শওগাত আলী সাগর, ফেসবুক থেকে: ১. ‘বেনাপোলে দুই যাত্রীর ব্যাগে মিলল পৌনে দুই লাখ মার্কিন ডলার’- শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি খবর বেরিয়েছে। বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে আসা দুইজন যাত্রীকে তল্লাশি করে তাদের কাছে ১ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার পাওয়া যায়। খবরে উল্লেখ করা হয়, এই ডলার জব্দ করা হয়েছে এবং দুই যাত্রীকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তবে কোন অপরাধে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে- প্রথম আলোর রিপোর্টে তার উল্লেখ নেই। অথচ এটি এই সংবাদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ন উপাদান। খবরটি পড়ে ঠিক বোঝা যায়নি সঙ্গে ডলার এনেছে বলে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে না কি কোনো আইন লংঘন হয়েছে বলে গ্রেফতার করা হয়েছে। খবরটি পড়ে কেউ কেউ প্রশ্ন করেছেন- বাংলাদেশে বিদেশ থেকে ডলার নিয়ে আসাটা কী অপরাধ! নিশ্চয়ই নয়।
২. বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে একজন যাত্রী ১০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণের বৈদেশিক বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্গে নিয়ে দে্শ আসতে পারেন। এর বেশি সঙ্গে থাকলে কি সেটি অপরাধ! ডলার জব্দ এবং যাত্রীকে গ্রেফতার করার মতো অপরাধ! এই বিষয়ে আইনের বিধানটি কেউ জানাতে পারেন। কিন্তু খবরটি পড়ে মনে হয়েছে ১লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার সঙ্গে নিয়ে এসেছে বলেই দুই যা্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
৩. পশ্চিমা অধিকাংশ দেশেই বিশেষ করে কানাডায় ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্গে আনা যায়। তার অতিরিক্ত মুদ্রা সঙ্গে থাকলে তার জন্য প্রয়োজনীয় শুল্ক দিতে হয়। কেউ যদি ঘোষনা না দিয়ে ১০ হাজার ডলারের অতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্গে নিয়ে স্থল বা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যেতে চেষ্টা করেন এবং সেটি ধরা পরে তা হলে বর্ডার সিকিউরিটি এজেন্সী সেই অর্থ সাময়িকভাবে আটক করে ১০ হাজারের অতিরিক্ত মুদ্রার জন্য শুল্ক আদায় করে। আর ঘোষনা না দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা এবং শুল্ক ফাঁকি দেয়ার দায়ে ২৫০ থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান আছে। বর্ডার সিকিউরিটিজ সার্ভিস অতিরিক্ত এই অর্থের উৎস সম্পর্কেও জানতে চাইতে পারে। সঙ্গে আনা বৈদেশিক মুদ্রা অপরাধমূলক তৎপরতার মাধ্যমে অর্জিত হলে তার জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেয়া হয়।
৪. এই ধরনের রিপোর্টে আইনের বিধানসহ কেন পদক্ষেপটি নেয়া হলো তার উল্লেখ না থাকলে পাঠকদের কাছে ভুল বার্তা যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
আপনার মতামত লিখুন :