শিরোনাম
◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে ◈ সেনা গোয়েন্দাসংস্থার বিরুদ্ধে ৬ পাক বিচারপতির ভয় দেখানোর অভিযোগ ◈ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিরা সাদা পতাকা উড়াচ্ছিল, তাদের বূলডোজার দিয়ে মাটি চাপা দিল ইসরায়েলী সেনারা

প্রকাশিত : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০২:১৭ রাত
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০২:১৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমার চোখ বেয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছিলো

আমিনুল ইসলাম

আমিনুল ইসলাম: আমার চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছিলো। রাত তখন প্রায় ১২টা। ৬ ফেব্রুয়ারি রাতের ঘটনা। আমি ঢাকা শহরের একটা ফুট-ওভারব্রিজ দিয়ে হাঁটছি। হঠাৎ দেখি ব্রিজের উপর কেউ একজন ছোট একটা চাদর গায়ে জড়িয়ে শুয়ে আছে। মাথা ঢাকার চেষ্টা করছে। কিন্তু চাদরটা এতো ছোট, মাথা পুরো ঢাকা যাচ্ছে না। মাঝরাত। শীত বাড়ছে। আমি কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি এখানে শুয়ে আছেন কেন? আপনার কি অন্য কোথাও থাকার জায়গা নেই? চাদরের ভেতর থেকে মাথা বের করে তিনি বললেন, থাকলে কী এখানে শুয়ে থাকতাম নাকি! 

মাঝ বয়স পার হয়ে গিয়েছে। শরীরের চামড়া ঢিলে হতে শুরু করেছে। চোখের পাশ দিয়ে চামড়াগুলো কুঁচকে গিয়েছে। আমি বেশ সংকোচের সাথে বললাম, আমি যদি আপনাকে কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করি, আপনি কি নেবেন? এবার তিনি উঠে বসলেন। টাকাটাও নিলেন। আমার মাথায় হাত রাখলেন। এরপর আমি আবার হাঁটতে শুরু করলাম। ফেরার সময় আমার নিজেকে ভয়ানক অপরাধী মনে হচ্ছিলো। বারবার মনে হচ্ছিলো, আমি তো দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছি। আর এই মানুষটার থাকার জায়গাটুকুু পর্যন্ত নেই। যে পথে মানুষ হাঁটে। এই শীতের রাতে হালকা একটা চাদর গায়ে দিয়ে তাকে শুয়ে থাকতে হচ্ছে। আচ্ছা, এই মানুষটার অপরাধটা কী? কেন তার একটা থাকার জায়গাও হলো না? আমি জানি, যারা ঢাকা শহরে নিয়মিত থাকেন, তাদের কাছে হয়তো এটি কোনো ব্যাপার না। কিন্তু আমার বড্ড বেশিই খারাপ লেগেছে। আমি জানি এই মানুষটার অপরাধ কী। তার অপরাধ হচ্ছে, তিনি বাংলাদেশে জন্মেছেন। আপনারা না ঘরহীন মানুষদের আস্ত বাড়ি দিয়েছেন? তাহলে এই মানুষগুলোর কেন একটা জায়গা হলো না? বাড়ি দিয়েছেন ভালো কথা। কিন্তু এভাবে জমিসহ আস্ত বাড়ি কেন দিতে হলো? 

আপনাদের কর্তা-ব্যক্তিরা যারা এইসব নিয়ে কাজ করে, তাদের মাথায় কি এই সামান্য বিষয়টুকু মাথায় আসে নাÑ এমন ভাসমান মানুষগুলোর জন্য দরকার বড় বড় হোস্টেল টাইপ উঁচু দালান। যেখানে তাদের আস্ত বাড়ির দরকার নেই। একটা বেড হলেই চলবে। শীতের রাতে কিংবা বর্ষায় যেন গিয়ে ঘুমাতে পারে। আপনারা কি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মডেলগুলো দেখেন না? বাংলাদেশের মতো এত ছোট একটা দেশে লাখো মানুষ ঘর ছাড়া আছে। এটা কি কারো পক্ষে সম্ভবÑ সবাইকে জমি সহ আস্ত বাড়ি দেয়া? উঁচু উঁচু দশ-বিশ তলা বিল্ডিং করে তাদের একটা বেড দিন থাকার। এরপর তারা নিজেদের খাবার ব্যবস্থা নিজেরা করুক। সমস্যা তো নেই। তাহলে কেন আপনারা করেন না এইসব? কারণ আপনাদের কর্তা-ব্যক্তিরা বড় বড় প্রজেক্ট করে কোটি কোটি টাকা মেরে দিয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় বেগম পাড়া বানাচ্ছে। আর এই মানুষগুলো শীতের রাতে রাস্তায় থাকছে। আপনাদের বুক কী এতোটুকুু কেঁপে উঠে না? আপনারা না সংবিধানের কথা বলেন। দিনে-রাতে সংবিধান কপচান। সেই সংবিধানে তো সাম্যের কথা বলা আছে। এ কেমন সাম্য আপনাদের? আপনারা দেশে মার্সিডিজ বেঞ্জ চালান। বিদেশে প্রাসাদ বানান। আর এই মানুষগুলো রাস্তায় পড়ে কষ্ট পেয়ে এক জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে। কয় টাকা লাগে এমন বড় বড় কিছু হোস্টেল কিংবা ডরমেটরি বানাতে? প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা আপনাদের কর্তারা পাচার করছে। এর কিছু টাকা হলেই তো এই মানুষগুলোর জীবন বেঁচে যেত। মনে রাখবেন- আর কেউ না হোক, উপরে একজন সৃষ্টিকর্তা আছে। তিনি সব দেখছেন। ফেসবুক থেকে 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়