শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ২৫ মার্চ, ২০২৩, ১২:১০ রাত
আপডেট : ২৫ মার্চ, ২০২৩, ১২:১০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শামীম সিকদার, হে বন্ধু বিদায়

তসলিমা নাসরিন

তসলিমা নাসরিন: শামীম সিকদার অসাধারণ মহিলা। ছোটবেলায় সাইকেল চালাতেন। কোনও এক ছেলে তাঁর ওড়না টান মেরে নিয়ে গিয়েছিলো। এরপর থেকে আর ওড়না পরেননি, সালোয়ার কামিজও না। প্যান্ট-শার্ট পরতেন। কে কী বললো না বললো, তার কোনও দিন ধার ধারেননি। সিগারেট খেতেন। তাও আড়ালে নয়। সবার সামনে। আমি যদি ডাকাবুকো মেয়ে হই, আমার চেয়ে শত গুণ বেশি ডাকাবুকো শামীম সিকদার। উনি কিন্তু আমার আগের জেনারেশনের মেয়ে, যখন সমাজ আরও রক্ষণশীল ছিল। ঢাকার আর্ট কলেজে পড়াশোনা করেছেন। ভাস্কর্য ডিপার্টমেন্টের মাস্টার হয়েছেন। কিছু পুরুষ-মাস্টার তাঁকে আর্ট কলেজ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করেছিলেন একসময়। শামীম সিকদার মোটেও দমে যাননি। মাথা উঁচু করে ফাইট করেছেন।

ফাইটার ছিলেন। প্রয়োজনে পকেটে পিস্তল নিয়ে চলতেন। ওই পুরুষ-মাস্টারদের কিন্তু নাম যশ হয়নি। হয়েছে শামীম সিকদারের। ঢাকা শহরে তাঁর বিশাল বিশাল ভাস্কর্য শোভা পাচ্ছে ‘স্বোপার্জিত স্বাধীনতা’, ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’ ইত্যাদি। কৈশোরে শামীম সিকদারের জীবন পড়ে চমকিত হতাম। সেই শামীম সিকদার আমার বিরুদ্ধে মৌলবাদীদের ফতোয়া ঘোষণা হওয়ার পর ঢাকার রাস্তায় আমার পক্ষে ব্যানার নিয়ে হেঁটেছেন। তার চেয়ে বড় কথা, নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাকে তিনি আশ্রয় দিয়েছিলেন নিজের বাড়িতে। যখন আমার বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল, সেই সময়। সরকার আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল আর লক্ষ লক্ষ মৌলবাদী আমাকে হত্যা করার জন্য সারা দেশে মিছিল মিটিং করেছিল। সেই দুঃসময়ে যখন বন্ধুরাই সরে গিয়েছিল, এগিয়ে এসেছিলেন তিনি।

শুধু শুধু বসে বসে দুশ্চিন্তা করার বদলে আমাকে কাগজ কলম দিয়েছেন লেখার জন্য। ইজেল, ক্যানভাস আর রং তুলি দিয়েছিলেন ছবি আঁকার জন্য। অনেক রাত পর্যন্ত আমার সঙ্গে কথা বলতেন। দু’মাস অনেকের বাড়িতে আমাকে লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল। সবাই একটা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন, ক’দিন থাকতে পারব তার। শামীম সিকদার কিন্তু কোনও সময় বেঁধে দেননি। কাউকে কোনও দিন ভয় পাননি তিনি। পকেটে অস্ত্র নিয়ে কোর্টেও চলে যেতে চেয়েছিলেন যেদিন জামিনের জন্য আমার যাওয়ার কথা ছিল। এই এক জন মানুষ আমার জীবনে আমি দেখেছি, ‘পাছে লোকে কিছু বলে’-র ভয় যাঁর কোনও দিন ছিল না। মাথা উঁচু করে চিরকাল চলেছেন। আমাকেও চলতে শিখিয়েছেন। কে বলেছে তিনি আর নেই। আমার হৃদয়ে আছেন তিনি। ফেসবুক থেকে 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়