মাসুদ রানা: বাংলাদেশের রাজনীতি ও বুদ্ধিবৃত্তি মোটা দাগে দুটি ক্যাম্পে বা শিবিরে বিভক্ত- একটি সাতচল্লিশ শিবির ও অন্যটি একাত্তর শিবির। এদের শিবির-ভিন্নতার মূলে আছে জাতিপরিচয় বোধ। সাতচল্লিশ শিবিরের জাতিবোধ হচ্ছে মুসলমানত্ব এবং একাত্তর শিবিরের জাতিবোধ হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালীত্ব।
সাতচল্লিশ শিবির ১৯৭১ সালে একাত্তর শিবিরের কাছে পরাস্ত হয়ে ১৯৭২ সাল থেকেই ‘মুসলিম বাংলা’র ধারণা প্রচার শুরু করে। আজ যে আমরা ‘বাঙালি মুসলমান’ ব্র্যাণ্ডিং শুনছি, সেটি সেই ‘মুসলিম বাংলার’ই সর্বশেষ সংস্ককরণ, যার মাধ্যমে সাতচল্লিশ শিবির মুসলমানত্বের বিশেষণ দিয়ে বিশেষায়িত করে ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালিত্বকে নাকচ করতে চাইছে। ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতির অর্জিত ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালী আত্মপরিচয়কে ১৯৪৭ সালের ধর্মীয় আত্মপরিচয়ের দিকে অত্যন্ত কৌশলের সাথে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন সলিমুল্লাহ খান নামের এক শিক্ষক তাঁর গুরু প্রয়াত আহমদ ছফা নামের এক প্রয়াত লেখকের উদ্ভট ও মূর্খ রচনা ‘বাঙালী মুসলমানের মন’ নিয়ে মহা-প্রশস্তি গেয়ে।
তাই, ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালী জাতীয়তবাদী চেতনার সকল বাঙালীকে খুবই সতর্কতার সাথে আহমদ ছফা, ফরহাদ মজহার ও সলিমুল্লাহ খানদের মতো বাঙালী-মুসলিমবাদ ও এর সহগামী বাঙালী-হিন্দুবাদকে মোকাবিলা করতে হবে। বাঙালী একটি ধর্মনিরপেক্ষ অবিভাজ্য জাতিসত্তা। এর আগে-পিছে ধর্মীয় বিশেষণ যোগ করে বাঙালী জাতি-পরিচয়কে বিভক্ত করার চতুর অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সবাই সতর্ক হোন! লণ্ডন, ইংল্যাণ্ড
আপনার মতামত লিখুন :