আনোয়ার হক: মাছে ভাতে খাঁটি এক বাঙ্গালী আমি। ছোট, বড়, মাঝারি সব রকম মাছই আমার প্রিয়। তবে বর্তমানে ছোট মাছ বেশি খাই।
সংসার জীবনের শুরুতে প্রিয় মাছের বাজার ছিল শান্তিনগর। নানান রকম ভাল মানের ছোট, বড়, মাঝারি মাছ পাওয়া যেতো সেখানে। কিন্তু ছোট সংসার বলে পছন্দের বড় মাছ একা কেনা নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক বলে মনে হতো।
তবে শিঘ্রই চমৎকার একটা সিস্টেম আবিস্কার করে ফেললাম। কয়েকজন মিলে একটা তরতাজা বড় মাছ কিনে কাটিয়ে ভাগ করে নেয়ার সিস্টেম। সমাজতান্ত্রিক পদ্ধতি আর কি! এভাবে অনেকের সাথে সখ্যতাও গড়ে উঠেছিল। মাঝে মাঝে খুব ভোর বেলায় দল বেঁধে নিউ মার্কেট কাঁচাবাজারেও যেতাম। কখনো সখোনো কারওয়ান বাজার, খিলগাঁও শাজাহানপুর বাজার থেকেও মাছ কিনতাম।
পরবর্তীতে বারিধারা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসতি স্থানান্তর জনিত কারণে প্রিয় বাজার হয়ে ওঠে উত্তরার বিডিআর বাজার এবং আব্দুল্লাহপুর মাছের আড়ৎ। বিডিআর বাজারে পছন্দের মাছ বিক্রেতা ভৈরবের খলিল গ্যারান্টি দিয়ে ভাল ভাল মাছ দিতো। ছোট বড় মাঝারি সব রকম মাছ। ওর কাছে যেটা থাকতো না সেটা ওর চেনাজানা বিক্রেতার কাছ থেকে কিনে দিতো।
কাজের সুবাদে যাতায়াতের পথে পড়তো গুলশান-১ আর গুলশান-২ এর কাঁচাবাজার। সেখানেও হানা দিতাম মন চাইলে। আগোরা, মিনাবাজার, পিক এন্ড পে, সিএসডি, স্বপ্ন সবখানেই যাতায়াত করতাম ভাল মাছের সন্ধানে।
প্রকৃতপক্ষে সবচেয়ে ভাল মাছ পাওয়া যায় নদীর ঘাটে। আমাদের গ্রামের বাড়ীর অনতিদূরে যমুনা নদীতে মাঝেমাঝেই ধরা পড়ে বিশাল আকারের রুই, কাতল, বাঘা আইড় মাছ। সাধারণতঃ গ্রামাঞ্চলে এতো বড় মাছ কেউ একা কেনে না। নদীর পাড় সংলগ্ন বাজারে মাছ কেটে ভাগ করে বিক্রি করা হয়ে থাকে। মাছ কাটতে দেখলে আমার মৎস প্রীতির কথা জানা বন্ধু স্বজনেরা ফোন করেন। আমি চাইলে তারা মাছের ভাগ কিনে প্যাক বাসায় পাঠিয়ে দেন। আমি বিকাশে টাকা পাঠাই।
এছাড়াও মফস্বল বিশেষ করে ভৈরব থেকে হোমসার্ভিসে মাছ প্রাপ্তির একটা অনলাইন নেটওয়ার্কও তৈরি হয়েছিল আমার মৎস্য প্রীতির কারণে। ফোন করে আইটেম আর পরিমাণ বলে দিলে দুই এক দিনের মধ্যেই মাছ নিয়ে হাজির হয়ে কেটে কুটে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে দিয়ে যেতো। কভিড-১৯ লকডাউনের কবলে পড়ে আমার সেই নেটওয়ার্ক একেবারে তছনছ হয়ে গেছে!
আপনার মতামত লিখুন :