শিরোনাম
◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ গাজীপুরের টঙ্গি বাজারে আলুর গুদামে আগুন ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ দুই এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপদাহ আরো তীব্র হতে পারে  ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৭:২১ বিকাল
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৭:২১ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পরিবেশবান্ধব নির্মাণ উপকরণ ও গবেষণায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে: প্রকৌশলী আশরাফুল আলম

প্রকৌশলী আশরাফুল আলম

সুজিৎ নন্দী: হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এইচবিআরআই) মহাপরিচালক প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেছেন, জাপানের সঙ্গে যৌথভাবে একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি। এর মাধ্যমে একটি বিশেষ ধরণের ইট নির্মাণ করা হবে। এ ইট হবে অনেকটাই তাপমাত্রা সহনশীল। গরমের দিনে ঘর ঠান্ডা রাখবে আর ঠান্ডার দিনে গরম। পাশাপাশি আমরা ভবনের নকশা নিয়েও কাজ করছি। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশের সুবিধা রাখা হচ্ছে এসব নকশায়। এইচবিআরআই উদ্ভাবিত প্রযুক্তি আর প্রণয়ন করা নকশার মাধ্যমে ভবনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের খুব একটা দরকার হবে না।

প্রকৌশলী আশরাফুল আলম আরো বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক দিয়ে বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ। এমন পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিদ্যমান অবকাঠামোগুলো কতটা ভূমিকম্প সহনীয় কিংবা কী পরিমাণ ভবন ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে, তা জানতে জাইকার সহায়তায় এইচবিআরআই একটি গবেষণা পরিচালনা করছে। যার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। এরই মধ্যে ঢাকার ৮শ’ বিল্ডিংয়ের ওপর জরিপ করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, যেসব ভবন অত্যধিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, সেগুলোকে ‘রেড’, তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোকে ‘ইয়েলো’ এবং নিরাপদ ভবনগুলোকে ‘গ্রিন’ জোনে রাখা হয়েছে। শিগগিরই গবেষণার ফলাফল সরকারের কাছে পেশ করা হবে। যার আলোকে সরকার ও সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো বিভিন্ন নীতি ও কৌশল গ্রহণ করে নিরাপদ অবকাঠামোর বিষয়টি নিশ্চিত করবে। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত থাকা প্রতিষ্ঠানটিতে যোগদানের পর নতুন সাংগঠনিক কাঠামো তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বলেন, জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে অফিস স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। আমি স্বপ্ন দেখি, এইচবিআরআই একদিন আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠবে। দেশ-বিদেশের গবেষক-প্রকৌশলীদের জন্য ‘সেন্টার অফ এক্সিলেন্স’-এ পরিণত হবে। উন্নয়ন আর উদ্ভাবনে দেশের গন্ডি পেরিয়ে এইচবিআরআই কাজ করবে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে। 

এইচবিআরআইয়ে মহাপরিচালক আশরাফুল আলম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া হাউজিং এন্ড বিল্ডিং  রিসার্চ ইনস্টিটিউট। ১৯৭৫ সালের ১৩ জানুয়ারি স্বাধীন দেশে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে দেশজ নির্মাণ উপকরণ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে বিপুল জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণে পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও ব্যয় সাশ্রয়ী অবকাঠামো নির্মাণে গড়ে তোলেন এইচবিআরআই। 

এইচবিআরআইয়ে মহাপরিচালক আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ২৮ডিসেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে বর্তমানে প্রচলিত পোঁড়া মাটির ইটের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ সামগ্রী উদ্ভাবনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। সেই নির্দেশনার আলোকে এইচবিআরআই ইতিমধ্যে স্যান্ড সিমেন্ট সলিড ব্লক, স্যান্ড সিমেন্ট হলো ব্লক, থার্মাল ব্লক, নন ফায়ার্ড সলিডিফিকেশন ব্লক,  সিএসইবি ও এএসি ব্লক ইত্যাদি পরিবেশবান্ধব নির্মাণ সামগ্রী উদ্ভাবন করেছে।

পাশাপাশি এতে করে একদিকে যেমন পরিবেশের সুরক্ষা হচ্ছে অন্যদিকে আমাদের কৃষিজমির উপরিভাগ তথা টপ সয়েল রক্ষা পাচ্ছে। এছাড়াও অত্র প্রতিষ্ঠানে গবেষণার পাশাপাশি উদ্ভাবিত নির্মাণ উপকরণ, প্রযুক্তি বিপণন ও সম্প্রসারণ, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানকে গৃহায়ন ও নির্মাণ বিষয়ক পরামর্শ সেবা প্রদান করে থাকে। নির্মাণ শিল্পের মান ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে এইচবিআরআই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। 

এইচবিআরআই মহাপরিচালক প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব ও টেকসই আবাসন নির্মাণ কার্যক্রমেও এই প্রতিষ্ঠান অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। গ্রামীণ পরিকল্পিত গৃহায়নের মাধ্যমে কৃষিজমি সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে ফেরোসিমেন্ট প্রযুক্তিতে ব্যয়সাশ্রয়ী বহুতল ভবন নির্মাণ কৌশল এবং পরিবেশবান্ধব ইট তৈরি উল্লেখযোগ্য।

প্রকৌশলী আশরাফুল আলম আরো বলেন, বাংলাদেশের ভবন নির্মাণ কাজে ন্যূনতম স্ট্যান্ডার্ড এবং যথোপযুক্ত নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ১৯৯৩ সালে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন এইচবিআরআই এর তত্ত্বাবধায়নে বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (বিএনবিই) প্রণয়ন করা হয়। এরপর দীর্ঘ সময়ের পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে গবেষণালব্ধ উদ্ভাবিত নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং উপকরণ সংযুক্ত করে ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০’ হালনাগাদ করা হয় যা ইতোমধ্যে ২০২১ সালের ১১ফেব্রুয়ারি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমান বাংলাদেশের বিভিন্ন দুর্যোগসমূহকে (ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ভুমিকম্প ইত্যাদি) বিবেচনা করে এই বিল্ডিং কোড ( বিএনবিই ) আপডেট করা হয়েছে। এছাড়াও সংশোধিত বিএনবিসিতে ফায়ার ডিটেকশন এন্ড প্রোটেকশন এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে। এই বিল্ডিং কোড অনুসরণের মাধ্যমে দেশে আধুনিক, সময়োপযোগী প্রযুক্তি ব্যবহার ও ঝুঁকিমুক্ত ভবন নির্মাণ সম্ভব হবে।

এসএন/এসএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়