আফসান চৌধুরী: [১] ১৯৯৪ সালের দিকে আওয়ামী লীগের বিএনপি সরকার বিরোধী আন্দোলন তীব্র হতে থাকে। অতএব আমরা যারা রিপোর্টার তাদের মাঠে মানে রাস্তায় অনেক সময় কাটাতে হতো। আমি তখন বিবিসিতে। একবার ঝামেলায় বেশ ককটেল ফোটে, বোমাবাজি হয়। ঢাকার বাইরে থেকে চাকরির সন্ধানে আসা এক যুবক বোমা খেয়ে মারাত্মক আহত হয়। তার পায়ের হাড্ডিগুলা মাংস ভেদ করে বের হয়ে যায়। গুলিস্তান আওয়ামী লীগ গুলিস্তান অফিসার নিচেই এটা ঘটে।
[২] তার এই অবস্থা দেখে আমি সার্জেন্ট পুলিশকে গিয়ে এক ধমক দিয়ে বলি, ‘একে হাসপাতালে নিচ্ছেন না কেন? ‘ওই পুলিশ আমাকে এক কাউন্টার ঝাড়ি মারে। ‘আমাদের বহু লোক আহত হয়েছে। আগে ওদের নেবো, তারপর। ‘কিছু বলার নাই, চলে এলাম, নতুন কই যেন আগুন লাগসে ওটা দেখতে। ওই সময় আমি লক্ষ্য করলাম আমাকে ভিডিও করছে। আমায় পাত্তা দেই নাই । তারপর গুলি শুরু হয়, আর আমরা আশ্রয় সন্ধানে দৌড়াই।
[৩] দুপুর দুইটার দিকে এক পুলিশ আমাকে খুঁজে বের করে বললো সেই লোককে হাসপাতাল নেওয়া হয়েছে। আর বিকেলে ছয়টার দিকে সামাদ ভাই ফোন করে জানালেন, ‘থ্রি ডেড ও ওই ছেলেটা মারা গেছে।’ সামাদ ভাই তাকে ইন্টারভিউ করেছিলেন। আর বাজানো হয়নি। আমাদের দুজনার রিপোর্ট লোকে ভালো বলেছিল নিরপেক্ষতার জন্য।
[৪] এর কয়দিন পর আবার গন্ডগোল, আমরা আবার রাস্তায়। ওই দিনের পুলিশের মধ্যে কয়েকজন এসে আমাকে সালাম দেয় হাসি মুখে, ‘স্যার আপনার ভিডিও সবাই দেখসে, ওরা বলছে আপনি কমিউনিস্ট’। এই বলে আমার হ্যান্ডশেক করতে লাগল। আল্লাহ জানে, এই কারণে কেন হ্যান্ডশেক করলো। তবে আমার ধারণা পুলিশ ভাইরা ভাবসে এটা কোনো ডিগ্রি বা পীর আউলিয়ার মুরিদের সূচক ও মাইজভাণ্ডারী, লালন সিলসিলার মতো কিছু। যাই হোক ‘কমিউনিস্ট’ বইলা হাত তো মিলাইসি পুলিশের সাথে, কপাল এরে কয়। লেখক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
আপনার মতামত লিখুন :