শেখ রোকন: যেমন দুর্গার আরেক নাম গৌরী। গৌরী মানে গড়াই নদী, আলোকচিত্র দ্রষ্টব্য। শুধু তাই নয়, দুর্গাপূজা মণ্ডপে থাকা সব দেব-দেবীর নামেই নদী রয়েছে বঙ্গীয় ব-দ্বীপে। শিব নদী, সরস্বতী নদী, লক্ষ্মী নদী, কার্তিক বা কুমার নদী, গণেস্বরী নদী। এমনকি তিস্তা নদীর জন্মের পৌরাণিক কাহিনীতেও রয়েছে অসুরের ভূমিকা। পুরাণমতে দুর্গা হিমালয়ের কন্যা, গঙ্গা নদীর বোন। গাঙ্গেয় অববাহিকায় যখন আগমণ করেন, নদীর আয়না-স্বচ্ছ পানিতে শুভ্র মেঘ ও কাশফুলের ছায়া একাকার হয়ে যায়। বিসর্জিতও হন নদীতে। ওদিকে দুর্গাপতি শিবের আবাস কৈলাস পবর্ত। উপমহাদেশের প্রধান তিন নদীর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র ও সিন্ধুর উৎপত্তি সেখানে, গঙ্গার উৎপত্তি অদূরের গঙ্গোত্রি হলেও এর প্রধান উপনদী ‘কার্নালি’ জন্মেছে কৈলাসেই। উপমহাদেশের সব নদীই কোনো না কোনোভাবে হিমালয়-সম্পর্কিত। সে কারণেই কি নদীতে বিসর্জন?
যাহোক, নদীময় দেবীর উৎসবে আমরা যেন নদী রক্ষার কথা ভুলে না যাই। যেন ভুলে না যাই, খোদ গৌরী বা গড়াই আজ মড়মড়। এ প্রসঙ্গে ভারতীয় পরিবেশকর্মী পিযুষ দাশ একটি শ্লোগান লিখেছিলেন বেশ কয়েক বছর আগে। দুর্গাপূজা আসলেই আমার মনে পড়ে- ‘যে নদীতে তর্পণ, দেব-দেবী বিসর্জন/ বাঁচান সেই নদীর জীবন’। শারদীয় উৎসবে সবাইকে নদীময় শুভেচ্ছা। লেখক: সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :