শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ০৭ অক্টোবর, ২০২২, ০২:২৭ রাত
আপডেট : ০৭ অক্টোবর, ২০২২, ০২:২৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সেক্স নিয়ে হরেক কিসিমের খেলা চলছে এই দেশে!

আহসান হাবিব

আহসান হাবিব: প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরা কার সঙ্গে সেক্স করবে, তা কেবল তাদের পার্টনারের উপর নির্ভর করবে। এতে কারো নাক গলাবার কিছু নেই। আর একজন মানুষ কতজন মানুষের সঙ্গে সেক্স করবে, কীসের বিনিময়ে করবে, তার সংখ্যা ও শর্ত সেই নির্ধারণ করবে, তারাই নির্ধারণ করবে । দেখার বিষয় একটাই- সে জোর করে কিংবা অসম্মতিতে সেক্স করছে কিনা। বিয়ে করে একজন নারীপুরুষ যেমন সেক্স করতে পারে, না করেও পারে। একটি দেহ সেক্সের জন্য শারীরিকভাবে তৈরি হলে সে সারাজীবন সেক্স করতে পারবে। সেক্স শরীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, রক্ষা করে। তবে সেটা সেইফ এবং স্বাস্থ্যসম্মত হতে হবে। এটা শিক্ষার বিষয়। দৈহিক ম্যাচুরিটি না আসলে সেক্স করা যাবে না, কেননা এটা নানা শারীরিক সমস্যার উদ্ভব ঘটায়- গবেষণা বলছে । 

অনেকেই মনে করেন, সেক্স সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। আমার মতে, এটা ভুল, বরং সেক্সের উপর নিয়ন্ত্রণই সামাজিক বিশৃঙ্খলার কারণ। মানুষের যৌন স্বাধীনতা হরণ করার মধ্য দিয়েই সামাজিক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি। শ্রেণিগত বৈষম্য এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার- এইসব কিছুর পেছনের যে রাজনীতি, তার মূল শিখণ্ডী হচ্ছে সেক্স। তাই এর উপর এতো নিয়ন্ত্রণ। পুঁজিবাদী সমাজে সবকিছু পণ্য, সেক্সও। সেক্স হচ্ছে পৃথিবীর ১ নম্বর সেইলিং কমডিটি। শ্রম যদি বিক্রি করা যায়, সেক্স নয় কেন? সেক্স তো শ্রমই, নাকি?

একজন শ্রমিক যখন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, তখন কি এর সঙ্গে জড়িত থাকে- দেহ। দেহ থেকে নির্গত শ্রম কিনে নেয় মালিক, সে বিনিময় পায়। সেক্সও একটি শ্রম, শুধু এর প্রকৃতি আলাদা। কিন্তু এর বিনিময় মূল্য আর দশটা পণ্যের মতোই নির্ণীত হয় এর সামাজিকভাবে প্রয়োজনীয় বিমূর্ত শ্রমের পরিমাণ দিয়ে। এই যে পৃথিবীতে এতো যে পর্নো তৈরি এবং বিক্রি হয়, কীভাবে তাদের মূল্য নির্ধারিত হয়? ঠিক যেমনভাবে একটি চায়ের মূল্য নির্ধারিত হয়। তাহলে সেক্স নিয়ে এতো হৈ চৈ কেন? 

ওই যে বললাম এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার মধ্য দিয়ে সমাজে আধিপত্য বিস্তার। এটা করতে গিয়ে এরা সেক্সকে ‘পবিত্র’তার মোড়কে তুলে ধরে এবং আরো নানারকম রঙ চড়ায়। পাপ পুণ্য, ঠিক বেঠিক, উচিত অনুচিত, হালাল হারাম, বৈধ, অবৈধ- ইত্যাদি। অথচ সেক্স হারাম নয় হালালও নয়, এটি একটি শারীরিক ক্রিয়া এবং প্রাকৃতিক বিষয়। এইসব অভিধা স্রেফ শোষণের অজুহাত। একজন সেক্স ওয়ার্কারকে তাই এই সমাজ দেখে নোংরা চোখে, তাদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে। অথচ কাজ হিসেবে সে হয়তো তার স্ত্রী কিংবা গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে প্রতিদিন একই কাজ করে চলেছে। স্ত্রীকে কিনে দিচ্ছে শাড়ি, দিচ্ছে খাবার এবং আরো অনেক কিছু আর গার্লফ্রেন্ডকে দিচ্ছে পারফিউম, আলতা, চুড়ি, গোলাপ, মোবাইল কিংবা গাড়ি। 

বিয়ে যদি একটি চুক্তি হয়, তবে তার প্রধান শর্ত হচ্ছে সেক্সকে একগামিতে আবদ্ধ থাকার প্রতিজ্ঞা। এই প্রতিজ্ঞা যদি কেউ ভঙ্গ করে, তবে তার শাস্তির যে বিধান আছে, তা তার প্রাপ্য। এই শাস্তি কিন্তু সেক্সের জন্য নয়, শর্ত ও প্রতিজ্ঞা ভাঙার জন্য। তবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই শাস্তি কেবল নারী পায়, পুরুষ নয়। একজন পুঁজিপতি শ্রমিকের শ্রম শোষণ করে ধনী হয়ে উঠলে সমাজ তাকে দেখে সম্মােেনর দৃষ্টিতে, কিন্তু একজন সেক্স ওয়ার্কার ধনী হলে সমাজ তাকে দেখে ঘৃণার চোখে। এটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বড় একটা হিপোক্রেসি। কে সেক্স বিক্রি করছে তারও কিন্তু শ্রেণি বিভাজন আছে। যদি নিম্নবর্গ থেকে আসা কোনো নারী এটা বিক্রি করে এবং জানাজানি হয়, তাহলে রাষ্ট্র তাকে লালঘরে ঢুকাবে, কিন্তু এটা যদি উচ্চবিত্ত সমাজের নারীরা করে- এরাই বেশি করে- তাহলে ধরা পড়লেও রাষ্ট্র এদের কেশ স্পর্শ করে না। এটাই শ্রেণি দ্বন্দ্বের খেলা। সেক্স নিয়ে হরেক কিসিমের খেলা চলছে বাংলাদেশে! লেখক: ঔপন্যাসিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়