শিরোনাম
◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ গাজীপুরের টঙ্গি বাজারে আলুর গুদামে আগুন ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ দুই এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপদাহ আরো তীব্র হতে পারে  ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৯ মার্চ, ২০২৩, ০১:২৮ রাত
আপডেট : ১৯ মার্চ, ২০২৩, ০১:২৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সাকিব আল হাসান, দুবাইয়ের একটি জুয়েলার্স এবং একজন আরাভ খান

কাকন রেজা 

কাকন রেজা: দুবাইয়ের আরাভ খান, যাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে বাংলাদেশে পুলিশ খুনের অভিযুক্ত হিসেবে, তার জুয়েলার্স উদ্বোধনে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান  গিয়েছেন। এ নিয়ে সাকিব আল হাসানকে ধুয়ে দেওয়া হচ্ছে সামাজিকমাধ্যমে। যেন সাকিব আল হাসান দেশে গজব আমদানি করতে দুবাই গেছেন। কিন্তু আরাভ খান নামের এই অভিযুক্ত পুলিশ খুনের দায় নিয়ে দেশ থেকে কীভাবে রপ্তানি হলেন, কারা করলেন এ নিয়ে আমাদের ফেসবুকার ও রামবুদ্ধিজীবীদের কোনো বিকার নেই। 

আরাভ খান নাম বদলে দুবাইয়ে বিশাল ব্যবসায়ী বনে গেলেন, কীভাবে একজন খুনের দায়ে অভিযুক্ত এত অল্প দিনে এত বিপুল পরিমাণ টাকা ও সম্পদের মালিক হলেন তা নিয়ে কোনো কথা নেই। দোষ যত সাকিবের। আরাভ খান শুধু খুনের দায়ে অভিযুক্ত নন। তিনি খুনের ঘটনার পর ভারতে যান, সেখানে বিয়ে করেন। থাকেন রাজার হালে। সেখানেই তার নাম-পরিচয় পরিবর্তিত হয়। তিনি হন আরাভ খান। এতসব কীভাবে এত সহজে সম্ভব হলো, এসব নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। ভারত থেকে দুবাই গেলেন, হয়ে গেলেন টাকার কুমির। এমন গল্প শুধু রূপকথায় সম্ভব ছিলো এতদিন। কিন্তু সকল দেশের সেরা প্রমাণ করতে রূপকথাকে সত্যিতে পরিণত করেছেন আরাভ খান। রূপকথার সেই জাদুর কাঠি, ভূতের রাজা যা বর হিসেবে দিয়েছিলো তা সম্ভবত দেশ থেকেই সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই জাদুর কাঠির ছোঁয়তেই তিনি খুনের দায়ে অভিযুক্ত থেকে দুবাইয়ের শেখ হয়ে উঠেছেন। সেই ভূতের রাজা আর জাদুর কাঠি নিয়ে কোনো কথা নেই, সব দোষ সাকিব আল হাসানের। 

আরে ভাই, সাকিব আল হাসান কি কোনো মাফিয়া? ধরেন দাউদ ইব্রাহিম নায়ক সালমান খানকে দাওয়াত দিয়েছেন, কী করবেন সালমান খান? সালমানের ঘাড়ে কটা মাথা? এই প্রশ্নটা আমাদের বুদ্ধিজীবীদের মাথায় আসেনি। অথচ আসা উচিত ছিলো। কারণ তারাও সাকিব আল হাসানকে ধুয়ে দিচ্ছেন, কারণ সাকিব আল হাসানের দিক থেকে প্রতিঘাত আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তার ক্ষমতা ক্ষোভ প্রকাশ পর্যন্তই। সম্ভবত সেজন্যই সাকিব আল হাসান সহজ টার্গেট। তাকে নিয়ে ফেসবুকিং করাটা নিরাপদ। আর ফেসবুকিং করতে বেশি চিন্তারও প্রয়োজন হয় না। একটু রঙঢঙে লিখে দিলেই হলো। হিট। পেছনে-সামনে তাকানোর দরকার নেই। 

সাকিব আল হাসান একজন ক্রিকেটার। আমাদের দেশের নাম যিনি সারা বিশ্বে ছড়িয়েছেন। প্রচুর টাকা ক্রিকেটে। তিনি সেরা হিসেবে দুহাতে কামিয়েছেন। উনি কোনো মাফিয়া নন, তিনি তার প্রতিভাকে পুঁজি করে টাকা উপার্জন করেছেন। এই টাকায় তিনি ব্যবসা করছেন। কারণ তিনি জানেন, তার ফর্ম এখনি পড়তির দিকে, ফর্ম পড়ে গেলে তার দিকে কেউ ফিরেও তাকাবে না। তাই তিনি উপার্জিত টাকা ধরে রাখা এবং বাড়ানোর উপায় খুঁজছেন। এটাতেও দোষ খুঁজে বেড়ান প্রতিমুহূর্তে বুদ্ধিজীবী ফেসবুকারগণ। নাকি ‘ফেস বোকা’গণ বলবো? সাকিব আল হাসান কোনো সাধু-সন্ত নন। তিনি কোনো পন্থীও নন। তিনি চলতি হাওয়ার পন্থী। বেশিরভাগ মানুষ যেমন। মূলত ভালোমন্দ মিশিয়ে খুব সাধারণ একজন মানুষ সাকিব। বুদ্ধিজীবীও নন। ফেসবুকার হতে পারেন, ফেসবুকার হতে গেলে আগেই বলেছি বুদ্ধিজীবী হতে হয় না। সাকিব আল হাসানের বাড়তি গুণটা হলো তিনি একজন ভালো ক্রিকেট খেলোয়ার। নির্মলেন্দু গুণ যেমন একজন ভালো কবি, তেমনি। 
সুতরাং সাকিব আল হাসানের দুবাই যাওয়া নিয়ে নয়, আরাভ খানকে নিয়ে বলুন। কিন্তু সত্যি বলতে গেলে আরাভ খান দাবার একটা ঘুঁটিমাত্র। সামান্য সৈনিক। তারচেয়ে বরং পেছনের রাজা উজিরদের নিয়ে কথা বলুন। তাদের সামনে আনার চেষ্টা করুন। তবেই যদি কিছু হয়। 
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়