেট মানে মাঠের বাইরে ছক্কা হাঁকানো। শুক্কুরবারে ভারতকে হারানোর নাম ক্রিকেট। আজ পাকিস্তানের ক্রিকেট ভালো খেলোয়াড় থাকার পরও তলানীতে। আইপিএল দানব ও জুয়া ঢোকার পর ভারতের ক্রিকেট কোন পথে এবার হয়তো তারা বুঝতে পারবেন। আর একটা কথা আমি সাতাশ বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করি। আমি, দীপা, আমার একমাত্র ছেলে অর্কÑ আমরা জেনে, বুঝে ইমিগ্রেশন নিয়ে স্থায়ী অভিবাসী হয়ে এসে নাগরিকত্ব নিয়েছি। জন্মভূমি বাংলাদেশের পর এই দেশকে সমর্থন করাটা আমার অধিকার। নৈতিক দায়িত্ব। তা ছাড়া এদেশে থাকতে থাকতে এর প্রতি ভালোবাসা বেড়েছে। প্রেমও বেড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা কম। কিন্তু দুনিয়ার সব খেলায় তার অবস্থান শক্ত। এর মূল কারণ পেশাদারিত্ব। এই যে বিশ্বকাপ জয় কোথাও একটা বাজি পোড়ায়নি কেউ। হর্ণ বাজিয়ে আনন্দ দেখিনি। সবাই খুশি, সবাই জানে। কিন্তু সবকিছু নিয়মের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী আলবেনিজীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল পাবলিক হলি ডে ঘোষণা করা হবে কি না? সযত্নে সে প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেছেন তিনি। 
অন্যদিকে দেশের খেলায় কোনো স্থিরতা নেই। দলে শৃঙ্খলা নেই। বোর্ডের মাথার ওপর জগদ্দল পাথর একনায়ক। দর্শকেরা মারমুখী। সেই দেশের জনগণ গত রাতে না কি উৎসব পালন করেছিল যারা বাজি ফুটিয়েছে যারা মিছিল করেছে যারা মিষ্টি বিতরণ করেছে তাদের অনেকে বাংপাকি ডাকছেন। আমি এমনটা মনে করি না। বাং পাকি'র দরকার কোথায়? এখন তো এটা স্পষ্ট একাত্তর সালের একটি পাকিস্তান ভেঙে এখন দুটি পাকিস্তান হয়ে গিয়েছে। এ কথা আমার নয়, এ কথা  সুলেখক আহমদ ছফার। 

যে তারুণ্য বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে নিজেকে স্বাধীন বলে তারা জানে না মুক্তিযুদ্ধ না হলে বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড় মূল দলে চান্স পেতো না। মাঠে পানি বহন করা ছাড়া কোনো কাজ থাকতো না খেলোয়াড়দের। যারা ক্রিকেট বোঝে না তাদের এই আস্ফালনের মূল কারণ সাম্প্রদায়িকতা। ভারত না হয়ে অন্য কোনো দেশ হলে এসব উন্মাদনা হতো না। সুযোগসন্ধানী মুখোশধারীরা ফারাক্কা, তিস্তা, ফেলানী যাই বলুক না কেন, মূলত এগুলো ধর্মীয় বিদ্বেষ। মিয়ানমারের সাথে যুদ্ধংদেহী বাস্তবতা তুলে দিয়েছে রোহিঙ্গা  শরণার্থীর বোঝা তারপরও এই উন্মাদনা দেখবেন না। 
না খেলার সাথে রাজনীতি জড়াবেন না কিন্তু। সুশীল বামদের এই মহান বাক্যের লেজ কোথায় জানেন? তাদের মুখে প্রগতি, অন্তরে বিষ। তারা সুযোগমতো চীন, রাশিয়া, পাকিদের দোস্ত। ভারতের কাছে তাদের চাওয়া আছে, দেওয়া নেই। তাদের চাওয়া ভারত অহিন্দু রাষ্ট্রপতি বানাবে, দলনায়ক বানাবে, কলকাতার মেয়র বানাবে, নায়ক বানাবে আর তারা চাপরাশীও হিন্দু রাখবেন না। ক্রিকেট নয়, ১৯ নভেম্বর বিতরণকৃত মিষ্টির নাম ছিল বিষ। ভারত বিরোধিতার আড়ালে সাম্প্রদায়িক বিষ। যে সব সংখ্যালঘু ও বাঙালি মুসলমান ভয় পেয়েছেন মুষড়ে পড়েছেন তাদের বলি, চিন্তা করবেন না। বাজিতে হাত পোড়া, বিরিয়ানি খেয়ে পেটের অসুখে ভোগা, এমন কি যার কিছু হয়নি তারও ভিসার আবেদন জমা। ইন্ডিয়ার টিকেট কাটা আছে। অস্ট্রেলিয়ায় উপমহাদেশের মানুষজন ছাড়া এসব কেউ জানে না, বোঝেও না। অজিরা জানে, সমর্থনও একধরনের শিল্প। তাতে আনন্দ থাকে বিদ্বেষ থাকে না। তাই তো আমরা ছয়বার শিরোপা মুকুট মাথায় রাখতে পারি। লেখক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়