মাজহার মিচেল: ১৫ লাখ কর্মী নেয়ার সমঝোতা স্মারক সইয়ের একদিন পরই দেশটির এ ধরনের ঘোষণা দেয়ার কথা শনিবার এক বিবৃতিতে জানালেন মানবসম্পদমন্ত্রী ভি শিবকুমার। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অনুমোদন স্থগিত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। এ বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশিসহ কোনো বিদেশি কর্মীই তারা আপাতত নেবে না। শুধু কর্মী নিয়োগ বন্ধই নয়, দেশটিতে কর্মরত অবৈধ অভিবাসীদের আটক এবং বের করে দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে তারা।
তবে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শহিদুল ইসলাম বলছেন হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। সমঝোতা স্মারক সইয়ের পরের দিন এমন ঘোষণাকে নজিরবিহীন বলছেন কূটনীতিকরা। তারা বলেছেন, এবার মালয়েশিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনীতির শিকার হলো বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলো বাংলাদেশসহ বহু বিদেশি রাষ্ট্র।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব শামসুন নাহার বলেন, মালয়েশিয়ার কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়ার পর এ বিষয়ে মন্তব্য করবে মন্ত্রণালয়।
সমঝোতা স্মারকের একদিন পর মালয়েশিয়ার উল্টোপথ ধরাকে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেন সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, সমঝোতা স্মারকের আইনি ভিত্তি চুক্তির মতো শক্তিশালী নয়। কিন্তু সই করার পর বিনা নোটিশে সমঝোতা থেকে সরে আসা নজিরবিহীন। এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত, অসম্মানজনক।
মালয়েশিয়ার ঘোষণায় হতাশা প্রকাশ করে রিত্রুক্রটিং এজেন্সিগুলোর সংগঠন বায়রা সভাপতি আবুল বাশার বলেন, 'কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করলে আজকের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।'
মালয়েশিয়ানদের দুর্নীতিকে সরকার প্রশ্রয় দেওয়ায় শ্রমবাজারটি বাংলাদেশের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে- এমন আশঙ্কা তার। একই কথা বলেন অভিবাসন বিষয়ক গবেষণা সংস্থা রামরু'র সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. সি আর আবরার।
এর আগে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া। সরকারিভাবে কর্মী পাঠাতে ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর দেশটির সঙ্গে জিটুজি চুক্তি করে বাংলাদেশ। জনপ্রতি ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে বৃক্ষরোপণ খাতে পাঁচ বছরে পাঁচ লাখ কর্মী যাওয়ার কথা ছিল। প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ কর্মী নিবন্ধন করেন। কিন্তু তিন বছরে এ পদ্ধতিতে মাত্র ৯ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যান।
এমএম/এএ
আপনার মতামত লিখুন :