সালেহ্ বিপ্লব: নিবন্ধে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা নারী সরকার প্রধান। দুই দশক ধরে ক্ষমতা থেকে তিনি দারিদ্র বিমোচনের কাজ করছেন। দেশটির জিডিপি ৭ শতাংশ, যা বর্তমান অবস্থায় যথেষ্ট। ৭৫ বছর বয়সী এই নেতা নেতৃত্ব দিয়ে তার দল আওয়ামী লীগকে পর পর তিনবার ক্ষমতায় এনেছেন, সব মিলিয়ে তার দল চার বার ক্ষমতায় এসেছে। সংখ্যার দিকে দিয়ে শেখ হাসিনার এই বিজয় ইন্দিরা গান্ধী ও মার্গারেট থেচারকে ছাড়িয়ে গেছে।
বাংলাদেশে আরেকটি নির্বাচন অত্যাসন্ন, যাতে আবারো নির্বাচিত হবেন বলে শেখ হাসিনা আশাবাদী। তার সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরে নর্দার্ন ভার্জিনিয়া হোটেল স্যুইটে নেওয়া সাক্ষাৎকারে দ্য ইকনোমিস্ট তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলো। জবাবে শেখ হাসিনা আবারো জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি আমার দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত উন্নত দেশে পরিণত করতে চাই। এসময় তিনি ইকনোমিস্টের সাংবাদিককে পাল্টা প্রশ্ন করেন, আপনি কি জানেন, তারা আমার বাবাকে হত্যা করেছিলো।
১৫ আগস্ট কালোরাতের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন।
ইকনোমিস্ট বলেছে, কোনো রাজনীতিবিদই সমালোচনা সহ্য করেন না। তিনি নিজের সরকার ছাড়া অন্য সরকারগুলোর সমালোচনা করেছেন। দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক শাসকরা দেশে দুর্নীতিকে লালন করেছে।
অনেক বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ায় আফগানিস্তানের পর পরই বাংলাদেশ সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। আওয়ামী লীগ সরকারের কারো কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, এই মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, নিম্ন পর্যায়ে হতে পারে। তবে সেটার পরিমাণ খুব বেশি না। কারণ আমি অ্যাকশন নেবো, এই ভয় সবার মধ্যেই আছে।
শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার আগে পর্যন্ত পালাক্রমে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসছিলো, বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন আরেকজন ক্যারিশমাটিক নেতা খালেদা জিয়া। এই নেত্রী বর্তমানে গৃহবন্দী। তার দলের নেতাদের তাড়া করা হচ্ছে। গণমাধ্যম ভীতির মধ্যে আছে। পুলিশ এবং আদালত সরকারের অনুগত।
আসন্ন নির্বাচন বিএনপিকে ক্ষমতায় ফেরাবে, এমন কোনো আলামত নেই। যদিও শেখ হাসিনা বলছেন, তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি এও বলেন, প্রকৃত রাজনৈতিক দল যারা, তারাই নির্বাচনে অংশ নেবে। তার প্রতিদ্বন্দ্বিরা এই মানদণ্ডে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অযোগ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির জন্ম ক্ষমতা জবরদখলকারী সামরিক শাসকের মাধ্যমে। তাদের সহযোগী, দেশের সবচেয়ে বড়ো ইসলামী দল জামায়াতে ইসলামী হচ্ছে পাকিস্তানের মিত্র। এদের বেশির ভাগই যুদ্ধাপরাধী। এই বাস্তবতায়, এমন কোনো দল আর নেই, যারা আমাদের সঙ্গে নির্বাচনে লড়তে পারে।
কিছু ক্ষেত্রে, বাংলাদেশ শেখ হাসিনার কঠোর নিয়ন্ত্রণ থেকে সুফল পেয়েছে। তিনি বিনিয়োগ অবকাঠামো নির্মাণসহ বেশ কিছু নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন। অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগুলো অবদান রেখেছে। দুর্বল সরকারের পক্ষে যা করা সম্ভব ছিলো না।
আমেরিকানরা হয়তো শেখ হাসিনাকে বলেছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে নিঃশ্বাস ফেলতে দিতে হবে। তাদের মূল বার্তা এটাই, শেখ হাসিনা যেনো চীনের সঙ্গে না যান।
এসবি/এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :