মনজুরুল হক: মধ্যবিত্ত যদি কল্পনায় শত্রু নিধন না করতে পারত, যদি সুন্দর এক বঞ্চনা-বৈষম্যহীন ওয়েলফেয়ার স্টেটের স্বপ্ন না দেখত, তাহলে আত্মগ্লানিতে আত্মহত্যা করত! দুটো সূত্র শিক্ষিত বিবেচক মধ্যবিত্তকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। এক. ‘আমি একা ভেবে কী করব, আর তো কেউ ভাবে না’। দুই. ‘শাসকরা এমন জগদ্দল পাথর হয়ে চেপে বসেছে, তাদের কে সরাবে? এ জাতির কিচ্ছু হবে না’।
আসুন এবার তিন নম্বর সূত্র ম্যানুফ্যাক্চার করিÑকুড়ি বছর আগের মোবাইল জেনারেশন রাজনৈতিক ইনস্টিটিউটহীন সামন্ত-ব্যুরোক্র্যাসি রেজিমে বেড়ে উঠে আজকের ইডেন, ঢাবি, চবি, জাবি, জবি, রুয়েট-বুয়েট-কুয়েট-চুয়েট এবং ডজন ডজন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্বিত পলিটোক্যাডার। আজকে যারা ইডেনে ফাঁদে ফেলে দেহ ব্যবসা করিয়ে লাখো-কোটি কামাচ্ছে কালকে তারা বিসিএস দিয়ে জেনুইন ক্যাডার হবে এবং বুড়ো মানুষের কান ধরিয়ে উঠ-বস করাবে, ট্রফি আছড়ে ভাঙবে, প্রধান শিক্ষককে কান ধরিয়ে মাফ চাইতে বাধ্য করবে। অর্থাৎ এক একটা ‘ডিপার্টমেন্টাল শুয়োরের বাচ্চা’ হয়ে উঠবে। তারা মনে করবে দেশের যাবতীয় সম্পদ তাদেরই। তারা দয়া করে জনগণকে দেয়। এবং তাদের প্রতিপালক গভর্নমেন্ট মনে করবে সবই আমার এবং আমাদের। অতঃপর এই দুই পক্ষই রায় দেবেÑঅল পাবলিক আর দ্য সার্ভেন্ট অব দ্য গভর্নমেন্ট।
সামন্তপুঁজিবাদী বাজারি অর্থনীতি আর গোবরের ঘুটের মতো নিকৃষ্ট পলিটোরেজিমে সুস্থ কোনো কিছুই আশা করা যাবে না। এমনকি যাদুমন্ত্রবলে একদল বামপন্থী সরকার গঠন করলেও না। এই অস্থির অসহ্য ফ্যাসিবাদী শাসনের সাইকেলিক অর্ডার চলছে। চলবে। শেষ পর্যন্ত দেশটা নাইজেরিয়ার মতো ‘ক্লায়েন্ট স্টেট’-এর পরিণতি হবে কিনা সেটা সময় বলে দেবে। লেখক ও ফ্রিল্যান্স জার্নালিস্ট
আপনার মতামত লিখুন :