শামীম আহমেদ: খেজুরের রস এমনিতেও খুব উপাদেয় কোনো পানীয় না, এটা ওভাররেটেড একটা জিনিস। শীতের সাথে, মাটির সাথে একাত্মতা করায়ে এমন একটা অবস্থায় দাঁড় করাইছে যে শীতকালে এটা না খাইলে জীবন বৃথা। মূলত তা না। আমি জীবনে একবার খাইছি, দ্বিতীয়বার খাওয়ার আগ্রহ বোধ করিনি। যাই হোক আপনার আগ্রহ হবে আপনি খাবেন, আপনার ইচ্ছা। কিন্তু নিপা ভাইরাসে মারা গেলে সেটাতে অবাক হবেন না। ফেসবুকে এখন হাজার হাজার ভিডিও যে খেজুরের রস সংগ্রহের পাত্রের ভেতর বা শরীর থেকে বাদুড় চুষে চুষে এই রস খাচ্ছে। সকালবেলা আপনি বিরাট ক্ষ্যাতের মতো (যদিও মনে করতেছেন নায়কের মতো) গাছে উঠে, গাছের নিচে বসে চুমুক দিয়ে সেই রস খাইতেছেন। আবার তার ছবিও দিতেছেন (যদিও খেয়াল করতেছেন না আপনারে এমনিতেও দেখতে আবুল লাগে, খেজুরের রস খাবার ভিডিও বা ছবিতে বেকুবও লাগে)।
সবচেয়ে অদ্ভুত লাগে ডাক্তার বা পাবলিক হেলথের লোকজন যখন কাঁচা খেজুরের রস খেয়ে আহ-হু টাইপের ছবি-ভিডিও দিচ্ছেন। নিপাহ ভাইরাস হয় বাদুড়ের লালা বা প্রস্রাব থেকে। নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত বা মৃত ব্যক্তি থেকেও এটি ছড়াতে পারে। খেজুরের রস খাইতে হইলে ফুটায়ে খাইতে পারেন। ফুটাইলে নিপাহ ভাইরাস মারা যাবে। তবে এই জিনিস কেন খাইতে হবে আমার বুঝে আসে না। এটার একমাত্র ভালো দিক হইতেছে খেজুরের রস খেয়ে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সমাজের জন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ মানুষ মারা যায় না। মূলত গাধা-গরু টাইপের বেকুব লোকজন মারা যায়। সমস্যা হচ্ছে এই বেকুব মানুষও তো কারও ছেলে, স্বামী, বাবা ইত্যাদি (যেহেতু বেশির ভাগ বেকুব পুরুষ), সুতরাং খামোখা বাদুড়ের লালা বা প্রস্রাব খেয়ে মরবেন কেন? খেজুরের রস খাওয়া বাদ দেন। খাইলেও নির্লজ্জের মতো সেই ছবি ফেসবুকে দিয়েন না। লেখক: জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
আপনার মতামত লিখুন :