শিরোনাম
◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ২১ মার্চ, ২০২৩, ০১:৩৮ রাত
আপডেট : ২১ মার্চ, ২০২৩, ০১:৩৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হিংসার কাঠ গিলে কয়লা প্রসব

আনোয়ার হক:

আনোয়ার হক: হিংসার কাঠ গিলে কয়লা প্রসব করতে করতে জীবন কুড়িয়ে পেয়েছি আমি। লেখাপড়া শেষ হতে না হতেই দুঃসাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ঢাকায় তৎকালীন সবচেয়ে দামী বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল শাপলা চত্তরের অদূরে তিন রুমের ওয়েল ডেকোরেটেড অফিস স্যুট ভাড়া নিয়ে ব্যবসায় শুরু করি। 

অল্প কিছু দিনের মধ্যেই ব্যাংক পাড়ায় প্রিন্টিং এন্ড ষ্টেশনারী সাপ্লায়ার হিসাবে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিলাম। সরকারি দলের রাজনৈতিক আশির্বাদপুষ্ট সাপ্লায়ার এবং সিবিএ নেতাদের সিন্ডিকেটের গায়ে হিংসার আগুন লেগে গেলো। হিংসার সেই  আগুন আমার অন্তরাঙ্গ জ্বালিয়ে অঙ্গার করে দিল। বিনাকারণে বিশাল অংকের বিল ঝুলে রইলো অনির্দিষ্টকালের জন্য! অলাভজনক প্রকাশনা বিভাগ বন্ধ করে দিতে হলো। টেন্ডার জিতে ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েও সাপ্লাই সম্পন্ন করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়লো। অফিস ভাড়া, কর্মী বাহিনীর বেতন, বিদ্যুৎ, টেলিফোন বিলের বোঝা বাড়তে থাকলো। 

ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিতি পাওয়া আমি টোকাইদের মতো হেঁটে হেঁটে বেসরকারি অফিসের দ্বারে দ্বারে ঘুরে দিন কাটাই।  সেই দুঃসময়ে অনেকেই টিপ্পনী কেটে আমাকে বলতেন, "গন কেস"! কারণ ব্যবসায় প্রশাসনের সার্টিফিকেট পকেটে নিয়েও ব্যবসাতে আমি সুপার ফ্লপড্। বিসিএস দিয়ে রাখিনি বলে আমলা হওয়ার দরজাও বন্ধ।  আইন পাশ করে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্তও হইনি যে কালো কোট গায়ে চাপিয়ে টুপাইস কামাতে পারবো।

আত্মীয় স্বজনের অভিযোগ, আরে বাবা, ব্যবসায়ই যদি করবি তো পারিবারিক পাটের ব্যবসায় যোগ না দিয়ে ঢাকায় ফুটানির ব্যবসায় নামতে গেলি কার বুদ্ধিতে? অবস্থা এমন যে আমার সব শেষ, আমি ফিনিশড, ডিসমিস কেস; কিছুই হতে পারবো না আর। কিন্তু কেবল আমিই জানতাম অফুরন্ত সম্ভাবনা ঘুরঘুর করছে আমার চারপাশে। 

ব্রেথিং স্পেস দেয়ার জন্য নিজের কাছ থেকে নিজেই স্বল্পমেয়াদী ছুটি নিলাম, ফুলটাইম টোকাই হয়ে গেলাম আমি। কতো যে দিন গেছে সকালে না খেয়ে দুপুরে এক সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আত্মীয়ের গেস্ট টোকেনে তাদের কেন্টিনে দুপুরের খাবার খেয়ে দিন পার করে দিয়েছি!

হঠাৎ একদিন ৯০ ডিগ্রি এঙ্গেলের টার্নিং পয়েন্টের দেখা পেয়ে অবাক হলাম না এতোটুকুনও। একজন অবসরপ্রাপ্ত আমলা, দুইজন ব্যবসায়ী মিলে আরও এমন একজনকে খুঁজছেন যিনি সম্প্রতিককালে বিকাশমান ব্যবসা এগিয়ে নিতে সক্ষম। আমার এক বন্ধু-ভাই আমার সন্ধান দিয়েছেন তাদের। এক সাক্ষাতকারেই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে গেল। সেই সময় শতভাগ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প সবেমাত্র আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে।

শুরু হলো ঘাম ঝরা দিন আর নির্ঘুম রাত পার করে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর অবিরাম যুদ্ধ। পাওয়া না পাওয়ার হিসাব মিলানোর ভার সিএ কোম্পানির কাঁধে চাপিয়ে নির্দ্বিধায় বলতে পারি সেই যুদ্ধে জয়লাভ করেছি।

কি হতে পেরেছি চুল চেরা বিশ্লেষণ করি না, কি কি হতে পারতাম সেসব ভেবেও সময়ের অপচয় করা পছন্দ নয় আমার। যা হয়েছি বা হতে পেরেছি তাতেই সন্তুষ্ট আমি। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়