গাজী নাসিরউদ্দিন আহমেদ: ছোটবেলা আমাদের পাঠ্যপুস্তকে বাঙালি প্রকৌশলী ফজলুর রহমান খান বা এফ আর খানের স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উদ্ভাবনী প্রতিভার কথা জেনেছি। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং নির্মাণে তিনি টিউবুলার সিস্টেম ইন্ট্রোডিউস করেছিলেন। সেটিকে আমরা আমজনতা প্রকৌশল বিস্ময় হিসেবে ধরে নিয়ে তার প্রতিভাকে সম্মান জানাই। স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিক থেকে সেটা আসলে কতটা কী আমাদের খুব বেশি বোঝার সুযোগ নেই।
তারপর ধরেন আমাদের জাতীয় সংসদ ভবন। বিশ্বের অন্যতম সুন্দর স্থাপনা হিসেবেই সেটি নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। মাস্টার আর্কিটেক্ট লুই আই কানের নকশার মহত্ব বর্ণনা করি। এর ল্যান্ডস্কেপ যে এর ডিজাইনের একটা পার্ট তা জেনে এর কিছু বিকৃতি হতে দেখলে আমরা মাঠে নেমে পড়ি। বাপা, সুশীল সমাজ, ফেসবুক বুদ্ধিজীবী, ছদ্ম একাডেমিকরা ফাটিয়ে দিই। সেই ফাটানোতে আমরাও অংশ নিই। এবার পদ্মা সেতুর নির্মাণ কৌশল নিয়ে কয়েকজন পুরকৌশলী মিডিয়ায় কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, এটি ভীষণ চ্যালেঞ্জিং একটা বিষয় ছিল। টেকনিক্যাল ও টেকনোলজিক্যাল ম্যানুভারিং করতে হয়েছে। স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিক থেকে এটি একটি মারভেলাস বিষয় বলে তারা বলছেন।
আগের দুটির মতো আমাদের আমজনতার এটা বোঝার সাধ্য খুব একটা বেশি নেই। আগের দুটি নিয়ে আমাদের উচ্ছ্বাসের কমতি নেই। কিন্তু এটাতে যেহেতু রাজনীতিটা বড় হয়ে গেছে সেহেতু আমরা এই নিয়ে ট্রল করব। কলার যেই সব শিক্ষকরা দুয়েকটা কবিতার লাইন বা একটা শর্ট ফিল্মের স্ক্রিন কালার নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন তারাও দেখি সেতুর স্ট্রাকচার নিয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের উচ্ছ্বাস নিয়ে ট্রল করছে। রাজনীতি থাকলেই কেউ আর নিরপেক্ষতার মুখোশটা ধরে রাখতে পারেন না। লেখক: সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :