শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০২:১৬ রাত
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০২:১৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হিরো আলম এবং ভদ্রলোকের সংজ্ঞা 

কাকন রেজা

কাকন রেজা: ভদ্রলোকের সংজ্ঞা পাল্টানোর সময় এসেছে। হিরো আলম বলেছেন, কিছু ভদ্রলোক তাকে স্যার ডাকতে পারবে না বলে নির্বাচনে হারানো হয়েছে। তাকে হারানো হয়েছে কিনা সে প্রশ্নটা রাজনৈতিক, সে প্রশ্নে যাচ্ছি না। কিন্তু এবার সত্যি ভদ্রলোকের সংজ্ঞা পাল্টানোর সময় এসেছে। কারা এই ভদ্রলোক, যারা দেশের টাকা চুরি করে, পাচার করে বিদেশে সেকেন্ডে হোম বানায়? দামি গাড়িতে চড়ে, বাড়িতে থাকে যার সমস্তই চুরির টাকায়? ঘুষের টাকায় যারা আয়েশী জীবন কাটায়, হিল্লি-দিল্লি ঘুরে বেড়ায়? 
শিক্ষিত মানুষ, অধ্যাপক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিক, অভিনেতা, গাইয়ে, নাচিয়েকে ভদ্রলোক? অনেকে বলবেন, আমি অসৎ নই, আমি ঘুষ খাই না, টাকা পাচার করি না, চুরি-চামারি করি না, আমি ভদ্রলোক। না, আপনি এসব না করলেও বালিতে মুখ গুজে থাকেন। যেখানে প্রচণ্ড প্রতিবাদ প্রয়োজন সেখানে মৃদুস্বরে হলেও অন্তত ‘না’ বলেন না। অতএব আপনি সেই চোরদের অনুগামী। আপনাকে ভদ্রলোক বলা ভদ্র শব্দটির সাথে চরম অবিচার। 
হিরো আলম আর যাই করুক, বিদেশে টাকা পাচার করছেন না, বরং বিদেশ থেকে টাকা উপার্জন করছেন। ডলার আসছে দেশে তার কাজের মাধ্যমে সেটা যতো সামান্যই হোক। সোকল্ড ভদ্রলোকদের মতন ডলার পাচার করছেন না। ইউটিউব তাকে টাকা দিচ্ছে সেটা অবশ্যই ডলারে। আমাদের সমুদ্রসম ডলার সংকটের সামান্য হলেও সমাধান হিরো আলম। তাই হিরো আলম বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের সম্পদ, আর সেই ‘ভদ্রলোকগণ’ অবশ্যই দায়। প্রতিবাদ করা নাগরিক কর্তব্য। প্রতিটি অন্যায়ের প্রতিবাদ নিজ অবস্থান থেকে, নিজ সাধ্যানুযায়ী করাটাই একজন নাগরিকের প্রধানতম কাজ। একটা রাষ্ট্র যে উদ্দেশে গঠিত হয়, প্রতিবাদ না করাটা সেই উদ্দেশ্যের খেলাপ। প্রান্তজন হয়েও হিরো আলম সেই কাজটা করছেন, সুতরাং নাগরিক হিসেবে আমার আপনার চেয়ে অনেক যোগ্য তিনি। 
সরকারবিরোধী অনেকে বলবেন, হিরো আলম তো এই সরকারের অধীনে নির্বাচন করেছেন, নির্বাচনকে বৈধতা দিয়েছেন। তাদের বলি, হিরো আলম কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি নন, বুদ্ধিজীবী নন, আগেই বলেছি তিনি এক প্রান্তজন। তার কোনো রাজনীতি নেই, সুতরাং তার কাছ থেকে রাজনীতি আশা করাটা বৃথা। কিন্তু তার কাছে থেকে যতটুকু আশা করা যায় তারচেয়ে অনেক বেশি করেছেন তিনি। তিনি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পেরেছেন, যা বিরোধী রাজনীতির কাজে লাগবে। বলা যাবে, এক হিরো আলমের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেই হিমশিম খেতে হয়েছে অ্যাস্টাব্লিশমেন্টকে। নানা কৌশল খাটাতে হয়েছে। তারা বলতে পারবেন, হিরো আলম দেখিয়ে দিয়েছেন, তারা কতটা অজনপ্রিয়। অরাজনৈতিক হিরো আলমের সফলতাটা এখানেই। 
হিরো আলম যখন বলেন, ‘আমাকে প্রশ্ন করেন শুধু, অন্য যারা অভিনেতা, গাইয়ে, নাচিয়ে এমপি হন তাদের প্রশ্ন করেন না কেন, তারা যোগ্য কিনা?’ হিরো আলমের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সক্ষমতা সত্যি কি কারো আছে? রাজনৈতিক প্রজ্ঞার প্রশ্নে সত্যিই এর উত্তর নেই। আমাদের কাছে হাল সময়ের অনেক কিছুরই উত্তর নেই, বিপরীতে রয়েছে প্রশ্নের পাহাড়। 
শেষে বলি, গত ১ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হিরো আলম বিষয়ে একটি লেখা শুরু করেছিলাম, ‘মানুষ কতোটা অসহায় হলে হিরো আলমে মুক্তি খোঁজে’ এই বাক্য দিয়ে। বগুড়ার নির্বাচনে তাই দেখা গেলো। কাহালু-নন্দীগ্রামের নির্বাচন অন্তত সে কথাই বলে। একেবারে সমানে সমান লড়েছেন হিরো আলম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। একটা সংগঠিত শক্তির বিরুদ্ধে এক প্রান্তজনের এমন লড়াই জয়ের চেয়েও অনেক বেশি কিছু। হিরো আলম ক্রমেই প্রান্তজনের হিরো হয়ে উঠছেন। বিপরীতে কথিত ভদ্রলোকেরা ভিলেইন। লেখক : সাংবাদিক ও কলাম লেখক

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়