আমার লেখার হাতেখরি শুরু হয় ১৯৮৭ সালে, প্রথমে কবিতা তার পর গল্প। এভাবেই লিখতে লাগলাম তখনকার মিডিয়ার মধ্যে. অন্যতম ছিল রেডিও। আমি নিয়মিত রেডিও শুনতাম, রেডিও তেহরান, রেডিও বেইজিং, বাংলাদেশ বেতার, বেইজিং ও তেহরান রেডিও স্টেশন দুইবার করে বাংলায় সম্প্রচার করত অনুষ্ঠান।
দেশ বিদেশের অনেক লোকের কবিতা প্রবন্ধ পাঠ করত তারা নিজেরা। আমিও শখের বসে তাদের এখানে চিঠির মাধ্যমে প্রেরণ করলাম আমার কবিতা, তারপর ছোটগল্প প্রবন্ধ।
হঠাৎ করে রাত সাড়ে আটটায় আমার কবিতা পাঠ করলো রেডিও বেইজিং। আমি নিজে শুনলাম আশেপাশের বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন সবাইকে শোনালাম। উৎসাহিত হলাম অনুপ্রেরণা পেলাম। সেই ১৯৮৭ সাল থেকে লেখালেখিতে ঝুঁকে পড়লাম। নেত্রকোণার বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠনের সাথে জড়িত হলাম।
১৯৮৯ সালে সাপ্তাহিক যায়যায়দিনে সচেতনামূলক একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। পুরস্কৃত হলাম ডক্টর শফিকুর রহমানের একটি পোস্ট কার্ড এর চিঠি ও ২০০ টাকার সম্মাননা।
লেখক হিসাবে নিজেকে গর্বিত মনে করলাম। লেখালেখি চলতে লাগল। ১৯৯০ এর দিকে বাংলাদেশের আধুনিক পত্রিকার রূপকার জনাব নাঈমুল ইসলাম খান সম্পাদিত দৈনিক আজকের কাগজে সাংবাদিকতার সুযোগ পেলাম। নিজেকে সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ করার।
১৯৯২ সালে বৃহত্তর ময়মনসিংহের সংবাদপত্রের পথিকৃৎ শেখ হাবিবুর রহমান কর্তৃক প্রকাশিত দৈনিক বাংলার দর্পণ পত্রিকাটি নেত্রকোণা থেকে প্রকাশিত হয়। আমিও জড়িত হলাম সেই পত্রিকার একজন কর্মী হিসেবে, পুরোদমে শুরু করলাম মফস্বল সাংবাদিকতা।
সংবাদমাধ্যম একটি স্বাধীন পেশা, এই পেশা থেকে অবহেলিত, নির্যাতিত, গণমানুষের কথা, তথা উন্নয়নের ভাবনা ভাবা যায়, আস্তে আস্তে এক সময় প্রফেশনাল সাংবাদিকই হয়ে গেলাম। দীর্ঘ ১৭ বছর দৈনিক বাংলার দর্পণ কাজ করেছি, ২০০৩ সালে দৈনিক দেশ কণ্ঠস্বর পত্রিকা প্রকাশনার দায়িত্ব নিয়ে নিবার্হী সম্পাদক হিসাবে।
পত্রিকাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে হঠাৎ করে মালিকানার দ্বন্দ্বে চলে এলাম আবার ২০০৫ সালে দৈনিক বাংলার দর্পণ পত্রিকা। তবে জাতীয়ভাবেও বিভিন্ন পত্রিকার আজকের কাগজ, ভোরের ডাক, সকালের খবর, দৈনিক সংগ্রামের সাথে জড়িত হলাম ১৯৯৪ সাল থেকে।
২০১৭ সালে নাঈমুল ইসলাম খান সম্পাদিত ও প্রকাশিত "আমাদের নতুন সময়" ও আমাদের সময়.কম মিডিয়াতে সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে যোগদান করলাম। আবারো আধুনিকতার সাথে সাংবাদিকতা শুরু হল। তবে মফস্বল সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও দায়িত্ব পালন করে আঞ্চলিক পত্রিকা।
আমাদের নেত্রকোণা জেলা থেকে বর্তমানে ৮টি সাপ্তাহিক ও দৈনিক পত্রিকা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অধ্যক্ষ শফিকুজ্জামান সম্পাদিত দৈনিক ইকরা প্রতিদিন পত্রিকায় কার্য নির্বাহী হিসাবে দায়িত্ব পালনসহ নিয়মিত লিখে যাচ্ছি।
নেত্রকোণা থেকে প্রকাশিত জেলার সর্বাধিক পঠিত ও জনপ্রিয় অনলাইন সংবাদমাধ্যম নেত্রকোণা জার্নাল এর উপদেষ্টা হিসাবেও দায়িত্ব নিয়ে প্রকাশনার সাথে জড়িত হয়ে প্রতিবেদন, লেখা লেখি অব্যাহত রেখেছি।
ইকরা প্রতিদিন পত্রিকাটি নিয়মিত প্রকাশিত হওয়ায় এবং অনলাইন পত্রিকায় পাঠক সংখ্যা কয়েক লক্ষ থাকায় প্রচার সংখ্যা ও উল্লেখ যোগ্য। আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। নিয়মিত আমিও লিখি। কমিউনিটি নিউজ পেপারের সাথে সাংবাদিকতা শুরু থেকেই জড়িত।
জেলার প্রথম স্থানীয় দৈনিক দৈনিক বাংলার দর্পণ পত্রিকার জন্ম লগ্ন থেকেই জড়িত আমি। পত্রিকাটির দায়িত্ব পালন করেছি দীর্ঘদিন। কমিউনিটি নিউজ পেপারে স্থানীয় মানুষের কথা, উন্নয়ন, অর্থনীতি বিষয়ক সাধারণ জনগণের পক্ষে কথা বলে।
এই জন্যেই শুরু থেকে এবং অদ্যবধি কমিউনিটি নিউজ পেপারের সাথে আগ্রহটা আমার বেশি। কাজও বেশি করি কমিউনিটি নিউজ পেপারে। আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আঞ্চলিক সংবাদপত্র। অঞ্চলভিত্তিক সমস্যা সম্ভাবনা নিয়ে প্রতিনিয়ত লেখা যায়।
স্থানীয় দৈনিক গুলো যদি নিয়মিত এলাকা ভিত্তিক সংবাদ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে সে এলাকার উন্নয়ন সম্ভাবনাই থাকে অন্যরকম। সরকার ও প্রশাসন সবচেয়ে গুরুত্ব দেয় কমিউনিটি নিউজ পেপারকে (পত্রিকা)। মুল কথা সাংবাদিকতার উদ্দেশ্য দেশ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা।
এক জন সাংবাদিক উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে পারে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভুমিকা রাখতে পারে, পারে উন্নয়নে অংশগ্রহণ করতে।
ব্যক্তিগত ভাবে আমি সংবাদ কর্মী হিসাবে সাধারণ মানুষ এর অধিকার, মৌলিক অধিকার নিয়ে কাজ করার মাধ্যম হিসেবে সুযোগ পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করি।
স্বাধীন মত ও জনগণের অধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে কাজ করি এই জন্য আমি সাংবাদিক। সম্পাদনা: আল আমিন
লেখক : দিলওয়ারখান,
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এআরএফবি,
আপনার মতামত লিখুন :