মিরাজুল ইসলাম: পেনাল্টি মিস করার পরপরই স্টেডিয়ামজুড়ে আর্জেন্টাইন দর্শকরা শ্লোগান ধরেছিলো মেসির নামে। তারা জানে, মেসির উপর আস্থা হারানো পাপ। গোলের সুযোগ পেয়ে কাজে না লাগানোর মতো মামুলি এই পেনাল্টি মিস। এরপর পুরো খেলায় এরকম আরো পাঁচবার নিশ্চিত গোলের সুযোগ তৈরি করলেন মেসি। সেই সাথে আরো আটবার পোলিশ ডিফেন্স ভেদ করে সতীর্থদের দিয়ে গোলের সুযোগ তৈরি করা মেসিই ছিল দলের মূল প্লে মেকার। ওদিকে পুরো মিডিয়া তাকিয়ে ছিল মেসি-লেভাদনস্কি দ্বৈরথে। কোনো সুযোগই পায়নি পোলিশ স্ট্রাইকার। স্রেফ ভোজবাজির মতো হারিয়ে গেছেন আর্জেন্টাইন ডিফেন্স লাইনের সামনে।
অন্যদিকে মেসির প্রতি পোলিশ ডিফেন্সের অতিরিক্ত নজরদারি কাজে লাগিয়ে খেলে দিয়েছে এনজো, অ্যালিস্টার, মলিনা, আলভারেজ। তবে ২-০ গোলের ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারতো ‘ভাগ্য’ সহায় থাকলে। আমার ‘মেসি’ বইয়ের কয়েক জায়গায় উল্লেখ করেছি, ফলাফল যাই হোক, আর্জেন্টিনার নতুন প্রজন্ম এবার তাদের সর্বস্ব ঢেলে দেবে মেসির জন্য। ডি পল, মার্টিনেজদের ভাষ্যে, মেসি খেলে আর্জেন্টিনার জন্য এবং তারা খেলবে মেসির জন্য।
বোঝেন অবস্থা, অন্যদিকে, পোল্যাণ্ডের সাথে ম্যাচ শুরুর আগে মিডিয়া ব্যস্ত ছিল মেক্সিকান বক্সার ক্যানোলা আলভারেজের হুমকি নিয়ে। মেসি তাদের জাতীয় দলের জার্সিকে অপমান করেছে এমন ভুয়া অভিযোগে দৃষ্টি আকর্ষণ করে মেসির মনোযোগ নষ্ট করতে চাচ্ছিলো। যদিও মেক্সিকোর অধিনায়ক গুয়ার্দোদা অভিযোগের যথার্থ প্রতিবাদ করেছিলেন। তার ভাষ্যে, মানুষ হিসেবে মেসি অনেক উঁচু মনের। কিন্তু মজার কথাটা বলেছিলেন মাইক টাইসন। মেসিকে অপমান করার দায়ে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন ক্যানোলাকে। ব্যস, সাথে সাথে ক্ষমা চেয়ে বসলো মেসির কাছে ক্যানোলা।
আমার সন্দেহ, মেক্সিকোর বেয়াদব বক্সার মেসিকে নিয়ে পানি ঘোলা না করলে হয়তো আর্জেন্টিনা পোল্যাণ্ডকে আরেকটি গোল দিতো। তা সম্ভব হলে গোল ব্যবধানে মেক্সিকো চলে যেতো নক আউট পর্বে। মেসি কেবল মাঠের ভেতরই খেলেন না, মাঠের বাইরেও তার প্রভাব ছড়িয়ে আছে। মেক্সিকোর সাথে জয়ের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের পতাকা হাতে মেসির ছবি দেখে মনে মনে বলেছিলাম, Argentine is readz to show it’s true color, specially Messi. আগামী শনিবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তেমন নতুন কোনো রঙিন মুহূর্ত দেখার অপেক্ষায় আছি। লেখক ও চিকিৎসক
আপনার মতামত লিখুন :