দীপক চৌধুরী: সোশ্যাল মিডিয়ায় রাষ্ট্র ও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ মানুষ সম্পর্কে কুৎসা রটানো হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে। সরকারের ভাল কাজের বিরুদ্ধেও কুৎসা। বাঙালির গর্বের ও স্বপ্নের স্থাপনা পদ্মা সেতু নিয়েও নানাগুজব ছড়ানো হয়েছিল।
উদ্বোধনের পরে দুনিয়ার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিয়ে আলোচিত হয়েছে। এখন তো সারা দুনিয়ায় আলোচিত আমাদের পদ্মা সেতু। অথচ পদ্মা সেতু নির্মাণকাজ চলার সময় নানারকম গুজব ছড়ানো হয়েছিল। রাজধানীর বাড্ডায় একজন মহিলাকে স্কুলে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। গুজব ছড়ানো হয় যে, পদ্মা নদী নাকি মাথা চায়। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার সম্পর্কে পরিকল্পিত ও মিথ্যা কুৎসা দীর্ঘদিনের। এখনো একের পর এক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দলের শীর্ষ নেতাদের সম্পর্কে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক কুৎসা রটানো হচ্ছে। সুতরাং প্রশাসনে কর্মরতরা এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
পর্যবেক্ষকমহলের ধারণা, মহল-বিশেষের প্ররোচণায় গভীর চক্রান্তের অংশ হিসেবেই এ ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে- কিন্তু অ্যাকশন নেই। কেন, কী কারণে , কঠোর কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায় না এ প্রশ্ন এখন অনেকেরই। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের বাইরে থেকে যারা এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের নাকি ধরার সুযোগ নেই। যোগ্য, মেধাবী ও ভাল মানুষের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারী ও ষড়যন্ত্রকারীরা চক্রান্ত করেছে ও করে চলছে। নীলনকশা বাস্তবায়নের সক্রিয় সদস্যরা দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে এভাবে অপকর্ম করবে আর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর, মানহানিকর তথ্য ছাড়াও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েই যাচ্ছে নানামহল। এমনই এক প্রশ্ন রেখেছিলাম আওয়ামী লীগের এক প্রবীণ রাজনীতিবিদের কাছে। অবশেষে কিছুদিন আগে একটি ভাল সিদ্ধান্ত হয়েছে এ বিষয়ে। বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারীদের পাসপোর্ট বাতিল করা হতে পারে। কয়েকমাস আগে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সেই সিদ্ধান্তই হয়েছে। দেশের বাইরে চিহ্নিত কয়েকজন আছে যারা ক্রমাগতভাবে অপপ্রচার ও গুজব ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে ওরা ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, আবুধাবী, মালয়েশিয়াসহ কয়েকটি দেশে অবস্থান করে গুজব ছড়াচ্ছে ও দেশবিরোধী কাজ করে যাচ্ছে। দেশ ও জনগণের স্বার্থে এদের পাসপোর্ট বাতিল করতে হবে। কাজগুলো সংশ্লিষ্টদের জরুরি ভিত্তিতে করা দরকার।
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসায় ভাসছে দুনিয়া। অসাধারণ মেধাবী এই নেত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে বন্যায় আক্রান্ত সুনামগঞ্জ-সিলেটের মানুষের দুর্ভোগ স্বচক্ষে দেখেছেন। তিনি সবধরনের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। প্রশাসন, অভিজ্ঞ প্রকৌশলী, জনপ্রতিনিধি ও ক্ষতিগ্রস্তদের কথা শুনেছেন।এরপর পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে এসেছেন। তিনি সম্প্রতি একনেক বৈঠকে সঠিক নির্দেশনা দিয়েছেন এবং সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এখন থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে সেতু-কালভার্ট নির্মাণ করতে বলা হয়েছে। সিলেট-সুনামগঞ্জের ভয়াবহ বন্যার অবস্থা মানুষকে অসহায় করেছে। ভয়াবহ বন্যার সময় পানিপ্রবাহ ঠিক রাখতে অনেক সড়ক কেটে ফেলতে হয়েছে। পানি দ্রুত প্রবাহের জন্য এ কাজটি করা হয়েছে। পাশাপাশি কিছু সড়ক বন্যায় ভেঙে গেছে, ডুবে গেলেও পানি দ্রুত নামার জন্য বাঁধ কেটে দেওয়া হয়েছে। বন্যায় ভেঙে যাওয়া ও কেটে ফেলা সড়কে নতুন করে উড়াল সড়ক, কালভার্ট অথবা ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। এসব স্থানে নতুন করে পুনরায় সড়ক নির্মাণ করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাধ নির্মাণের জন্য একটি দুর্নীতিবাজ চক্র অতীতে এমনকি গত অর্থবাজেটেও দুর্নীতি করেছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ চক্রের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট ও কথাসাহিত্যিক
আপনার মতামত লিখুন :