প্লাবন্তী জামান ইতি: আমরা বাঙালি জাতি। আমাদের আবেগ-উচ্ছ্বাস একটু বেশি। আমরা এতো বেশি আবেগী যে, আবেগ কোথায় দেখাতে হবে, আর কোথায় দেখাতে হবে নাÑ সেটা অনেকসময় ভুলে যাই। সমাজে এমন অনেকে আছেন, যাদের মাঝে ভালো-খারাপ কিছু জেনিটিক সমস্যা আছে। খারাপ জেনিটিক মানুষেরা সবসময় সমাজের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পদ্মা সেতু আমাদের জাতীর সম্পদ। এই সেতুর সঙ্গে জড়িয়ে আমাদের ভালোবাসা আর আবেগ-অনুভূতি। দুদিন গেলো পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে। এর মধ্যে কতো ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, কতো কাহিনি। সব শ্রেণিপেশার মানুষ ভিড় জমাচ্ছে পদ্মা সেতুর উপরে। জানি আমাদের অনেক আবেগের জায়গা পদ্মা সেতু, কিন্তু অনেক মানুষের মনুষ্যত্ববোধ এতো লোপ পাচ্ছে, যার কারণে সমাজের ক্ষতি দিকে যাচ্ছে এবং সমাজের জন্য ভয়ংকার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া আর প্রতিযোগিতার মাঝে মানুষ এতো বেশি ঢুকে যাচ্ছে। কোনটা নিজের জন্য বা দেশের জন্য ক্ষতি এটা ভুলে যাচ্ছি ।
টিকটক বায়েজিদ উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খুলে নিজে টিকটক করে সোস্যাল মিডিয়া ভাইরাল করেছে। বায়েজিদকে সিআইডি আটক করা পর জানা যায়। সে নিজে যন্ত্রপাতি এনে এই কাজ করে। পরে তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারায় মামলা নেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পদ্মার উত্তর পাড় থানাকে। ১৫ এর ৩ ধারায় যা বলা আছে। এই অপরাধের শাস্তি হলো, যদি কোনো ব্যক্তি এই ধারার কোন বিধানের লংঘন করে তাহলে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন অথবা চৌদ্দবছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদে কারাদন্ড হতে পারে, একইসঙ্গে অর্থদণ্ডেও দন্ডিত করা যাবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে হুজুরা নামাজ পড়ছেন পদ্মা সেতুর উপরে, নামাজের ছবিও তুলছেন। ইমার্জেন্সি রুটে গাড়ি থামিয়ে ছবি টিকটক প্রতিযোগিতা চলছে। দ্রুত গতিতে (১০৫ সিসি) বাইক চালিয়ে একটি ছেলে জীবন চলে গেলো। বিশে^র যেকোনো দেশের মানুষের সঙ্গে আমরা নিজের বাংলাদেশকে তুলনা করি। কিন্তু সকল দেশের মানুষের মতো আমরা আমাদের দেশের আইন মানি না। স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলা শুধু সরকারের কাজ না, এটা আমাদের সকলের দায়িত্ব। লেখক: সমাজকর্মী
আপনার মতামত লিখুন :