আব্দুল গাফফার চৌধুরীর গল্প-উপন্যাস-কলাম পড়ে বড় হয়েছি। দৈনিক সংবাদে চাকরি করা এবং লেখালেখির সুবাদে এই গাফফার চৌধুরীর সঙ্গেও একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। কবে, কখন, কীভাবে, তাঁর সঙ্গে পরিচয় বা আলাপ হয়েছে, তা ঠিক মনে নেই। তবে বহুবার টেলিফোনে কথা হয়েছে। ফোন তিনিই করতেন। আমার লেখার প্রশংসা করতেন। কখনও কখনও সমালোচনাও করতেন। আমি অবশ্য তাঁর লেখার সমালোচনা করার সাহস পেতাম না। একবার শুধু ঠাট্টাচ্ছলে বলেছিলাম, আপনি একটু বেশিই আওয়ামী লীগার! গাফফার ভাই হেসেছিলেন। তিনি জানতেন, ছাত্রকালে আমি ছাত্র ইউনিয়ন করতাম। তাই বলেছিলেন, শোনো, তোমরা কমিউনিস্টরা যদি ঠিক পথে থাকতা, তাহলে আমি কমিউনিস্টই হতাম। তাতো তোমরা থাকোনি। বাংলাদেশের বাস্তবতায় আওয়ামী লীগার না হয়ে কি উপায় আছে? যাহোক, আমি কথা বাড়াইনি।
২০০৩ সালে সংবাদে থাকাকালে আমি বিয়ে করি। বউভাতে গাফফার ভাইকেও নিমন্ত্রণ করি। সঙ্গত কারণেই গাফফার ভাই বউভাতে থাকতে পারেননি। আমার বউভাতে অংশ নেওয়ার জন্য লন্ডন থেকে ঢাকায় আসা মোটেও বাস্তবসম্মত ছিল না। গাফফার ভাই আমার বিয়েতে উপস্থিত না হলে কী হবে, মনে করে ঠিকই একটা আশীর্বাদ-পত্র পাঠিয়েছিলেন। আমার জীবনে নিঃসন্দেহে এটা একটা বড় প্রাপ্তি। গাফফার ভাইকে নিয়ে অনেক কথা লেখার আছে। কিন্তু সেটা আজ নয়। বিষণ্ন হৃদয়ে কোনো কিছুই ভালো হয় না। স্মৃতি-তর্পণও না! গাফফার ভাইয়ের প্রতি অনিঃশেষ শ্রদ্ধা।
লেখক: কলামিস্ট।
আপনার মতামত লিখুন :